ইউরোপের প্রথম কোনো দেশ নিজেদের করোনামুক্ত ঘোষণা করলো

নিজস্ব প্রতিবেদন : গোটা বিশ্বে করোনা সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৬০ লাখ। প্রতিটি দেশেই করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসার পর থেকে এই সংক্রমণ আরও বাড়তে শুরু করেছে দেশেও। এরকম সময়ই এলো একটা আশার আলো। ইউরোপের একটি দেশ সেই আলোর পথিকৃৎ। হ্যাঁ, আমেরিকা, ইতালি, ব্রিটেন, স্পেনের মত তাবড়তাবড় দেশ যখন হাঁপিয়ে উঠেছে করোনার সঙ্গে লড়তে লড়তে, তখন ইউরোপের একটি দেশ মন্টেনিগ্রো নিজেদের করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করলো। এই দেশের প্রধানমন্ত্রী মার্কোভিচ সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদেরকে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করেন।

এখনও অবধি করোনার কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাহলে কী উপায়ে এই দেশ করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনলো? জানা গেছে কয়েকটি নির্দেশ পালন করেই করোনাকে রীতিমতো কাবু করে ফেলেছে মন্টেনিগ্রো।ভৌগলিক দিক থেকে দেখতে গেলে আড্রিয়াটিক সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই দেশটি আয়তনে বেশ ছোটো কিন্তু এদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনা আজ গোটা বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে।

এই দেশে মাস দুয়েক আগে যখন প্রথম করোনা সংক্রমিতের খবর পাওয়া যায় তখন থেকেই কড়া হতে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে এই দেশের প্রশাসন। এই দেশে যখন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২৪ তখনই দেশের সীমানা সিল করে দেওয়া হয়। যাতে অন্য দেশের পর্যটক আর এই দেশে আসতে না পারে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর মন্টিনিগ্রো প্রশাসন আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিল করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে। একটি সেল্ফ আইসোলেশন। অপরটি হল স্যানিটাইজেশন।

হ্যাঁ, ৩০ মার্চ থেকেই মন্টেনিগ্রোর প্রশাসন নাগরিকদের সেলফ আইসোলেশনে থাকার কথা বলেন। আর সেই দেশের প্রতিটি নাগরিককে তাদের চারপাশ পরিষ্কার রাখার জন্য বারবার সতর্ক করেন। চারপাশকে স্যানিটেশন করার নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফ থেকে। সেই দেশের নাগরিকরা সরকারের নির্দেশগুলি পালন ও করে নির্বিবাদে। সেই সঙ্গে চালু করা হয় লকডাউন। যিনি লকডাউন অমান্য করবেন তার জন্য মোটা টাকা জরিমানা করা হবে বলেও ঘোষণা করা হয়।

এরপর সেখানকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এখনও অবধি সেই দেশে করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। আর বাকি ৩১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বিগত ২৫ দিনে নতুন কোন সংক্রমিতের খবর ও পাওয়া যায়নি এই দেশ থেকে। তবে উল্লেখ্য এই দেশটির আয়তন ছোট এবং কম জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় সংক্রমিতদেরকে চিহ্নিত করার কাজটিও সহজতর হয়েছে।

ইউরোপের এই দেশটির করোনা মুক্ত হওয়ার খবর নতুন করে আমাদের হতাশাগ্রস্ত মনে আশার আলো সঞ্চার করলো।করোনাকেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। দরকার শুধু সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সঠিক পরিকল্পনার।