নিজস্ব প্রতিবেদন : লোকসভা নির্বাচনের আগে গত কয়েকদিন ধরেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অর্থাৎ CAA চালু হওয়া নিয়ে জল্পনা চলছিল। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও বিজেপি নেতাদের মুখে মুখে এই আইন চালু করার বিষয়ে বারবার কথা বলতে শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে সেই সকল জল্পনাতেই সিলমোহর পড়লো সোমবার। সোমবারই এই আইন চালুর বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল কেন্দ্র সরকার। তবে এই আইন নিয়ে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে আর সেই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসল সত্য (Details about CAA) জানা দরকার।
২০১৯ সালে লোকসভা ও রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সেই বিলে সই করে তা আইনে পরিণত করার জন্য অনুমতি দেন। তবে এই সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার সময় থেকেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। বিশেষ করে মুসলিমরা নিজেদের নাগরিকত্ব হারাবেন এমন আশঙ্কা থেকেই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাহলে কি এই আইনে নাগরিকত্ব হারানোর কোন আশঙ্কা রয়েছে?
যারা এমন আতঙ্কে ভুগছেন তারা পুরোপুরি ভুল আতঙ্কে ভুগছেন বলেই কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। কেননা সিএএ অর্থাৎ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। বরং এই আইন তৈরি হয়েছে অন্যান্য দেশ থেকে শরণার্থী হিসেবে ভারতে আসা মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য। তবে এই সুবিধা পাবেন কেবলমাত্র হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা এবং তাদের শরণার্থী হিসেবে আসতে হবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ সহ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলি থেকে।
আরও পড়ুন ? New Train in WB: আরও একটি নতুন ট্রেনের পথ চলা শুরু হল বাংলায়, চলবে এই রুটে, রইল সময়সূচী
সিএএ লাগু হয়ে গেলেও যারা ভারতের নাগরিক হিসাবে রয়েছেন তারা কেউ নাগরিকত্ব হারাবেন না, এমনকি যারা মুসলিম ভারতীয় রয়েছেন তাদেরও নাগরিকত্ব হারানোর কোন আশঙ্কা নেই। কেননা নতুন এই সংশোধনী আইনের সঙ্গে ভারতীয়দের নাগরিকত্বের কোন সম্পর্ক থাকছে না বলেই জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের রাগের অন্যতম কারণ হল, নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম না থাকা।
১৯৫৫ সালে যে নাগরিকত্ব আইন চালু করা হয়েছিল সেই আইন অনুযায়ী ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য টানা এক বছর ভারতে থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। এছাড়াও ১৪ বছরের মধ্যে ভারতে ১১ বছর থাকতে হতো। অন্যদিকে ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছে তাতে ১১ বছরের সময়কালকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ বছর। পাশাপাশি টানা এক বছর ভারতে থাকার বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রদায় এবং দেশের উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন এই আইনের ফলে নির্দিষ্ট করে দেওয়া শরণার্থীরা যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন তারা সহজেই নাগরিকত্ব পাবেন।