স্কুলের টিফিন খরচ বাঁচিয়ে লকডাউনে দুঃস্থদের পাশে ষষ্ঠ শ্রেণীর প্রতিবন্ধী পড়ুয়া

অমরনাথ দত্ত : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে লকডাউন জারি হতেই আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়েন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। আর সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দিন আনা দিন খাওয়া দুঃস্থ দরিদ্ররা। এই সকল মানুষদের পাশে লকডাউন চলাকালীন সমাজের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার মানবিকতার নজির সৃষ্টি করে ষষ্ঠ শ্রেণির প্রতিবন্ধী এক স্কুল পড়ুয়া নিজের টিফিন খরচ বাঁচিয়ে এইসকল মানুষদের পাশে দাঁড়ালো।

শান্তিনিকেতনের তালতোড়ের বাসিন্দা বছর এগারোর প্রতিবন্ধী জিৎ দত্ত। সে শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়া হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়াদের মতো জিৎও স্কুলে টিফিন খাওয়ার জন্য টাকা নিয়ে যেতো বাবার কাছ থেকে। কিন্তু সেই টাকায় টিফিন না কিনে প্রতিদিনই টাকা জমিয়ে রাখতো। শুধু তাই নয়, স্কুলে যাতায়াতের জন্য পাওয়া টাকাও জমাতো জিৎ। এবার সেই জমানো টাকা দিয়েই বীরভূম জেলার কঙ্কালীতলা এলাকায় প্রায় ৪০ জন দুঃস্থ মানুষদের মন্দির চত্বরে জিৎ-এর জমানো টাকা দিয়ে দীপের বাবা তন্ময় দত্ত দুঃস্থদের খাদ্য সামগ্রী ও দুঃস্থ শিশুদের স্কুল ব্যাগ ও বই খাতা দিয়ে পাশে দাঁড়ালেন। বর্তমান করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার অনন্য নজির সৃষ্টি করলো ওই স্কুল পড়ুয়া ও তাঁর পরিবার।

জিৎ-র বাবা তন্ময় দত্ত জানান, “সমস্যা কারোর জীবনে বলে আসে না। আর সমস্যা ধনী গরিব ভেদাভেদ করে না। আমিও আমার ছেলের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সমস্যা ভোগ করেছি। আর ওই ছেলেরই ইচ্ছা থেকে এই কর্মসূচি। আমার ছেলে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি খুব খুশি।”

আর এবিষয়ে কঙ্কালীতলার একজন ব্যবসায়ীর বক্তব্য, “একজন প্রতিবন্ধী শিশু যেভাবে দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে নজির স্থাপন করেছে এটা খুব ভালো লাগছে। ও আরোও বড়ো হোক। ওর মনোভাব দেখে আমরা খুব আনন্দিত।”