টাকার অভাবে ছাড়তে হয়েছিল স্কুল, ইনিই এখন ১৩ লাখ কোটির কোম্পানির শীর্ষপদে

দারিদ্রতা কি কারো সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে? কারো স্বপ্নকে ছোঁয়ার পথে গরিবী কি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে? যদি উত্তর খোঁজা হয় তাহলে সে উত্তর সরাসরি ভাবে ‘না’। কোন বাধা কিংবা বিপত্তি সাময়িকভাবে সাফল্যকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেও দারিদ্রতার মত প্রতিবন্ধকতা যে সাফল্যকে দমিয়ে রাখতে পারে না তার জ্বলন্ত প্রমাণ Deloitte -এর CEO পুনিত রেঞ্জেন। তাঁর সাফল্যের কাহিনী যেকোন বলিউডি সিনেমার কাহিনী কে হার মানাতে বাধ্য। ১৯৮৯ সালে পুনিত রেঞ্জেন প্রথম যে কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেছিলেন, আজ তিনি সেই কোম্পানিরই সিইও।

আই আই টি খড়্গপুরের ছাত্র, বিখ্যাত শিক্ষক রবি হান্ডা পুনিত রেঞ্জেনের সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন, “পুনিত রেঞ্জেন যিনি বর্তমানে Deloitte-এর CEO একসময় তাঁকে স্কুলে ছাড়তে হয়েছিল। কারণ তাঁর বাবা-মা স্কুলের খরচ চালাতে পারছিলেন না। পরে একটি স্থানীয় কলেজ থেকে স্নাতক হন। ওই কলেজে পড়াশোনা করতে খুব বেশি অর্থ খরচ হত না। সেই কারণেই নিজের গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পেরেছিলেন তিনি। এরপরই পুনিত রেঞ্জেন একটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি খুঁজতে দিল্লিতে পাড়ি দেন।”

এই সময়ে পুনিত রেঞ্জেন ’রোটারি ক্লাব’ -এর তরফ থেকে পান ’রোটারি স্কলারশিপ’। সেই রোটারি স্কলারশিপের উপর ভর করে নিজের মাস্টার ডিগ্রির পড়াশোনা শেষ করতে পাড়ি জমান সুদূর আমেরিকায়। পকেটে মাত্র কয়েকশো ডলার, দুটি ব্যবহারকৃত জিন্সকে সঙ্গে নিয়ে আর দুচোখ ভরা স্বপ্ন কে পাথেয় করে স্বপ্নের উড়ান দেন। মাত্র এইটুকুকে সম্বল করেই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান পুনিত রেঞ্জেন।

তবে এরপর একটি ঘটনায় পুনিতের ভাগ্যের চাকা অন্যদিকে মোড় নেয়। সেই সময় একটি স্থানীয় ম্যাগাজিন সেরা ছাত্রদের নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে। যে তালিকায় নাম ছিল পুনিত রেঞ্জেনেরও। তালিকাটি নজরে আসে Deloitte -র এক পার্টনার টচ রসের। তিনি কয়েকদিন পর পুনিত রেঞ্জেনকে একটি মিটিংয়ের জন্য ডেকে পাঠান। আর এই মিটিং থেকেই ভাগ্য ঘুরে যায় রেঞ্জেনের।

ওই মিটিংয়ের পর ১৯৮৯ সালে deloitte তে চাকরি পান পুতিন রেঞ্জেন। তারপর কেটে গেছে ৩৩ টি বছর। এখনো তিনি সেই একই কোম্পানিতে চাকরি করে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে তিনি কোনো সাধারণ কর্মী হিসেবে নয়। স্কুল ড্রপ আউট সেই ছেলেটি আজ Deloitte -এর CEO।