অনেক্ষণ ধরে জলের মধ্যে হাত (Hand) রেখেছেন বা বেশিক্ষণ ধরে হয়তো জলে কোনও কাজ করেছেন, তারপরেই দেখবেন হাতের আঙুলগুলি কুঁচকে গিয়েছে (Wrinkling on Skin of Hand)। আঙুলের (Finger) মাথার দিকগুলি মূলত কুঁচকে যায়। শীতকালে এটা সবথেকে বেশি দেখা যায়। অনেকটা বেশি সময় ধরে স্নান করার ফলেও হাতে এই ধরনের বিষয় লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু, এটা কেন হয় তা হয়তো অনেকেই জানেন না।
শরীরের এক একটি অংশের গঠনশৈলী আলাদা। মুখের চামড়া অনেক পাতলা, সেই তুলনায় হাত এবং পায়ের তলার চামড়া অনেক পুরু। আর এই কারণেই জলের তলায় বহুক্ষণ থাকলে বা জল ঘাঁটলে হাত-পায়ের চামড়া সামান্য ফুলে যায়, তারপরেই চামড়া কুঁচকে যায়। যদিও জল থেকে বেরিয়ে এলে চামড়া পুনরায় ঠিক হয়েও যায়।
এছাড়া, চামড়ার উপরিভাগে সিবাম (Sebum) নামক একটি তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে। এই সিবামের কাজ হল চামড়া সুরক্ষিত রাখা। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা। যাতে ত্বক অত্যধিক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে না যায়। দীর্ঘ ক্ষণ হাত জলের সংস্পর্শে থাকার ফলে চামড়ার উপরে থাকা এই সিবাম ধুয়ে যায়। সিবামের আস্তরণ সরে যেতেই জল (Water) চামড়ার মধ্যে প্রবেশ করে। সে কারণে আঙুলের ত্বক ওই ভাবে কুঁচকে যায়। শুধুমাত্র হাতের নয়, অতিরিক্ত জল ঘাঁটলে পায়ের ত্বকও কুঁচকে যায়। তবে কিছু ক্ষণ পরই আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
জল ঘাঁটার পর এমন হাত, পা কুঁচকে যাওয়ার সমস্যায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকেই। চামড়া কুঁচকে যাওয়ার পর অনেকেরই মনে হয়, কোনও শারীরিক সমস্যার কারণেই এমন হচ্ছে বোধ হয়। তবে চিকিৎসকরা (Doctors) সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছেন।
চিকিৎসকদের মতে, আঙুলের চামড়া কুঁচকে যাওয়া একটি স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ারই অংশ। তবে হাত বা পায়ের স্নায়ু সচল না থাকলে এমন হয় না। বরং স্নায়ুজনিত কোনও সমস্যা থাকলেই এই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া থাকে না। কোনও কারণে স্নায়ু যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে জলের সংস্পর্শে আসার ফলেও তেমন কোনও পরিবর্তন চোখে পড়ে না। তাই জল ঘাঁটার কারণে যদি চামড়া (Skin) কুঁচকে গিয়ে থাকে, তা নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। বরং এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক।