সাধারণ এই মেয়ের জেদেই হার মানলেন মন্ত্রী, মুখোমুখি হতে হলো সিবিআইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে, জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করতে নেই। তবে জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করেও জয় ছিনিয়ে নেওয়া যায় তা দেখিয়ে দিলেন বাংলার এক সাধারণ মেয়ে। তার অদম্য জেদের জেরে আজ সিবিআই-এর মুখোমুখি হতে বাধ্য হলেন রাজ্যের মন্ত্রী।

লড়াইয়ের সঙ্গে আপস না করা এবং অদম্য জেদে জয় ছিনিয়ে নেওয়া ওই বাঙালি মেয়েটি হলেন শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের ববিতা সরকার। তার এই লড়াইয়ে কোন রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেনই বা হবে না! কারণ তার মামলার জেরেই আজ মন্ত্রী সিবিআই-এর মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রীর মেয়ে চাকরি খুইয়েছেন।

ববিতা সরকার ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। সেই পরীক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ সহ প্রায় এক বছর পর ২৭ নভেম্বর। এই তালিকাতে ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল ববিতার। সাধারণ প্যানেল লিস্টে নাম থাকা চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের পর এই ওয়েটিং লিস্ট থেকে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির জন্য নিয়োগ করা হয়। যে কারণে আশায় বুক বেঁধেছিলেন ববিতা।

কিন্তু সেই চাকরি আর জোটেনি ববিতার। এরইমধ্যে মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা। আর সেখানেই দেখা যায় মারাত্মক গন্ডগোল। লিস্টে ২০ নম্বরে থাকা ববিতা সরকারের নাম কাউন্সিলিংয়ের সময় চলে যায় ২১ নম্বরে। কারণ এই তালিকায় অদৃশ্য ম্যাজিকের দৌলতে এক নম্বরে পৌঁছে যান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী।

জানা যায়, ইন্টারভিউ বাদে অঙ্কিতা অধিকারী নম্বর ছিল ৬১। অন্যদিকে ববিতা সরকারের ইন্টারভিউ সহ নম্বর ছিল ৭৭। সেক্ষেত্রে অঙ্কিতা যদি ইন্টারভিউতে ১০ নম্বর পেয়ে থাকেন তাতেও কোনো ভাবেই ববিতাকে টপকাতে পারবেন না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে ন্যায়ের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন ববিতা।

ববিতার করা এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি খারিজ করেন। অন্যদিকে ফাঁকা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ববিতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পরেশ অধিকারীকে সিবিআই-এর মুখোমুখি হতে বাধ্য করে আদালত।