শুধু বড়লোকদের না বিকিয়ে গরিবদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়ার পক্ষে সওয়াল বিল গেটস-এর

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা ভাইরাস যখন অতি মহামারীর রূপ নিয়েছে তখনই বিল গেটস সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন।তিনি বলেছিলেন, যে সকল দেশগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল, সেই সকল দেশগুলিতে তিনি ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেবেন। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ভ্যাকসিনের ডোজ নিজ দায়িত্বে আর্থিকভাবে দুর্বল দেশগুলিতে পৌঁছে দেওয়ার কথাও তিনি বলেন। ভ্যাকসিন কিনবে তারই ফাউন্ডেশন এমন কথাও তিনি বলেছিলেন। এরপর কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করতে নানা দেশের নানা সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য করেন বিল গেটসের বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। পেনসালি ভানিয়ার বায়োটিক ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যাকসিন গবেষণার যাবতীয় অনুদান প্রদান করেছিল বিল গেটসের ফাউন্ডেশন ও কোয়ালিশন ফর অ্যাপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন।

দুঃস্থ প্রত্যন্ত দেশগুলিতে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন এন্ড ইমিউনাইজেশনের সাথে যৌথভাবে চেষ্টা করে কোভিডের ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার আগাম পরিকল্পনাও করে রেখেছেন বিল গেটস অনেক আগেই। সেই পরিকল্পনাকে সফল করতেই তিনি কোভিডের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন। কোন দেশ গবেষণার কাজে কত দূর এগোলো তা জানতে সকল দেশের মেডিকেল অফিসারদের সাথে বারংবার বৈঠক করেছেন মাইক্রোসফ্টের কর্তা বিল গেটস।

এর আগেও তিনি বলেছিলেন, কোভিড মোকাবিলায় সকল দেশকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে নচেৎ সাফল্য লাভ সম্ভব নয়। এবার যখন কোভিডের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথে তখন আবারও তিনি সেই একই কথা মনে করিয়ে দিলেন। অতিমহামারী রোগকে আটকানোর জন্য লাভের কথা না ভেবে মানবিক ও ন্যায় সংগত দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত। সেকথাও আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন মাইক্রোসফ্ট কর্তা। বিশ্বের সকল উন্নত দেশের প্রতি তার একটি বার্তা, “বাজারদরের কথা মাথায় রেখে যে দেশ করোনার ভ্যাকসিনের বেশি দাম দেবে তাকে এই ভ্যাকসিন দিলেই শুধু চলবে না। যাবতীয় লাভ-লোকসানের কথা ভুলে গিয়ে কোভিডের মহামারী আটকাতে গেলে সবার আগে নিঃস্বার্থ মনোভাব প্রয়োজন।”

আন্তর্জাতিক সোসাইটির একটি কনফারেন্সে তিনি বলেন, “যে দেশ বেশি দাম দেবে, শুধু সেই দেশেই করোনার ভ্যাকসিন বিক্রি করলে লাভ হবে না। বরং এমনভাবে বিশ্বের সকল দেশগুলির মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন বন্টন করে দিতে হবে, যাতে গরীব ও প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা মানুষগুলো আগে এই ভ্যাকসিনের সুবিধা পান। অধিকারের পাল্লাটা যদি একদিকে ভারী থাকে তাহলে কখনোই এই অতি মহামারীকে আটকানো যাবেনা। বরং তা ভয়ঙ্কর পর্যায়ে এগিয়ে যাবে। কারণ অতিমহামারীকে আটকাতে গেলে সব দেশকেই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে চলতে হবে। কোনো একটি দেশে কোভিডের সংক্রমণ আটকানো গেলেও অতিমহামারীকে আটকানো সম্ভব হবে না।”

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দৌড়ে এখনও অবধি এগিয়ে আছে ২১টি ভ্যাকসিন। এর মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করেছে মার্কিন বায়োটেকনোলজি কোম্পানি মোডার্না, ব্রিটেনের ফার্ম অ্যাস্ট্রোজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক। এছাড়া ভারতের বায়োটেকনোলজি কোম্পানির জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি জাইকভ ডি, ভারত বায়োটেকের তৈরি কো ভ্যাকসিনকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে হু।