বিয়েতে বেঁচেছে প্রচুর খাবার, ১২০০ অভুক্তকে খাইয়ে নজির রানাঘাটের পাপিয়ার

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : শীত পড়তে না পড়তেই প্রতি বছরের মতো এবছরও বিয়ের বাড়ির ধুম পড়েছে। একের পর এক বিয়েবাড়ি লেগেই থাকে আর সাথে খাওয়ার কথা কি আর বলার অপেক্ষা থাকে। বিয়েবাড়ি আর পাতপেড়ে খাওয়া যেন একে অপরের সমার্থক বলাই যায়। যেকোনো অনুষ্ঠান বাড়ির ক্ষেত্রেই নিমন্ত্রিত অতিথিদের তুলনায় একটু বেশিই আয়োজন করা হয়ে থাকে, যাতে করে খাওয়ার কম পড়ে অপ্রস্তুতে না পড়তে হয় শেষে গৃহকর্তাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রচুর খাবার বেঁচে যায়।

বর্তমানে এই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি। তারা বিয়েবাড়ি থেকে অনুষ্ঠান বাড়ির বাড়তি হওয়া খাওয়ার নিয়ে গিয়ে তুলে দেন রাস্তাঘাটে স্টেশনে রাত কাটানো নিরন্ন মানুষগুলির মুখে।

৫ ডিসেম্বর এমনই এক মহান উদ্যোগের সাক্ষী হলো রানাঘাট। ওই দিন ছিল রানাঘাটের পাপিয়া করের ভাইয়ের বৌভাত। সেই মতো অনুষ্ঠানে আয়োজন ছিল বেশ এলাহী। রাতে অনুষ্ঠান পর্ব মিটতেই ভ্যানে চেপে খাওয়ার নিয়ে পাপিয়া দেবী উপস্থিত হয়েছিলেন রানাঘাট স্টেশনে ওই অভুক্ত মানুষগুলির মুখে খাওয়ার তুলে দিতে। ওই দিন তিনি নিজে হাতে করে ১২০০ মানুষের মুখে তুলে দিয়েছিলেন খাওয়ার। বিয়ের সন্ধ্যার সাজেই ওই রাতে তিনি স্টেশনে পৌঁছেছিলেন।

স্টেশনে ওই মুহূর্তে নীলাঞ্জন মণ্ডল নামের এক ফটোগ্রাফার উপস্থিত থাকায় তিনি ওই মহৎ কাজের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেন। আর তারপরেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল রানাঘাটের অভুক্ত মানুষের কাছে সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণার এই মহান উদ্যোগের ছবি। অনুষ্ঠান শেষে যে এতো রাতে তিনি নিজে উপস্থিত হয়েছেন মানুষগুলির কথা চিন্তা করে সেই কারণে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সবাই।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জানা গিয়েছে বরাবরই মানুষের পাশে দাঁড়ান পাপিয়া দেবী। এর আগেও বহুবার তিনি এমন মানুষদের মুখে খাওয়ার তুলে দিয়েছেন। পাপিয়া দেবীর প্রশংসায় এখন সারা নেটদুনিয়া সরব।

পাপিয়া করের এমন উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে কমেন্টও করে ফেলেছেন ভবিষ্যতে এমন কাজ তাঁরাও করবেন বলে। কোনো কোনো দর্শক আবার ফটোগ্রাফারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এমন মহৎ কাজকে মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য।