Lakshadweep or Maldives, which is more profitable to visit: মালদ্বীপের ভারত বিরোধী সেন্টিমেন্ট উসকে দিয়ে ভোটে জিতে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন মোঃ মুইজ্জু। তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই সরকারের ইন্ধনে মালদ্বীপ জুড়ে চলছে ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইনিং। এই মাঝে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণকে কেন্দ্র করে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীর বিদ্বেষপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টকে ঘিরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যার ফলে গোটা ভারত জুড়ে মালদ্বীপ আউট ক্যাম্পেনিং শুরু হয়েছে। একের পর এক ট্যুর অপারেটর মালদ্বীপ ট্যুরের বুকিং ক্যানসেল শুরু করেছে। এমতাবস্থায় মালদ্বীপের কাউন্টার হিসেবে লাক্ষাদ্বীপকে প্রমোট করছে ট্যুর অপারেটরগুলি। তাই এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মালদ্বীপ বেড়াতে না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপ (Lakshadweep or Maldives) গেলে আপনি কি কি সুবিধা পেতে পারেন।
মালদ্বীপে কী কী দেখতে এবং করতে হবে?
মালদ্বীপে রয়েছে আন্ডারওয়াটার রেস্তোরাঁ, ফ্ল্যাগশিপ স্পা এবং সোয়াঙ্কি নাইটক্লাব। রয়েছে বাংলো বাড়ির মতো অত্যাধুনিক রিসর্ট যেখানে শুধুমাত্র নৌকা দ্বারাই যাওয়া সম্ভব। প্রতিটি রিসর্টে পুল থাকবেই।
মালদ্বীপে দেখার মতো জায়গাগুলি হল:
মালে অ্যাটল, সান দ্বীপ, বানানা রিফ, আলিমাথা দ্বীপ, এইচপি রিফ, ফিহালহোহি দ্বীপ, উথেমু গান্ডুভারু, বিয়াধু দ্বীপ, ভেলিগান্ডু দ্বীপ সৈকত,
বারোস দ্বীপ, এমবুধু ফিনোলহু দ্বীপ, মিরিহি দ্বীপ, হুভাহেন্ধু দ্বীপ, মাফুশি দ্বীপ, কানুহুরা দ্বীপ, রাঙ্গালি দ্বীপ ইত্যাদি।
মালদ্বীপের বিখ্যাত খাবার:
মালদ্বীপের খাবারের প্রধাণ উপকরণটিই হল নারকেল। নারকেলের দুধ রান্নায় একটি ক্রিমি ফ্লেভার এনে দেয়। টুনা, ওয়াহু, কুলহি বকিবা, কুকুলহু রিহা, মাহি-মাহি তরকারি, ফিশকেকগুলিতে এবং হরেকরকমের সামুদ্রিক মাছ মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণীয় পদ।
কখন মালদ্বীপ যাবেন?
মালদ্বীপে যাওয়ার সেরা সময় হল শুষ্ক মৌসুমে (ডিসেম্বর-এপ্রিল) যখন আবহাওয়া রৌদ্রোজ্জ্বল এবং শুষ্ক থাকে। মে-জুলাই এবং আগস্ট-নভেম্বর ভিড় কম থাকে। তবে এই সময়ে বৃষ্টি এবং আর্দ্রতার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কিভাবে মালদ্বীপ পৌঁছাবেন?
মালদ্বীপ যেতে হলে মুলত প্লেনে করেই যেতে হয়। ভাড়া মোটামুটি ভাবে ১১ হাজার থেকে শুরু। ৪ রাত ৩ দিনের মালদ্বীপ ঘোরার খরচ মাথা পিছু কম পক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার।
এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মালদ্বীপ না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপে (Lakshadweep or Maldives) গেলে কেমন হতে পারে আপনার ট্যুর।
লাক্ষাদ্বীপে কী কী দেখতে এবং করতে হবে?
