কনেযাত্রী নিয়ে বরের বাড়ি বিয়ে করতে গেলেন পাত্রী, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদন : জাঁকজমকে পরিপূর্ণ বিয়ে বাড়ি। চলছে রান্নাবান্না আর সঙ্গে অতিথিদের অভ্যর্থনা। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে অজস্র মানুষ। উৎসুক দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে রয়েছেন কখন আসবে কনে ও কনেযাত্রীরা। অবশেষে ৩০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে কনে এসে নামলেন বরের বাড়ির গেটের সামনে। প্রথানুযায়ী মিষ্টিমুখ করিয়ে কনেকে বরণ করে নিলেন বরপক্ষ। এরপর শুরু হলো বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের পর বর পক্ষের আত্মীয়-স্বজন এবং কনে যাত্রীদের ভুরিভোজ করানো হল। বিকেলে বরকে নিয়ে কনে চলে গেলেন বাবার বাড়িতে।

বিয়ে করতে মেয়ের বাড়িতে বর আসবে এটাই স্বাভাবিক রীতিনীতি। কিন্তু এবার আর বর গেলেন না কনের বাড়িতে, বিয়ে করতে বরের বাড়িতে চলে এলেন কনে নিজেই।  এই পুরো ঘটনার সাক্ষী থাকলো মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রাম। মূলত যৌতুকমুক্ত বিয়ে ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থেই বিয়ের এই নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে দুই বাড়ির পক্ষ থেকে। বেশ আড়ম্বরের সাথেই আয়োজিত হয়েছে অনুষ্ঠান।

ব্যতিক্রমী এই বিয়েটি হয়েছে বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গার হাজারহাট গ্রামে। কনে খাদিজা আক্তার খুশী তার পরিবার ও সহযাত্রীদের নিয়ে বিয়ে করতে আসেন তারিকুল ইসলাম জয়ের বাড়িতে। সমাজের একাংশ এই বিয়েকে সুনজরে না দেখলেও খুশী এই সব নিয়ে ভাবতে রাজি নয়।

তার স্পষ্ট জবাব, “আমার বিয়েটা হল নতুন স্টাইলে। একটা মেয়ে এবার একটা ছেলেকে বিয়ে করে নিয়ে যাচ্ছে। নারী-পুরুষের সমান অধিকারের এটা একটা দারুন উদাহরণ।”

বর ও কনের উভয় পক্ষের বাবা মেয়ে ও ছেলের এমন সিদ্ধান্ত মাথা পেতে মেনে নিয়েছেন। উনারা মনে করছেন হয়তো এই বিয়ে দেখে অন্য মেয়েরা উদ্বুদ্ধ হবে। নতুন প্রথা চালু হবে। বিয়ে প্রসঙ্গে কনের বাবা কামরুজ্জামান বলেন, “ছেলেমেয়েদের সমঅধিকার বাস্তবায়নেই আমরা অভিভাবকরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়েকে ছেলের বাড়িতে এনে বিয়ের আয়োজন করি। খুশির এই প্রথা ভাঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশে বিস্তর চর্চা চলছে। অনেকেই খুশীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আবার অনেকেই সমালোচনার তীর ছুঁড়ে দিয়েছেন খুশির দিকে।”

এই ঘটনার থেকে এটাও প্রমানিত হয় যে মেয়েরাও পারে। মেয়েরা আজ সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।