অপারেশন টেবিলে শুয়ে গান গাইছে ৬ বছরের শিশু, ভিডিও ভাইরাল

হিমাদ্রি মণ্ডল : চিকিৎসার জন্য দিনে একটি ইনজেকশন নেওয়ার কথা বললেই ছোট থেকে বড় অনেক রোগীই ভীত হয়ে পড়েন, অপারেশন বা অপারেশন থিয়েটার তো দূরের কথা। তবেই সেই অপারেশনকে এতটুকু ভয় নেই সিউড়ির এক ছ’বছর বয়সী শিশুর।

অপারেশন থিয়েটারের অপারেশন চলাকালীন ভয় ডরকে দূরে সরিয়ে রেখে অপারেশন চলাকালীন গান গেয়ে অনন্য নজির গড়লো সিউড়ি শহরের পাইকপাড়া বাসিন্দা এই ৬ বছর বয়সী ছোট্ট শিশুর নাম ‘অনন্য’ চক্রবর্তী। নামে ‘অনন্য’ কাজেও অনন্য। এই ছোট্ট শিশু মাসকয়েক ধরে ফাইমোসিস রোগে ভুগছিলো। চিকিৎসককে দেখানো হলেও ওই শিশুর চিকিৎসক দীপক কুমার মুখোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত জানিয়ে দেন অস্ত্রোপচার ছাড়া নিরাময়ের কোন উপায় নেই। ছেলের সুস্থতা দ্রুত কামনায় চিকিৎসকের উপরেই ভরসা করেন ওই শিশুর বাবা-মা। সেইমতো দিন পাঁচেক আগে তাকে ভর্তি করা হয় সিউড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তারপর নির্দিষ্ট সময়ে অপারেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে অপারেশন থিয়েটারে, অপারেশন থিয়েটারের বাইরে উদগ্রীবভাবে অপেক্ষায় ছোট্ট শিশুর পরিবারের লোকজন।

কিন্তু কেবা জানতো, ওই ছোট্ট শিশু অপারেশন থিয়েটারকে বানিয়ে দেবে মনোরঞ্জনের থিয়েটার। একেবারেই ব্যতিক্রম সেই ছোট্ট শিশুর মনে অপারেশন নিয়ে নেই কোন ভয় ডর। শরীরের যে অংশে অপারেশন হয় সেই অংশটি চিকিৎসকেরা অবশ করে শুরু করেন অপারেশন। অপারেশন চলাকালীন এক ডাক্তার ওই ছোট্ট শিশুকে বলে ওঠে গান জানিস? আর যেই বলা সেই শুরু, প্রথমেই গুনগুনিয়ে ওঠে ‘টিপটিপ টুপটাপ বৃষ্টি, সেই থেকে পরছে তো পরছে। চুপচাপ ঘরে বসে থাকতে মনটা কেমন যেন করছে।’ কয়েক মিনিট পর শেষ হয়ে গেল গানটি। চিকিৎসকরা ফের জানতে চান আর কোন গান জানে কিনা। ‘অনন্য’ দমে যাওয়ার ছেলে নয়। সঙ্গে সঙ্গে তার স্কুল সরোজীনিদেবী শিশু মন্দিরে প্রতিদিন যে মাতৃবন্দনা করানো হয়। সেই গান শুরু করে দেয়।

অপারেশন শেষ হওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে পাঁচটি দিন। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে ‘অনন্য’। হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়ার পর সে এখন নিজের বাড়িতে।