ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাতিল করে বিপাকে পাকিস্তান, জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন : ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দিয়েছে মোদির ভারত। মোদির নেওয়া এই পদক্ষেপকে অনেকেই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। আর এমন সিদ্ধান্তকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি পাকিস্তান। ভারতের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত বেআইনি দাবি করে করেছেনে ইমরান খান।

সেনাপ্রধান কামরান জাভেদ, বিদেশ মন্ত্রী এবং অন্যান্যদের সাথে একটি বৈঠকে করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সিদ্ধান্ত নেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ করবে। আর এতেই আশঙ্কার দানা বেঁধেছে পাকিস্তানে।

দিনকয়েক পরই বকরি ঈদ। তাই ঈদের আগে বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন লাগার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের। পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। আর এর মধ্যেই পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্ত ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করার। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ীরা।

ইসলামাবাদের এক গৃহবধূ সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, “মুদ্রাস্ফীতি এমনিতেই আমাদের দেশের অবস্থা খারাপ। এরপর ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।” এক সব্জি বিক্রেতা বলেন, “ইদের আর মাত্র ৩-৪ দিন বাকী। বাজার একেবারে মন্দা। সবজি-পেঁয়াজের জন্য আমরা ভারতের ওপরে নির্ভরশীল। সবজি দাম ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে এবার। আমরা কী খাব? ইমরান খান কী চাইছেন জানি না।”

এছাড়াও পাক সরকার আগামী ৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের ভয়ে আকাশসীমা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাতিল করা হয়েছে সমঝোতা এক্সপ্রেস।

আর এসব নিয়ে ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত। ভারত জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীর সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ, তাই পাকিস্তানের এই বিষয়ে নাক গলানোর দরকার নেয়।

প্রসঙ্গত, পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনা জওয়ানদের উপর আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সুবিধা প্রাপ্ত দেশের মর্যাদা বাতিল করে দেয়। পাকিস্তান ব্যবসায়িক পণ্যের সঙ্গে জাল নোট, মাদক এবং অস্ত্র পাচার করার অভিযোগ এনে ভারত গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাতিল করেছে। যার ফলে পাকিস্তানের ফল ব্যবসায়ীদের ব্যবসা লাটে উঠেছে।

ভারত পাকিস্তানের কাছ থেকে আমদানি করে ফল, সিমেন্ট, তুলো, কাঁচ, পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য ও চামড়া। পুলওয়ামায় হামলার পর ভারত থেকে আমদানীকৃত প্রতিটি জিনিসের উপর ২০০% আবগারি শুল্ক চাপিয়েছিল ভারত। আর পাকিস্তান ভারতের কাছ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পেঁয়াজ, টমেটো এবং বিভিন্ন শাক সবজি আমদানি করে থাকে।