রানু ও অতীন্দ্র বিতর্কে ভাইরাল খোলা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদন : রানাঘাটের ভবঘুরে লতাকন্ঠি গায়িকা রানু মন্ডলের গানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে ওঠেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজনেরা রানু মন্ডলের এই সাফল্যের জন্য অনেকেই মনে করছেন এর পিছনে ভূমিকা রয়েছে রানাঘাটেরই ইলেকট্রিক্স টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার অতীন্দ্র চক্রবর্তী। কারণ তিনিই রানাঘাট স্টেশনে সকলের অবহেলায় পড়ে থাকা এই গায়িকাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছিলেন। শুধু তাই নয় রানু মন্ডল সবার প্রিয় ‘রানুদি’ হয়ে ওঠার পর বিভিন্ন গান রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে তারকাদের সাথে অতীন্দ্রকেও দেখা গিয়েছে। এতদূর সব ঠিকঠাকই, কিন্তু এরপরেই তাদের এই সম্পর্ক, অতীন্দ্র ভূমিকা নিয়ে রানু দির একটা প্রশ্নের উত্তরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে শুরু হয় কটাক্ষ।

দিন কয়েক ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় আরো একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রানুদি বলছেন, “আমার কাছে ফোন নেই, তাই কোথায় কি যেতে হবে অতীন্দ্র জানে।” এরপরেই ভিডিওর ওপর প্রান্তে থাকা সাংবাদিক প্রশ্ন করে ওঠেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদের দৌলতে যাচ্ছেন কেমন লাগছে?

আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, “ভগবানের দৌলতে যাচ্ছি। ওরা ভগবানের সার্ভেন্ট, ভগবানের চাকর এরা। আমি ওদের সাহায্যে যাচ্ছি না, ভগবানের সাহায্যে যাচ্ছি। ওরা শুধুমাত্র ভগবানের চাকর।”

এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রানু মন্ডলের বিপক্ষে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে শুধু বিপক্ষে নয়, ঘটনার পর অনেকে আবার পাশেও দাঁড়িয়েছেন তাঁর। আর এই পাশে দাঁড়িয়েই রানু ও অতীন্দ্র বিতর্কে একটি খোলা চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন এক গৃহবধূ দেবযানী গাঙ্গুলি ব্যানার্জী।

তিনি সেই চিঠিতে লিখেছেন, “কাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রানু মন্ডলের সাথে এক রিপোর্টারের কথোপকথনে অনেকটাই তাকে টেনে নীচে নামানো হয়েছে দেখলাম।একটু অবাক হয়েছিলাম বটে তারপর ভাবলাম নিজের কিছু ব্যাক্তিগত মতামত সবার সাথে শেয়ার করলে হয়তো আসল দোষী (সো কলড ঢ্যামনা) গুলোকে চেনা যাবে।

প্রথমে বলি,ভালো করে ভিডিওটা দেখলে বোঝা যাবে কথোপকথন শুরু হবার কিছু পর থেকে সেটার রেকডিং করা হয়েছে,।ঝাঁট জ্বালানোর মতো কিছু প্রশ্ন হয়তো বা তাকে করা হয়ে গিয়েছিল।তারপর বলি,ভগবানের চাকর কথাটি যেটা শুনেই সবার আতেঁ ঘা লেগেছে।আরে মশাই,একটা বড়ো সড়ো পদে কর্মরত অফিসারের কাছে কাজ হাসিলের দাবিতে জোড় গলায় যখন তাকে পাবলিক সার্ভেন্ট বা সরকারের চাকর বলেন তখন তার নিজের যোগ্যতায় পাওয়া সম্মানের দামটা কোথায় যায়।উনি তো ভগবানের চাকর বলেছেন, ভগবানের চাকর তো আমরা সব্বাই।উনি হয়তো সবার উপরে তাকে রেখেছেন।

