পাকা বাড়ির মালিকদের নাম আমফান ক্ষতিপূরণের তালিকায়

লাল্টু : বীরভূমের দুবরাজপুর শহরে আমফান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় পাকা বাড়ির মালিকদের নাম থাকায় শহর জুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে তালিকায় আবার কয়েকজন পৌর কর্মচারীর পরিবারের লোকজনেরও নাম রয়েছে।

এই নিয়ে দুবরাজপুর পৌরসভার প্রশাসক পীযূষ পান্ডের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি গোলমালের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, “তিন মাস আগের ঘটনা। সে সময় দুবরাজপুরে প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন সদর মহকুমা শাসক রাজীব মন্ডল। তালিকায় কি ধরনের গোলমাল হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। বৃহস্পতিবার আমি হোয়াটসঅ্যাপে ওই তালিকা দেখছিলাম। যারা পেয়েছে ওই তালিকাতেই দেখেছি আমি। আগস্ট মাসের ৪ তারিখ আমি পৌর প্রশাসকের ক্ষমতায় এসেছি। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।”

আমফানের দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় জানান, “আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে দুবরাজপুর পুরসভা। তালিকা তৈরি করা পৌর কর্তৃপক্ষের বিষয়। এখানে আমার কোন ভূমিকা নেই।”

দুবরাজপুর পৌরসভায় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হোয়াটসঅ্যাপে মানুষের হাতে হাতে ঘুরছে। তালিকা দেখে মানুষ বিতশ্রদ্ধ। দুবরাজপুরের মানুষ তথা বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুবরাজপুর পৌরসভার আমফান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাটি দেখলাম।আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তার সীমিত ক্ষমতা মধ্যেও আমফান ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। দুঃখ পীড়িত মানুষগুলির আঘাতে ওই টাকা পৌঁছানোর জন্য সঠিক সার্ভে করে নাম পাঠানো উচিত ছিল। সঠিক সার্ভের প্রতিফলন ওই তালিকায় দেখা যাচ্ছে না। সেই সময় দুবরাজপুর পৌরসভার প্রশাসক ছিলেন সদর মহকুমা শাসক। বর্তমানে প্রশাসক পীযূষ পান্ডে। তিনি খতিয়ে দেখুন সঠিক লোক পেয়েছেন কিনা। দুবরাজপুরের বিষয়টি আমি বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নজরে আনবো।”

তিনি আরও বলেন, “রাজ্য সরকারের কষ্টার্জিত অর্থ অপব্যবহার হয়েছে কিনা তা সঠিকভাবে তদন্ত করা দরকার।”

সে সময়ে দুবরাজপুর পৌরসভার দায়িত্বে থাকা প্রশাসক তথা সদর মহকুমা শাসক রাজীব মন্ডল বেনিয়মের কথা স্বীকার করেই বলেন, “আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুবরাজপুর পৌরসভার কিছু গোঁজামিল হয়েছে। কিছু মানুষ ভুল তথ্য এবং অন্যের ভাঙ্গা বাড়ির ছবি দিয়ে আবেদন করায় গোলমাল হয়েছে। কিছু ভূয়ো অ্যাকাউন্ট নম্বর জমা দিয়েছে। সমস্তটাই দেখা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আইডেন্টিটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দুবরাজপুরের শহরের ওই আমফান তালিকায় অসংগতি ধরা পড়েছে। যারা এই অসদুপায় অবলম্বন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”