১৫ মাস ধরে রাস্তা খারাপ, নষ্ট হচ্ছে বাড়িঘর, ক্ষতি হচ্ছে সবুজায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদন : বীরভূমের বোলপুর মহকুমার অন্তর্গত বোলপুর থেকে নানুর যাওয়ার প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেই কাজ এখনও শেষ হয় নি। বছরভর রাস্তা সংস্কারের কাজ চালানো সত্ত্বেও রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নরক যন্ত্রনায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এই রাস্তার গুরুত্ব রয়েছে অন্য জায়গায়। এই রাস্তাটির উপর রয়েছে সিয়ান হাসপাতাল। এছাড়াও এই রয়েছে বোলপুরের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম। যে কারণে প্রতিদিন শতাধিক অ্যাম্বুলেন্সকে এই রাস্তার উপর দিয়ে পারাপার করতে হয়। এছাড়াও টোটো এবং অন্যান্য যানবাহনে রোগীদের যাতায়াত তো আছেই। স্বাভাবিকভাবেই নরকযন্ত্রণার মতোই মানুষদের এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

রাস্তার বেহাল অবস্থা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই রাস্তার উপর এমন ঘটনাও আছে যে রাত্রিবেলায় গর্ভবতী এক মহিলার প্রসব পর্যন্ত হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঘটনা তো আছেই। বিশেষ করে বোলপুর সংলগ্ন তিন কিলোমিটার রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা লেগেই আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজ্য সরকার অবিলম্বে এই রাস্তার উপর নজর দিয়ে পিডব্লুডিকে যেন নির্দেশ দেয় এই রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করে যাতায়াত ব্যবস্থাকে মসৃণ করার।

রাস্তার এই বেহাল অবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে মার্চ মাসে তারা বেশ কিছুক্ষণের জন্য পথ অবরোধ করেন। তাদের এই পথ অবরোধের পর পিডব্লুডি কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য করা যায় রাস্তার মাপজোক করতে। কিন্তু তারপরেও কাজ শুরু না হওয়ায় ফের ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। এর পর ফের বুধবার পথ অবরোধ করা হয় এবং ধারাবাহিকভাবে পথ অবরোধের হুমকি দেওয়া হয়।

ধারাবাহিকভাবে পথ অবরোধের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তারা জানিয়েছেন, “আমরা এই রাস্তা মেরামতের জন্য সাতদিন সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী মশাই আমাদের কাছে ১৫ দিন সময় চেয়েছিলাম। তবে ২১ দিন পার হয়ে গেলেও কাজ শুরু হয়নি।” বর্তমানে রাস্তার যে পরিস্থিতি তাতে কোনো যানবাহন পার হলেই সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ধূলোয় ভরে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তায় যানবাহন চলাচলের সময় এত ধুলো হচ্ছে যে বাড়িঘর ধূলোয় ভরে যাচ্ছে, গাছপালার সৃজনশীলতা নষ্ট হচ্ছে। এমনকি এই স্থানীয় বাসিন্দারা এই রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন, এই রাস্তা পরিদর্শন করতে যদি কোন জনপ্রতিনিধি আসেন তাহলে তাকে আমরা শেয়ার দিয়ে বসাবো এবং এক গ্লাস কোলড্রিংস দেব। একটি গাড়ি পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি যদি ওই কোলড্রিংস খেতে পারেন তাহলে আমরাও সারাবছর এই ধুলো খেয়ে থাকতে পারবো।”