হ্যাঁ মানছি তো,যা যা কথা বলেছেন তার মধ্যে শতশত ভুল ভ্রান্তি আছে,তো মশাই রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে অনেক বড়ো মাপের শিক্ষিত বোঝনদার দের ধুর বোকাচোদা বলতে শুনেছি গায়ে সামান্য টাচ বা পায়ে পা লাগলে,আর উনি তো তার জায়গায় অশিক্ষিত কিম্ভুত।

তা দিননা ওনার কথার দামের চেয়ে গলার দাম দুআনা বেশি যেটা শুরু দিন স্টেশনের পাশে গুনগুন করতে শুনেছেন। শব্দ জানলেই তো হয়না তা গুছিয়ে বলা শিখতে হয়।যার দুবেলা দুমুঠো ভাত যোটেনি তার কি ফুটবে কথার সারি,ভাবছেন‌ই বা কি করে।ওনাকে সবার চোখে টেনে নীচে নামানোর আগে দিননা একটু পরিপাটি করে শিখিয়ে কেউ প্রশ্ন করলে তার কাছে কতটা কি কেমন করে বলতে হবে বা ফুলস্টপ টা কোথায় দেওয়া উচিত।কেউ এসে ছ্যাবলামি করে প্রশ্ন করলে বা চটালে আর পাঁচটা সেলিব্রেটির মতো দাতে দাত চেপে সহ্য করে হাসির বন্যা ব‌ওয়াতে।শিখিয়ে তো দেবেন না উল্টে আপনার ছোটোলোকামির ছোঁয়াচে রোগটা আরো সহকারীদের বিলোতে থাকবেন সে জানি।

শেষে আসি মেয়ের কথায়,প্রথম থেকে আমরা এটা খুবই ভালো করে শুনে জেনে এসেছি মেয়ে ওনাকে দেখতো না,এটা তো ডায়রেক্টলি ওনার মুখে শুনিনি। হ্যাঁ লোকের মুখে তা রটেছে আর এটাই সত্যি যে মেয়ে তাকে দেখতোই না।আচ্ছা আপনি কতটা নীচ সেটা আপনার মাকে কখনো বড়াই করে বলতে শুনেছেন কাউকে ?ওহো শোনেননি তাইতো.. নানা হাসছিনা,এটাই স্বাভাবিক বড়দা।কোনো মা ই পারেনা তার ছোটোলোক ছেলেমেয়ের কথা শেয়ার করতে সবসময় ঢাকানোর‌ই চেষ্টা করে।আরে, নিজেকে দিয়ে বুঝুন এখানেই তো তফাৎ বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের,তার‌ই প্রমাণ রানু মন্ডল।তার ভালোবাসা নাড়ীর টানকে ছিঁড়ে ফেলেনি,মেয়ে অন্য কাউকে পেয়ে তাকে ভুল্লেও সে অটল।আর উনি এখনো রপ্ত করেননি ছেলেমেয়ে অভাব অনটন এসব নিয়ে হাহুতাশ করলে কিছু জ্ঞানদাতা ওনাকে আহা উহু করবেন,আর সেটার স্বাদ হেব্বি মিষ্টি।

সবশেষে একটাই নিবেদন,গুজবে কান দেবেন অবশ্যই তার আগে রানুর গানে কান দিয়ে কানটা আগে শান দিন।দেখবেন গুজব গুজবের জায়গায় আর রানুর গান আকাশ ছুঁয়েছে

(শেয়ারের মাধ্যমে আর পাঁচ জনের ভুল ভাঙানো, আপনার দায়িত্ব)”

একেবারে শুরুতে রানু মন্ডলের গাওয়া গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে রাতারাতি রানাঘাট স্টেশনের ভবঘুরে ‘রানু মন্ডল’ থেকে জনপ্রিয় ‘রানু দি’তে রূপান্তর, ফের রানু মন্ডলের মন্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল নিয়ে প্রশ্ন নেটিজেনদের, আর এবার নতুন করে ভাইরাল ‘রানু দি’র সপক্ষে নেটিজেনদের প্রশ্ন তোলার বিপক্ষে গৃহবধূর খোলা চিঠি!