রাণু মন্ডলের পর বাংলার অন্ধ অবিনাশ গান গেয়ে কাঁদালেন রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারকের

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলার এই সুমধুর কন্ঠধারি যুবক জন্ম থেকেই অন্ধ, দু চোখেই দেখতে পান না। অথচ তাঁর গানের গলায় যেন স্বয়ং মা সরস্বতী ভর করে আছেন। একসময় জীবনের বিতৃষ্ণা থেকে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। আগুনে পুড়ে মরার চেষ্টায় সৌভাগ্যের জেড়ে কোনোক্রমে বেঁচে যান। মুখ অগ্নিদগ্ধ, ঘাড়ের পর থেকে পিঠের দিকটাও কিছুটা পুড়েছে। তবে এই প্রতিভাবান শিল্পী সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চে গান গেয়ে কাঁদিয়ে দিলেন বিচারকদের। এর আগে একইভাবে রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকরা কেঁদেছিলেন রানু মন্ডলের গান ও তাঁর জীবনের কথা শুনে।

অবিনাশ বাউরি নামে এই জন্মান্ধ প্রতিভাবান শিল্পীর ছোট থেকেই গানের প্রতি ছিল আলাদা টান। গান শোনা থেকে গান গাওয়া দুটো জিনিস ছিল তার অত্যন্ত পছন্দের মধ্যে অন্যতম। সেই পছন্দ ভালোবাসাকে অদম্য নেশায় পরিণত করে আজ তিনি উন্নতির শিখরে পৌঁছেছেন। গানের নেশায় আজ তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ইন্ডিয়ান আইডলে। ইন্ডিয়ান আইডলের নতুন পর্ব শুরু হওয়ার জন্য সিলেকশন পর্ব চলছে। সেই সিলেকশন পর্বে তিনি গান গেয়ে বিচারকদের হতবাক করে দিয়েছেন। শুধু বিচারকরাই নন, তার গানের গলায় হতবাক দর্শকরাও। তাঁর গান আলাদা করে আশার আলো তৈরি হয়েছে দর্শক থেকে বিচারকদের মধ্যে।

ইন্ডিয়ান আইডলের বিচারক অনু মালিক, নেহা কাক্কার ও বিশাল দাদলানি মঞ্চে অবিনাশের গান শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে যান। তবে শুধু গান শুনে নয়, কিভাবে তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছেন সেই কথা শুনেও বিচারকরা কেঁদে ফেলেন। দুচোখ দিয়ে পৃথিবীটাকে দেখার ইচ্ছা ছিল চিরদিনের। কিন্তু তা না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। সেই হতাশা থেকে একদিন বাড়িতে কারোর না থাকার সুযোগে মুখে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। প্রতিবেশীদের তৎপরতায় সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।

সেদিন সেই রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অবিনাশ বাউড়ির বাবা তপন বাউড়িও। অবিনাশের মুখ থেকে সমস্ত কথা শোনার পর, অবিনাশের গলায় গান শোনার পর জড়িয়ে ধরেন বিচারক অনু মালিক। কেঁদে ফেলেন নেহা কাক্কার। সিলেকশন পর্বেই মঞ্চ মাতালেন বাঙালি এই অন্ধ গায়ক।