রোজ দানের পরিমাণে রেকর্ড গড়লেন আজিম প্রেমজি, হলেন সবচেয়ে দয়ালু ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় আইটি ইনড্রাস্টির ‘জার’ (সম্রাট) নামে পরিচিত আজিম হাসিম প্রেমজি। বিশ্বজুড়ে তাঁর পরিচয় ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোর চেয়ারম্যান হিসাবে। ২০২০ সালে বিশ্বের ২০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন।

কিন্তু বর্তমানে তাঁর অন্য শ্রেষ্ঠ পরিচয় দানবীর বা দাতা হিসাবে। বর্তমানে প্রতিদিন তাঁর দানের পরিমাণ ২২ কোটি টাকা। গত বছর তাঁর দানের পরিমাণ ছিল ৪২৬ কোটি টাকা। এই বছরে তাঁর দানের পরিমাণ ৭,৯০৪ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে মানুষের উপকারের শীর্ষ তালিকায় তাঁর স্থান এখন প্রথম।

আজিম প্রেমজির জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৪ জুলাই মুম্বাইয়ের গুজরাটি মুসলিম পরিবারে। বাবা মহঃ হাসিম প্রেমজি ছিলেন বার্মার রাইস কিং হিসাবে বিখ্যাত। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্নাতক হন।

২১ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর তিনি Western Indian vegetable Products Ltd এর দায়িত্ব গ্ৰহণ করেন। ১৯৮০ এর দশকে আইটি ব্যবসার গুরুত্ব বুঝে এই ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। যা ভারতীয় আইটি ক্ষেত্রে দ্রুত বাজার দখল করে নেয়। ২০০৫ সালে পদ্মভূষণ ও ২০১১ সালে পদ্মবিভূষণ উপাধি লাভ করেন।

২০০১ সালে তিনি আজিম প্রেমজি ফাউন্ডেশন গঠন করেন। ২০১০ সালে ২ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার দান করেন ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতিতে। ২০২০ সালে করোনা মোকাবিলায় তাঁর সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

আজিম প্রেমজি তাঁর ভিসন সম্বন্ধে বলেছেন, “আমি গভীর ভাবে বিশ্বাস করি, যারা সম্পদ সৃষ্ঠিতে সাফল্য লাভ করেছে তাদের দান‌ করা উচিত একটি ভালো পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য। তাদের জন্য যারা দারিদ্রের মধ্যে জীবনযাপন করছে।”

দানের ক্ষেত্রে দেশে দ্বিতীয় স্থানে আছেন এইসিএল টেকনোলজিসের শিব নাদার। গত বছর তাঁর দানের পরিমাণ ছিল ৮২৬ কোটি টাকা। আর্থিক বছর ২০ তে তাঁর দানের পরিমাণ ৭৯৫ কোটি টাকা।

ভারতে ধনীদের মধ্যে প্রথম ও বিশ্বে ধনীদের প্রথম দশজনের তালিকায় থাকা মুকেশ আম্বানি আছেন দানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে। তাঁর এই অর্থে বর্ষে দানের পরিমাণ ৪৫৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তাঁর দানের পরিমাণ ছিল ৪০২ কোটি টাকা।

দেশজুড়ে মহামারী পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন ভারতের প্রথম শ্রেণীর কর্পোরেট সংস্থারা। টাটা সন্স ঘোষণা করেছে ১৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার। আজিম প্রেমজি ১,১২৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। পিএম কেয়ারস ফান্ডে আম্বানিরা ৫০০ কোটি টাকা, আদিত্য বিড়লা গ্ৰুপ ৪১০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আজিম প্রেমজির পিতা মহম্মদ হাসিম প্রেমজি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা জিন্নার ডাক প্রত্যাখ্যান করে ভারতের অর্থনীতিতে অবদান রেখেছিলেন। তাঁর পথ ধরেই আজিম প্রেমজি ভারতকে আধুনিক প্রযুক্তিতে শ্রেষ্ঠ জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে দেশের জন্য দান করেছেন তাঁর সম্পদের বিপুল এক অংশ।