হাতজোড় করে একুশের ভোট প্রার্থনা অনুব্রত মণ্ডলের

অমরনাথ দত্ত : হাতে গোনা আর কয়েকটা মাস, তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। আর একুশের এই বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল একের পর এক কর্মী সভা আয়োজন করে চলেছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। এই সকল কর্মী সভার মধ্যে শনিবার একটি কর্মীসভা ছিল ইলামবাজারে। ইলামবাজারের লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে এই কর্মী সভা আয়োজিত হওয়ার সময় অনুব্রত মণ্ডল হাতজোড় করে একুশের ভোট প্রার্থনা করলেন দলের কর্মীদের কাছে।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আপনাদের জন্য কিসের উপকার করে নাই! মৎস্য মন্ত্রীর ডিপার্টমেন্টে এত কাজ হয় দেখেছেন! এত রাস্তাঘাট হয় মৎস্য ডিপার্টমেন্ট থেকে। আপনারা জানতেন? জানতেন না।” এরপরেই তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করে বলেন, “আচ্ছা বলুন তো, কি পান না গর্মেন্টের ঘর থেকে। চাষিরা কি পায়না! সবই তো দিচ্ছে আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী। আপনাদের বাড়ীর মুখ্যমন্ত্রী। তা একুশের ভোট আমার ভোট নয়, চন্দ্রনাথ সিনহার ভোট নয়, এখানেই পঞ্চায়েত প্রধানের ভোট নয়, পঞ্চায়েত সমিতির ভোট নয়, জেলা পরিষদের ভোট নয়, মিউনিসিপ্যালিটির ভোট নয়, এ ভোট মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভোট।”

এরপরেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে কর্মীদের সামনে হাত জোড় করে বলতে দেখা যায়, “আমি হাতজোড় করে বলছি, যদি আমরা কোন ভুল করে থাকি আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। মমতা ব্যানার্জিকে ২১ সালে আবার মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। এ মমতা ব্যানার্জির ভোট। যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে আমরা ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। যদি কোন প্রধান অন্যায় করেছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। যদি কোন মেম্বার অন্যায় করে থাকি আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কোন সাধারণ কর্মী যদি চোখ রাঙিয়ে থাকে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এ ভোট মমতা ব্যানার্জির ভোট। আমাদের খুব দরকার পশ্চিম বাংলায় মমতা ব্যানার্জিকে রাখার।”

অন্যদিকে দিন কর্মী সভা শেষে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল একই দিনে দুটি ঘটনা খয়রাশোল ও লাভপুর প্রসঙ্গে জানান, “এখানে পার্টির কোনো ব্যাপার নেই পুলিশ সব তদন্ত করে দেখছে।”

প্রসঙ্গত বীরভূমের দন্ডপ্রতাপ এই তৃণমূল নেতাকে বারংবার সংবাদের শিরোনামে আসতে দেখা গেছে নানান বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য। তবে এবার এই নেতাকেই আগত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন কর্মীসভায় দেখা যাচ্ছে একটু অন্য মেজাজে। যদিও তিনি প্রতিটি কর্মীসভাতেই একটি কথা বলে আসছেন, “একুশের ভোট আলাদা কৌশলে করা হবে।” এখন রাজ্য তথা জেলার বাসিন্দারা তাকিয়ে রয়েছেন আগামী দিনের বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি কোন কৌশল দেখান সেদিকে।