অনুব্রতও বিজেপিতে আসার চেষ্টা করছে : সিউড়িতে এসে মন্তব্য সৌমিত্র খাঁয়ের

হিমাদ্রি মন্ডল : এ মাসের ৬ তারিখ বীরভূমের নানুর থানার অন্তর্গত রামকৃষ্ণপুর গ্রামে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে গুলিতে নিহত হন বিজেপি নেতা স্বরূপ গঁড়াই। এরপর বীরভূম জেলার পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে গতকাল থেকেই চলছে ধর্ণা। ধর্না চলবে যতদিন না গ্রেপ্তার করা হচ্ছে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কেরিম খানকে।

বীরভূমের সিউড়িতে ধর্ণা মঞ্চে আজ উপস্থিত হন বাঁকুড়ার সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি এসে বক্তব্য রাখার সময় শুভেন্দু অধিকারী ও অনুব্রত মন্ডলের বিজেপিতে আসার প্রসঙ্গে জল্পনা উসকে দেন।

তিনি বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলের জন্য যা শুনেছি তাতে আমার মনে হয় তার উপর ১০০০ কেস হবে। তার আগে অবশ্য উনি চেষ্টা করছেন ভারতীয় জনতা পার্টির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার।”

এরপর তিনি আরও বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুরের শুভেন্দু অধিকারী উনার কি আর কোন কার্যকলাপ দেখছেন। উনি জানুয়ারিতে আসতে পারেন, এরকম একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।”

“আর অনুব্রত বাবু নাম লেখার জন্য অলরেডি অনেক রকম কার্যকলাপ শুরু করে দিয়েছেন। আর তার কারণ ১০০০ টা কেশ যেন তার উপর না হয়। আমি তৃণমূল ছাড়ার আগে ওদের জেলা সভাপতিকে বলেছিলাম যত পারো কেস দাও, কিন্তু মনে রাখবে চাকাটা ঘুরছে।”

“যখন সুজাতা প্রচার করছে, অনেক পুলিশ অফিসার বলেছিল বোম মেরে উড়িয়ে দাও, গুলি করে মেরে দাও। আমি তখন তৃণমূলের নেতাদের একটা কথায় বলেছিলাম আমার স্ত্রীর যদি কোন ক্ষতি হয় তোদেরও একটা করে বেটা আছে ভাই, তোদের বেটাগুলো কোথায় রাস্তায় মরে পরে থাকবে সেটা আমার জানা নেই। আমার হচ্ছে একটা কথা, পাল্টার রাজনীতি পাল্টা। সরকার আমরা পাবো। রাজনীতি কখনোই ভেতরের রাজনীতি থাকতে পারে না, প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে হবে। আমি আপনাদেরকে বলছি সবারই বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আছে, আমাদের যদি একটা ছেলের কোন ক্ষতি হয় ওদেরও একটা ছেলের ক্ষতি হবে।”

এরপর তিনি বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি রাঢ়বঙ্গের মানুষ, গ্রামের ছেলে কিন্তু আপনাদের বলছি এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আপনারা গ্রামে গ্রামে রাস্তা কাটুন, দরকার হলে মাওবাদী আন্দোলন গড়ে তুলুন।আসলে পুলিশের কোন দোষ নেই, পুলিশের ভয় শুধু ট্রান্সফারের, আমার সঙ্গে বিভিন্ন ওসিদের হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ আছে, তারা বলছে আপনারা আসুন। ওসিদের কি করে এত মাসিক ইনকাম হতে পারে। বিভিন্ন ব্লকের ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই থানার ওসিদেরকে, আর এই জেলায় জেলা সভাপতি হচ্ছেন পুলিশ সুপার এবং অনুব্রত মণ্ডল হচ্ছেন পুলিশের এসপি।”

শুধু এখানেই থেমে যাননি তিনি, ধর্না মঞ্চ থেকে তিনি বীরভূম পুলিশ ও তৃণমূলের নেতাদের চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল একজন কয়লা চোর, পাথর চোর, আপনিও একটা চোর। আপনি আমার বিরুদ্ধে কেস করুন, আমার দম থাকলে আমি সুপ্রিম কোর্টে যাবো। আর আপনি টাকাগুলো সব অভিষেক ব্যানার্জিকে দিয়ে আসুন, আমার দম না থাকলে আপনাদের ক্ষমতায় আছে আপনারা জেলে ঢোকান। আমি যখন দিল্লিতে একটা ছোট্ট ঘরে ছিলাম আর আমার কেস চলছিল তখন আমি জেলে যাবো বলে তৈরি হচ্ছিলাম সেই কারণে আমার আর ভয় বলে কিছু লাগেনা। যখন এখানে আমাদের ছেলেগুলো জেল খাটছিলো তখন ভাবছিলেন তৃণমূল জেগে গেছে। আর তাই বলছি রাজনৈতিক জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ তিন মাস জেল খাটবে কিন্তু এখন বড় বড় আইন ও মুছে দেওয়া যাচ্ছে, ভারতবর্ষের আইনে এখন সবই সম্ভব হচ্ছে তাই যখন আমরা ক্ষমতায় আসবো তখন আমাদেরও আইন মুছে যাবে।”