সুপ্রিম কোর্টের যে ৫ বিচারপতি বদলে দিলেন ভারতের ইতিহাস, চিনে নিন তাঁদের

নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ কয়েক দশকের অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে যে বিবাদ চলছিল, তার রায়দান আজ হয় সুপ্রিম কোর্টে। টানটান উত্তেজনার মধ্যেই সকাল সাড়ে দশটায় রায় ঘোষণা শুরু হয়। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ দুই পক্ষের শাওয়াল জবাবের বিষয়বস্তু আধঘন্টা শোনানোর পর অবশেষে জানান, অযোধ্যায় বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমির মালিকানা আপাতত যাবে সরকারের হাতে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার তিন মাসের মধ্যে একটি ট্রাস্ট বা অছি পরিষদ গঠন করে সেই জমির মালিকানা তাদের হাতে তুলে দেবে। সেই সঙ্গেই অযোধ্যায় বিতর্কিত জমির থেকে দূরে মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি দিতে হবে সরকারকে। আর আজ যে পাঁচ বিচারপতির হাত ধরে আজ এই রায় ঘোষণা হলো তাঁরা হলেন –

রঞ্জন গগৈ : ভারতের ৪৬তম প্রধান বিচারপতি। তিনি তাঁর বিচার কালে অমিতাভ বচ্চনের আয়কর সংক্রান্ত মামলা, অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি চালু, অযোধ্যা জমি বিতর্ক-সহ অজস্র গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দিয়েছেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বেনজির ভাবে যে ৪ জন বিচারপতি তৎকালীন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, রঞ্জন গগৈ তাঁদের অন্যতম। আবার তাঁর বিরুদ্ধেই যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন শীর্ষ আদালতের এক মহিলা কর্মী।

শরদ অরবিন্দ বোবদে : ইনি হলেন দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি। তিনি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার মামলা, আধার, অযোধ্যা জমি বিতর্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অজস্র মামলায় বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। তিনি মুম্বইয়ের মহারাষ্ট্র জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় ও নাগপুরের মহারাষ্ট্র জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের দায়িত্ব সামলেছেন।

এস আব্দুল নাজির : গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলো এস আব্দুল নাজির কোনও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি না থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত করা হয়। তিন তালাক মামলা যে বেঞ্চে হয়েছিল, তার সদস্যও ছিলেন তিনি। সেই মামলায় তিনি তিন তালাক প্রথাকে ‘সংবিধান-বিরোধী’ তকমা দেওয়ার বিরোধী ছিলেন।

অশোক ভূষণ : মুম্বইয়ের আরে অরণ্যে গাছ কাটা, দিল্লিতে আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত মামলা সহ নানান বেঞ্চের সদস্য ছিলেন।তিনি ২০০১ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে ২০১৪ সালে কেরল হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। তার পরের বছর ওই হাইকোর্টেরই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৬ সালের মে মাসে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন।

ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড় : তিনি ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আধার মামলায় বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। তিনি সেই মামলায় ভিন্ন রায় দিয়ে জানিয়েছিলেন প্রতিটি তথ্য ভাণ্ডারের সঙ্গে আধার যুক্ত হলে ব্যক্তি পরিসরের অধিকারে আঘাতের আশঙ্কা থেকে যায়। এছাড়াও আধারের বর্তমান ব্যবস্থার ১০টি ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনিই।