করোনা রুখতে ও ইমিউনিটি বাড়াতে এড়িয়ে চলুন ৫ খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনাকে ঠেকাতে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক আসেনি, আসেনি কোনো ওষুধ। তাই আমদেরকে করোনা নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন করোনাকে হারাতে গেলে মাস্ক, স্যনিটাইজার গুরুত্বপূর্ন হলেও সঙ্গে সঙ্গে বাড়াতে হবে আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার। আপনার শরীরকেই করোনার বর্ম করে তুলতে হবে। ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে কিছু খাবার বাদও দিতে হবে। সেইসব খাবার কি কি জেনে নিন…

ফলের রস ও প্যাকেটজাত পানীয় : অনেকেই বাজারে পাওয়া প্যাকেটজাত পানীয়র প্যাকেটে ‘ডায়েট’ বা ‘১০০ % ফলের রস’ লেখা থাকলেই স্বস্তিবোধ করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলের রসে সুগারের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। ফলের রস খেলে এতটা সুগার একসাথে শরীরে ঢুকে যাওয়ায় শরীর তা সামলাতে পারে না। ফলে ওজন বেড়ে যায় আর তার সাথে বাড়ে ডায়াবেটিস। এমনকি মেটাবলিক সিনড্রোমের মতো সমস্যাও দেখা যায়। এই জটিলতাগুলি প্রতিরোধক ক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়।

এছাড়াও প্যাকেটজাত ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। কৃত্রিম মিষ্টি, রং, গন্ধ ও সংরক্ষণ করার জন্য এমন জিনিস মেশানো থাকে যাতে বিপদ আরও বাড়ে। কিন্তু সেই জায়গায় একটি ফল চিবিয়ে খেলে শরীরে সুগার ঢোকে ধীর গতিতে এবং ফলের পুষ্টিও পাওয়া যায়।

কফি ও ক্যাফিন সমৃদ্ধ খাবার : আমরা অনেকেই সারাদিনে বেশ কয়েক কাপ কফি খেয়ে থাকি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত কফিতেই রয়েছে বিপদ। কফি ছাড়া যদি আপনার ঘুম না ভাঙে তাহলে সকালে উঠে এক কাপ কফি খাওয়া যেতে পারে। আর সারাদিনে কাজের মাঝে আরও এক কাপ কফি চলতে পারে কিন্তু তাঁর বেশি নয়।

আপনি কফিতে চিনি মিশিয়েই খান বা সুগারফ্রি দিয়ে দুটোই আপনার শরীরে ক্ষতি করবে। এমনকি ক্যাফিনযুক্ত পানীয় খাওয়াও ভালো নয়। এতে শরীরের কর্টিজল হরমোন ক্ষরণ বাড়ে এবং রাতের ঘুম নষ্ট হয়। ফলে শরীরে বাড়ে বিভিন্ন রকম জটিলতা। প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাধাপ্রাপ্ত হয়।

চিনি ও মিষ্টি : বাঙালির মিষ্টি না খেলে দিন চলে না। আবার চিনি খাওয়াটাও অনেকের প্রিয়। কিন্তু সমস্যা হল, চিনির কোনও গুণ নেই। চিনি যদি ময়দা-ঘি-মাখনের সঙ্গে যুক্ত হলে তাহলে ক্ষতিও হয় বেশি। প্রদাহের প্রবণতা বেড়ে যায়। পাল্লা দিয়ে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

বেশি মিষ্টি খেলে ওজন বাড়ে। বাড়ে ডায়াবিটিস বা মেটাবলিক সিনড্রোমের আশঙ্কা। এগুলিও কোভিডের জন্য সমান তালে ক্ষতিকর। অতএব, চিনি বর্জন করুন। চিনি-ময়দা-ঘি/মাখনে বানানো খাবার যত কম খাবেন তত ভাল। না খেলে আরও ভাল।

তেলেভাজা : এমন অনেকেই আছেন যারা সারাদিন ভাজাভুজি না খেয়ে থাকতে পারেন না। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন উইংস, কিংবা বিকেলে মুড়ির সাথে চপ বা কাটলেট, এইসব এবার বাদ দিন। চিকিৎসকেরা বলছেন, এইসব ডুবো তেলে ভাজা হয়। আর ডুবো তেলে ভাজা খাবারে নুনের পরিমাণ বেশি থাকে।

শরীরে এইভাবে নুন প্রবেশ করে শরীরের জল ধরে রাখে ও উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি করে। এছাড়া এইসব খাবারে ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রচুর পরিমাণে থাকে। যা শরীরের উপকারী জীবাণুকে দূর্বল করে দেয় ও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বিঘ্নিত করে।

অ্যালকোহল : অনেকেই ভাবেন অ্যালকোহল খেলে করোনার সাথে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়বে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই যুক্তি একেবারেই ভিত্তিহীন। বরং একেবারেই বাদ দিতে হবে অ্যালকোহল। এতে নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্ট বাড়ে। এমনকি বেশি পরিমাণে অ্যালকোহল খেলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ওবিসিটি সহ করোনার যত কো-মর্বিডিটি আছে সব বেড়ে যায়।