This is the main reason why Goods Train cannot run at high speed: সোমবার ঘটে গেছে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে ঘটেছে দুর্ঘটনা। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের বহু যাত্রী আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যাও প্রায় ১৫ ছাড়িয়েছে। যারা আহত রয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশংকাজনক। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর মন ভারাক্রান্ত, কিছুটা আতঙ্কিতও। দুর্ঘটনার জন্য কিছুটা অংশে দায়ী করা হয়েছে মালগাড়ির গতিবেগকে। রেলের নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ কত গতিবেগে (Goods Train Speed) চালানো যায় মালগাড়ি?
গত বছর করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার সময় যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল রেল দপ্তরে। ঠিক ১ বছরের মাথায় আবারো কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা একই প্রশ্নকে নাড়িয়ে দিল কিছুটা। ভারতের সবথেকে বড় পরিবহন ব্যবস্থা হলো রেল পরিষেবা। সেখানেই যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। সোমবারের দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে একাধিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বারবার উঠে এসেছে মালগাড়ির গতিবেগের কথা। ট্রেনের জন্য একটি নির্দিষ্ট গতিবেগ নির্ধারণ করা থাকে। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের গতিবেগ, এক্সপ্রেস ট্রেনের গতিবেগ যেমন সমান নয় তেমন মালগাড়ির গতিবেগও অন্য ট্রেনের সাথে এক হয়না। চলো জেনে নেওয়া যাক মালগাড়ির গতিবেগ (Goods Train Speed) সম্পর্কিত কিছু তথ্য।
একটি মালগাড়ি পিছন থেকে এসে ধাক্কা মেরেছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। যার ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘার শেষ ২ টি বগি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বলা হচ্ছে মালগাড়ির গতিবেগ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মালগাড়ির গতিবেগ কত? সর্বোচ্চ কত গতিতে মালগাড়িকে ছোটার অনুমতি দেওয়া হয়? আর দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত মালগাড়িটি ঠিক কত বেগে ছুটছিল? মালগাড়ি অর্থাৎ সারাদেশ জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত মালবাহী ট্রেন। ১ টি নির্দিষ্ট গতিবেগ বজায় রেখে চালাতে হয় মালগাড়িটি। মালগাড়ির চালক যদি সেই গতিবেগের (Goods Train Speed) সীমা লংঘন করে এবং তার দ্বারা কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে অবশ্যই তিনি শাস্তির যোগ্য।
ভারতীয় রেলের নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ছোটার অনুমতি দেওয়া হয় মালগাড়িকে। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোরে মালগাড়ির গতিবেগ বাড়িয়ে ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত করার অনুমতি রয়েছে। ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর বলতে বোঝায় ডানকুনি থেকে লুধিয়ানা পর্যন্ত এলাকা। এই নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেই মালগাড়ির গতিবেগ বাড়ানোর অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ মালগাড়িকে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিবেগে চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু তার চেয়ে বেশি গতিবেগ বাড়ানোর অনুমতি নেই মাল গাড়ির কাছে। দুর্ঘটনার সাথে জড়িত মালগাড়িটির গতিবেগ কত ছিল? গাড়িটিকি নির্দিষ্ট গতিবেগের চেয়ে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছিল গন্তব্যের দিকে? দুর্ঘটনার জন্য মালগাড়ির গতিবেগকে (Goods Train Speed) দায়ী করা হলেও, তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রকাশ করেনি রেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়গুলি এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
১৯৬৬ সালে থেকে ভারতীয় রেল পরিষেবার অন্যতম অংশ মালবাহী ট্রেন। প্রথম মালগাড়িটিকে চালানো হয়েছিল মুম্বাই থেকে আমেদাবাদের রেল পথে। সাধারণত মালবাহী ট্রেনে ৪০ থেকে ৫৮ টি বগি বা ওয়াগান থাকে। ভারতের সবথেকে বড় মালবাহী ট্রেন সুপার বাসুকি। ট্রেনটিতে বগির সংখ্যা ২৯৫ টি। প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার লম্বা এই ট্রেনটি তে মোট ৬ টি ইঞ্জিন রয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সুপার বাসুকিকে চালানো হয়। রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন হল মালগাড়ির গতিবেগ (Goods Train Speed) বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তার মাঝেই ঘটে গেল এমন একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।