নিজস্ব প্রতিবেদন : সদ্যসমাপ্ত হওয়া বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ২০টি আসনের লড়াই করে ৫টি আসনে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মনোবল তুঙ্গে। আর এই মনোবল থেকেই সে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী দেবে বলেই ঘোষণা করেছে। বাংলার শাসক দল তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার মুখ থেকে ইতিমধ্যেই মিম (AIMIM) শব্দটি বের হতে শুরু করেছে। যদিও তাদের দাবি, বাংলার হিন্দু মুসলিম সবাই শিক্ষিত। এখানে AIMIM প্রার্থী দিয়ে কোন রকম সুবিধা উঠাতে পারবে না।
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুবিধা উঠানো বা, না উঠানো সেটা পরের ব্যাপার। কারণ বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগেও এই দলটিকে ‘ভোট কাটুয়া’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। বারংবার মহাজোটের নেতাদের মুখ থেকে শোনা যাচ্ছিল মিম এখানে প্রার্থী দিয়ে সংখ্যালঘু ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে এসেছে। আর এসব কটাক্ষের পর অবশেষে ফলাফলের পর দেখা যায় এই ভোট কাটুয়া দলটিই ছিনিয়ে নেয় পাঁচ-পাঁচটি আসন। এমনকি এর পাল্লায় চিরাগ পাসওয়ানও মাথা তুলে দাঁড়ানোর মত জায়গা পাচ্ছেন না বিহারে।
এখন প্রশ্ন হলো একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের কোন চারটি জেলার উপর সবথেকে বেশি নজর রয়েছে AIMIM-এর? সূত্র মারফত যেটুকু জানা গিয়েছে তাতে পশ্চিমবঙ্গের চার জেলা উত্তরদিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মত জেলাগুলির উপর জোরদার নজর শুরু করে দিয়েছে AIMIM। এই চার জেলায় নিজেদের সংগঠন মজবুত করতে হায়দ্রাবাদ থেকে স্থানীয় নেতাদের কাছে ফোন আসছে বলেও জানা গিয়েছে। এই সকল জেলার বিভিন্ন বিধানসভায় তারা জয়ের লক্ষ্যেই ঝাঁপাবে বলে সূত্রের খবর।
পাশাপাশি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি আসনে জয় বাংলার শাসক দল তৃণমূলের চিন্তার বড় কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ তারা বিহারে যে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেছে তার মধ্যে পাঁচটিই আসনে পশ্চিমবঙ্গ ঘেঁষা। আর এই পাঁচটি আসনেই তারা জয় ছিনিয়ে নেয় মহাজোটের কাছ থেকে। কিশান্গঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে মিম প্রথম বিহারে খাতা খুলে। তারপর নির্বাচনে পাঁচটি। সম্পূর্ণভাবে সংখ্যালঘুদের উপর নির্ভরশীল এই দলটি যার পরেই রীতিমতো কপালে ভাঁজ ফেলছে অ-বিজেপি দলগুলির ক্ষেত্রে।
ভোটের অঙ্কের হিসাবেও বাংলার শাসক দল তৃণমূলও সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। আর সেই জায়গায় যদি হায়দ্রাবাদি এই দল কোপ মারতে শুরু করে তাহলে অবশ্যই দুশ্চিন্তা বাড়বে শাসকদল তৃণমূলের জন্য বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।