ভারতের ৮০ শতাংশ উপসর্গহীন করোনা রোগীদের থেকে সুরক্ষিত থাকার দাওয়াই চিকিৎসকের

নিজস্ব প্রতিবেদন : গুজরাটের আমেদাবাদের ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের কর্মরত ডাক্তার পৌলোমী। যিনি কিছুদিন আগেও কোভিড ওয়ার্ডের দায়িত্ব ছিলেন। এখন একটু রেস্টে আছেন। এই সময় তিনি কলকাতাবাসীর কথা ভাবছেন। আমাদের রাজ্যের তথা কলকাতাবাসীর কথা ভেবে তিনি একটি লাইভ ভিডিও করেন।

এই ভিডিওতে তিনি বলেন যে, “কলকাতাতে জনঘনত্ব এত বেশি যে এখানে কোন একটি বাড়িতে সংক্রমণ হলে পুরো পাড়ায় ছড়াবে।এবং পুরো পাড়া থেকে আস্তে আস্তে পুরো এলাকাটি সংক্রমিত হবে।”

পরেই তিনি বলেন, “এখন আমরা প্রত্যেকেই জানি যে কোভিড-১৯ ভাইরাস যেভাবে মিউটেশন ঘটাচ্ছে এর ফলে এখন প্রচুর লক্ষণহীন মানুষ এই ভাইরাসটি বহন করছেন নিজের অজান্তেই। যার ফলস্বরূপ দেখা যাচ্ছে ভারতে ৮০% রোগীই উপসর্গহীন।”

এখন আমি আপনি যখন বাজারে যাবো তখন এই লক্ষ্মণহীন সংক্রমিত মানুষগুলিই আমাদের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। তারা নিজেরাও জানেনা তারা সংক্রামিত আর আমাদের পক্ষে তো বোঝা সম্ভব নয়! এই পরিস্থিতিতে আমরা সাধারণ মানুষ কী করব? এই বিষয়ে কথা বললেন ডাক্তার পৌলোমী।

তারা ডাক্তাররা যে ছোট ছোট স্টেপগুলি নিজেদের সুরক্ষিত করার জন্য নিয়েছিলেন সেই স্টেপগুলিই তিনি তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে।

১) হাত ধোয়া : বারবার অভ্যাস করে ফেলতে হবে। দু’ঘন্টা অন্তর অন্তর সাবান দিয়ে হাত ধুতে থাকুন।

২) গারগেল : দিনে অন্তত চারবার গরম জলে নুন ফেলে গারগেল করুন। যারা ঘরে থাকেন তারা অন্তত দুবার গারগেল করুন।

৩) মোবাইল ফোন : বাইরে মোবাইল ফোন নিয়ে যাবেন না। যদি মোবাইল ফোন নিয়ে যান তাহলে বাড়িতে এসে মোবাইল ফোনটিকে স্যানিটাইজ করুন।

৪) চুল : মেয়েদের চুল থেকে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে। মেয়েদেরকে বলা হচ্ছে দুদিন অন্তর-অন্তর বা পারলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে।

৫) গ্লাভস : বাজারে গেলে অতি অবশ্যই গ্লাভসের ব্যবহার করুন। গ্লাভস পরে তবেই বাজারে বেরোবেন।

৬) গরম জলে স্নান : বাজার থেকে এসে গরম জল আর সাবান দিয়ে স্নান করুন। সাবান দিয়ে ভালো মতন স্নান করতে বলা হচ্ছে। শরীরে যেন এতোটুকু ময়লা না থাকে।

৭) বাজারের জামাকাপড় জুতো আলাদা করে রাখুন : বাজার থেকে এসে বাজারের ব্যাগটি জুতো এবং জামাকাপড় আলাদা স্থানে রাখুন‌। ঘরের মধ্যে কখনই রাখবেন না।

৮) ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার : ডাক্তাররা প্রতিনিয়ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ওষুধ খাচ্ছেন নিজেদের মধ্যে প্রতিরোধক শক্তি বাড়িয়ে তোলার জন্য। তাই সাধারণ মানুষকে ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এতে শরীরের মধ্যে প্রতিরোধক শক্তি বেড়ে উঠবে।

কেন এই সকল নিয়ম পালন করবেন? তার উত্তর হিসেবে ডাক্তার পৌলোমী একটি দারুণ কথা বলেছেন। তার কথায়, করোনা সংক্রমিত হয়ে যে মানুষটি মারা যান তার বাড়িতে শুধুমাত্র একটি ফোন যায়।মৃত্যুর সময় বা মৃত্যুর পরে মৃতদেহের কাছে আসার অধিকার নিকট-আত্মীয়ের ও নেই। পৌলোমী বলেছেন যে অন্তত পক্ষে এই মুহূর্তটির কথা চিন্তা করে করোনাকে কখনোই হেলাফেলা করবেন না।নিজে সচেতন হোন। সাবধানতা অবলম্বন করুন।