বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল

অমরনাথ দত্ত : উত্তরপ্রদেশে কয়েক দশক ধরে নানান কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ বারংবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। আর এবারও উত্তরপ্রদেশ দেশের সংবাদ শিরোনামে স্থান পেয়েছে কুখ্যাত ডন বিকাশ দুবের এনকাউন্টারকে কেন্দ্র করে। দিন কয়েক আগেই এই বিকাশ দুবে মাওবাদী অপারেশনের ধাঁচে ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেড সহ আট পুলিশকর্মীকে খুন করে। তারপর থেকেই চলছিল তার তল্লাশি। দুদিন আগে তার ছায়াসঙ্গী অমরকে পুলিশ এনকাউন্টার করে। তারপর গতকাল কুখ্যাত এই ডন বিকাশ পুলিশের হাতে আসে। হাতে আসার ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই খবর আসে এনকাউন্টারে মারা গেছেন বিকাশ দুবে। আর এই বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে এবার মুখ খুলতে দেখা গেল বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে।

শুক্রবার বোলপুরে তৃণমূলের আলোচনা সভা শেষে অনুব্রত মণ্ডল জানান, “ও গতকাল যখন সকাল ৬ টায় ধরা পরে তখনই আমি বিদ্যুৎকে বলছিলাম আগামীকাল ৮ টা পেরোবে না। ওকে এনকাউন্টার করে দেবে। না হলে বিজেপির অনেক মহারথী জড়িয়ে যেত। যখন ৯০ সালে বিজেপির সরকার ছিল, যখন ও বিজেপির একটা মন্ত্রীকে মারলো তখনই যদি ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো তাহলে বিকাশ দুবে আজ বিকাশ দুবে হতো না। সম্পূর্ণটাই বিজেপি প্রশ্রয়ে হয়েছে। বিজেপির অনেক বড় বড় নেতার নাম বেরিয়ে যেত যারা বুথ দখল করতে বলতো, মারতে বলতো। ওকে যদি বাঁচিয়ে রাখতো উত্তর প্রদেশের সরকার পড়ে যেত। আর বিকাশ দুবেও বোকা লোক। ও কিনা পুলিশের কাছে স্যারেন্ডার করতে গেল। স্যারেন্ডার করতে হলে আদালতে করতে হতো। কোর্টে স্যারেন্ডার করলে ওকে তো জানে মারতে পারত না।”

প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের কানপুরের এই কুখ্যাত ডন বিকাশ দুবের হাতে উত্তরপ্রদেশের হেভিওয়েট বিজেপি নেতা সন্তোষ শুক্ল খুন হন ২০০১ সালে। এই খুনের পিছনে রাজনৈতিক রোষ, মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কারন ৯৬-এর ভোটেও সন্তোষের বাহিনীর কাছে জোর ধাক্কা খেতে হয়েছিল বিকাশকে। ফলে পুরনো আক্রোশের জেরেই সন্তোষ শুক্লকে খুন হতে হয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল। যে সময় এই হেভিওয়েট বিজেপি নেতাকে খুন করা হয় সে সময় উত্তরপ্রদেশে ছিল বিজেপি সরকার এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তবে বিকাশ দুবে বিএসপি রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়াই করলেও সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সে বিজেপি এবং বিএসপি দুই রাজনৈতিক দলের হয়েই কাজ করতো বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এরপর ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের সিংহাসন দখল করার পর বিকাশ দুবের পায়ের তলার মাটি ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে। এর পিছনে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের মাফিয়াদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি। তারপরেই পুলিশ খুনের ঘটনা আর অবশেষে শুক্রবার পুলিশের হাতে তারই এনকাউন্টার।