লাক্ষাদ্বীপের সুন্দর সমুদ্র সৈকত, জলের নীচের উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগত দেখার সুবর্ন সুযোগ পাওয়া যায়। লাক্ষাদ্বীপে স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং এবং সমুদ্রের নীচে হাঁটা ইত্যাদি করা যায়। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা কায়াকিং, ক্যানোয়িং, জেট-স্কিইং, কাইটসার্ফিং এবং প্যারাসেইলিং করতে পারেন। এছাড়াও আপনি নৌকা করে দ্বীপে যেতে পারেন এবং সমস্ত দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। ডলফিনও দেখতে পারেন এখানে।
লাক্ষাদ্বীপে দেখার মতো জায়গাগুলি হল:
মিনিকয় দ্বীপ- লাক্ষাদ্বীপে দেখার জন্য সবচেয়ে বিশিষ্ট স্থানগুলির মধ্যে একটি। এটি দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয়। শ্বেতশুভ্র বালুকাময় সৈকত এবং বাতিঘরের জন্য এটি জনপ্রিয়।
কদমত দ্বীপ- কম জনসংখ্যা এবং সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন এই দ্বীপটিকে লাক্ষাদ্বীপে দেখার জন্য অন্যান্য স্থানের তুলনায় আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। নীল উপহ্রদ, সূর্য-চুম্বিত সমুদ্র সৈকত এবং রঙিন প্রবাল প্রাচীর এই দ্বীপের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। এই লাক্ষাদ্বীপ সমুদ্র সৈকতটি এলাচ দ্বীপ নামেও পরিচিত।
মেরিন মিউজিয়াম- কাভারত্তিতে অবস্থিত, সামুদ্রিক যাদুঘর লাক্ষাদ্বীপের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। এটি বিভিন্ন সামুদ্রিক-সম্পর্কিত প্রত্নবস্তুর আবাসস্থল।
বাঙ্গারাম প্রবালপ্রাচীর- বাঙ্গারাম দ্বীপ তার শ্বাসরুদ্ধকর সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের জন্য বিখ্যাত। আদিম বালির সৈকত, শান্ত উপহ্রদ এবং প্রবাল প্রাচীরগুলি এখানকার প্রধান আকর্ষণ।
লাক্ষাদ্বীপের বিখ্যাত খাবার:
লাক্ষাদ্বীপের খাদ্য, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে কেরালার প্রভাব স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। লাক্ষাদ্বীপে টুরিস্ট জায়গাগুলিতে মালাবার খাবার প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘরে প্রাধান্য পায়। বেশিরভাগ খাবারে নারকেল তেল এবং কারি পাতার স্বাদ পাবেন। অক্টোপাস ফ্রাই এমন একটি খাবার যা শুধুমাত্র লক্ষদ্বীপে খাওয়া হয়।
কখন লাক্ষাদ্বীপে যাবেন?
লাক্ষাদ্বীপে সারা বছরই মনোরম আবহাওয়া থাকে। শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ) লাক্ষাদ্বীপে যাওয়ার সেরা সময় কারণ সেই সময়ের আবহাওয়া দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য উপযুক্ত।
কিভাবে লাক্ষাদ্বীপে পৌঁছাবেন?
আরব সাগরের তীরে অবস্থিত, লাক্ষাদ্বীপে শুধুমাত্র জল এবং বিমান পরিবহন মাধ্যমেই পৌঁছানো যায়। আপনি কোচি থেকে লাক্ষাদ্বীপে জাহাজে করে যাত্রা শুরু করতে পারেন। লাক্ষাদ্বীপে পৌঁছাতে প্রায় ১৪-২০ ঘন্টা সময় লাগে। আপনি যদি বিমানে ভ্রমণ করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই কোচি থেকে আগাত্তি বিমানবন্দরের ফ্লাইট টিকেট বুক করতে হবে, যা লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপের একমাত্র বিমানবন্দর। আগত্তি দ্বীপ থেকে, আপনি নৌকায় করে মিনিকয় দ্বীপ, কালপেনি দ্বীপ এবং অন্যান্য দ্বীপে যেতে পারেন। আপনি আগাত্তি থেকে কাভারত্তি দ্বীপে হেলিকপ্টার করেও যেতে পারেন। ৮ রাত ৭ দিনের মালদ্বীপ ঘোরার খরচ মাথা পিছু কম পক্ষে ৬০ থেকে ৭০ হাজার।