২ লক্ষ টাকা ঋণ সাথে ভর্তুকি, কর্মসাথী প্রকল্পের আবেদন পদ্ধতি

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্য সরকারের MSME দপ্তরের তরফ থেকে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে কর্মসাথী প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো। ইতিমধ্যেই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জেলার জেলাশাসক এবং কলকাতার মিউনিসিপাল কমিশনারের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কর্মসাথী প্রকল্প (Karma Sathi Prakapla) কি?

রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কর্মসাথী প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের তিন বছরের মেয়াদে ভর্তুকিযুক্ত ২ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। মূলত ছোটখাটো ম্যানুফ্যাকচার ইউনিট, দোকান করা অথবা পরিষেবা প্রদান করার মত ব্যবসা গড়ে তোলার জন্য এই অর্থ ঋণ হিসাবে দেওয়া হয়ে থাকে। এই ঋণের মধ্যে ১৫% ভর্তুকি দেয় রাজ্য সরকার। বাকি ক্ষেত্রে সুদের পরিমাণ খুব কম রাখা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের সামনে কর্মসংস্থানের বড়োসড়ো দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি রাজ্য সরকারের।

এই প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবেন?

গ্রামাঞ্চল হোক অথবা শহর অঞ্চলের যেকোনো বেকার যুবক-যুবতীরা শর্ত পূরণের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীর সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স হতে হবে ৫০ বছর। আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সকল বেকার যুবক-যুবতীদের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম তোলা রয়েছে তারা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। পরিবারের যেকোনো একজন সদস্য এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ বাবা-মা ও স্ত্রীকে নিয়ে চারজনের পরিবার হলে যেকোনো একজন আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে অষ্টম শ্রেণী পাস।

আবেদন করার ক্ষেত্রে শর্ত

এই প্রকল্পে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নিজস্ব মূলধন দেখাতে হবে। ব্যবসার খরচের ৫ থেকে ১০% নিজস্ব মূলধন হিসেবে দেখানো প্রয়োজন। অর্থাৎ কেউ যদি দু’লক্ষ টাকার ঋণ পেতে চান ব্যবসার জন্য তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে ১০% নিজস্ব মূলধন অর্থাৎ ২০ হাজার টাকা দেখাতে হবে।

তবে তপশিলি জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৫% নিজস্ব মূলধন দেখাতে পারলেই ঋণের জন্য আবেদন করা যেতে পারে।

সরকারি ভর্তুকি

এই প্রকল্পে উপভোক্তারা যে পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসাবে নিয়ে থাকবেন তার ১৫% ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। বাকি টাকা স্বল্প সুদে দিয়ে থাকবে রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্ক। আবার সঠিক সময়ে সুদ পরিশোধ করে থাকলে মোট সুদের ৫০% ফেরত দেওয়া হবে উপভোক্তাকে।

আবেদন করার পর সমস্ত শর্ত পূরণ থাকলে আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই ঋণের টাকা পাঠানো হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। ঋণের টাকা পাঠানো হয়ে থাকে দুটি দফায়। প্রথম দফায় খরচ হিসাবে এবং দ্বিতীয় দফায় বাকি টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আবেদন পদ্ধতি

এই প্রকল্পের আবেদন করার জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করে তা ফিলাপ করে পঞ্চায়েত এলাকায় বিডিও, মিউনিসিপালিটি এলাকায় এসডিও, কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় সরাসরি পুরসভায় এই আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে https://wbmsme.gov.in/ ওয়েবসাইটে।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

আবেদনকারীকে আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে ছবিসহ পরিচয় পত্রের প্রমাণ, স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ, বয়সের প্রমাণপত্র, তপশিলি জাতি উপজাতি, সংখ্যালঘু, বিশেষভাবে সক্ষমদের, ওবিসি সার্টিফিকেট এবং যে প্রকল্পের জন্য এই ঋণ নেওয়া হচ্ছে তার রিপোর্ট।