সিঁথিতে সিঁদুর, শুরু কুরুক্ষেত্র, বৈশাখীকে ‘রক্ষিতা’ কটাক্ষ রত্নার, পাল্টা বৈশাখী

নিজস্ব প্রতিবেদন : শোভন বৈশাখী রত্না, এই তিনজনের টানাপোড়েনে অধিকাংশ সময়ই তারা সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন। সম্প্রতি এই শিরোনামের ঘটনা আরও বেশি করে মাথাচাড়া দিয়েছে বিজয়া দশমীর দিন সিঁদুর খেলার সময় বৈশাখীর সিঁথিতে শোভনের সিঁদুর পরানো নিয়ে। ঘটনার পরেই শনিবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে সেই কুরুক্ষেত্র। শুরু হয়েছে রত্না এবং বৈশাখীর মধ্যে বাদানুবাদ। যদিও এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত মাঝে পড়ে থাকা শোভনকে কোনরকম কথা বলতে শোনা যায়নি।

শোভন চ্যাটার্জীর হাতে সিঁথিতে সিঁদুর পরার পর সেই মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বৈশাখী ব্যানার্জি নিজের আনন্দের কথা প্রকাশ করেন। তবে শোভন চ্যাটার্জীর এই কার্যকলাপে কার্যত ক্ষুব্ধ হন তার স্ত্রী রত্না চ্যাটার্জী। ঘটনার পরেই তিনি কার্যত মনে পড়িয়ে দেয়, আইনত তিনিই এখন শোভন চ্যাটার্জীর স্ত্রী। পাশাপাশি রত্না চ্যাটার্জী জানান, কারোর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিলেই সে তার স্ত্রী হয়ে যান না।

বৈশাখীর সিঁথিতে শুক্রবার সিঁদুর পরানোর পর শোভন চ্যাটার্জির স্ত্রীর রত্না চ্যাটার্জী এই ঘটনা নিয়ে শনিবার নীরবতা ভাঙলেন এবং ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, “হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী, এখনও আমিই শোভনের স্ত্রী। তাই ও (শোভন চ্যাটার্জী) অন্য কাউকে সিঁদুর পরাতে পারে না।”

এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি রত্না চ্যাটার্জী ক্ষোভ উগরে দিয়ে আরও বলেন, “স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ অন্য মহিলার সঙ্গে বসবাস করে, তাহলে সেই মহিলাকে সমাজ ‘রক্ষিতা’ বলে। আর রক্ষিতাকে সিঁদুর পরালেই সে ‘স্ত্রী’ হয়ে যায় না।” পাশাপাশি তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, “ওরা বিয়ের পরিকল্পনা করলে করুক, আমি দেখব কী করতে পারি।”

রত্না চ্যাটার্জির এহেন মন্তব্য এবং হুঙ্কারে চুপচাপ বসে থাকার পাত্রী নন বৈশাখী ব্যানার্জি। তিনিও এর পাল্টা দিতে শুরু করেছেন। পাল্টা দিতে গিয়ে বৈশাখী ব্যানার্জি জানান, “আমি ওর (রত্নার) বাণীগুলো শুনলাম। কিন্তু আমি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নই। কারণ, আমার জীবনে ওর কোনও অস্তিত্বই নেই।”

বৈশাখী ব্যানার্জি আরও সংযোজন করে বলেন, “শোভন চাইলে প্রতিক্রিয়া দিতে পারেন। আমি দেব না। ও (রত্না) বেঁচেই থাকে আমার নাম করে। ওটা আমাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এখানে কারও কিছু বলার থাকতে পারে না।” পাশাপাশি তার বক্তব্য, “এটা আমার আর শোভনের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। শোভন যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা শোভনের। আমি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা আমার। আর এই সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ না হলে শোভন এটাকে স্বীকৃতি দিত না। কোনটা গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তা সমাজ ঠিক করে দেবে না। অনেক রাজনীতিকেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। শোভনের বেলায় কেন এত কাদা ছোড়াছুড়ি?”

অন্যদিকে বৈশাখী ব্যানার্জি তার স্বামী মনোজিৎ মন্ডলের প্রসঙ্গে এদিন স্পষ্টাস্পষ্টি ভাবে জানিয়ে দেন, “মনোজিৎকে যে দিন আমি মন থেকে মুছে ফেলেছি, সে দিনই আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। খাতায় কলমে কি রইলো, তা নিয়ে ভাবিত নই।” এখানেই শেষ নয়, রত্না চ্যাটার্জির ‘রক্ষিতা’ কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে বৈশাখী ব্যানার্জি তাকে ‘আশ্রিতা’ বলে কটাক্ষ করেন। বলেন, “ও (রত্না) এখন যে বাড়িতে থাকেন, সেটা তো আমি কিনে নিয়েছি। রক্ষিতার বাড়িতে ‘আশ্রিতা’ হয়ে আছেন কেন? এখন তো ছুটি চলছে। ছুটি মিটলেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ পাঠাবো।”