২৬/১১-এর ৫ নায়ক, যাঁরা জীবন দিয়ে দেশ বাঁচিয়েছিলেন

নিজস্ব প্রতিবেদন : ১২ বছর পেরিয়ে আজ সেই দিন যেদিন আমাদের দেশ পাক আশ্রিত জঙ্গি হানায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেদিনের ২৬/১১-য় টানা চারদিন ধরে বিষাক্ত লড়াই চলে। আর সেই লড়াইয়ে অবশেষে হার মানতে হয় জঙ্গীবাহিনীকে। তবে এই জঙ্গিবাহিনী হার মানার আগে আমাদের দেশের বেশ কয়েকজন নায়ককে তাঁদের জীবন আহুতি দিতে হয়। পাশাপাশি প্রাণ হারান ১৭০ জন নিরপরাধ মানুষ এবং আহত হন তিনশ’র বেশি।

সেদিনের সেই ঘটনা আজও আমরা ভুলতে পারিনি। পাকিস্তান থেকে আরব সাগর পেরিয়ে ভারতে ঢুকে ১০ জঙ্গি। আর এই ১০ জঙ্গির মধ্যে জীবিত অবস্থায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে আছে একমাত্র আজমল কাসব। সেদিনের সেই হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন লঙ্কর-ই-তৈরা ও জামাত-উদ-দাওয়ার।

২৬/১১-এর সেদিনের জঙ্গি হানায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে মুম্বইয়ের লিওপোল্ড কাফে, নারিম্যান হাইস, তাজ হোটেল, ছাত্র শিবাজী বাস টার্মিনাস, ট্রাইডেন্ট হোটেল, কামা হাসপাতাল সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ জায়গা। আর এই জঙ্গিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডো অভিযান চালানো হয়। সেদিনের সেই অপারেশন চলাকালীন দেশের বেশ কয়েকজন বীরযোদ্ধাকে শহীদ হতে হয়। আর এই শহীদ হওয়া বীরযোদ্ধাদের মধ্যে ৫ নাম খুবই উল্লেখযোগ্য।

১) মেজর সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণান : শহীদ সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণান ছিলেন এনএসজি কমান্ডোর একজন মেজর। তিনি মিশন অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডোর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আর এই নেতৃত্ব দেওয়ার সময় তাজ হোটেলের কাছে তিনি শহীদ হন।

২) বিজয় সালাসকার : বিজয় সালাসকার ছিলেন মুম্বই পুলিশের একজন কর্মকর্তা। যিনি ছিলেন এ-নকাউন্টার স্পেশালিস্ট। অভিযান চলাকালে তিনি কামা হাসপাতালে কাছে হেমন্ত করকারে এবং অশোক কামতের সঙ্গী হিসাবে ছিলেন। অভিযান চলাকালে তিনি আজমল কাসবের এক সঙ্গীকে মেরে ফেলতে সক্ষম হন।

৩) অশোক কামতে : কামা হাসপাতালে কাছে সেদিন তিনি অভিযান চালিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন এটিএস চিফ হেমন্ত করকারে। সেসময় জঙ্গি ইসমাইল খানের সাথে তাদের লড়াই চলে। অশোক কামতে মাথায় গুলি খেয়েও শেষ পর্যন্ত ইসমাইলকে খতম করতে সক্ষম হন।

৪) তুকারাম ওম্বলে : মুম্বই পুলিশের এই এএসআইয়ের সাহসিকতার অনবদ্য নজির সেদিন পেয়েছিল গোটা দেশ। সেদিন তিনি কোনো রকম অস্ত্র ছাড়াই আজমল কাসাবের মুখোমুখি হন। তবে আজমল কাসব তাঁকে শেষ পর্যন্ত ধরে ফেললে তার গুলিতে তিনি শহীদ হন।

৫) হেমন্ত করকারে : তিনি ছিলেন মুম্বই এটিএসের প্রধান। ঘটনার দিন রাত্রি ৯:৪৫ নাগাদ তিনি যখন বাড়িতে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন ঠিক সে সময় জঙ্গি হানার বিষয়ে খবর পান। তৎক্ষণাৎ তিনি গাড়ী চালক এবং দেহরক্ষী নিয়ে পাড়ি দেন সিএসটি স্টেশনের উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন জঙ্গিরা কামা হাসপাতাল এর কাছে হানা দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এসিপি অশোক কামতে এবং পরিদর্শক বিজয় সালাসকারকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ওখানে পৌঁছে যান। আর তারপর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে শহীদ হতে হয় তাঁকে।