বীরভূম জেলা সভাধিপতির ৬ মাসের ছুটি চাওয়া ঘিরে শুরু রাজনৈতিক জল্পনা

অমরনাথ দত্ত ও হিমাদ্রি মণ্ডল : বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য আবেদন করলেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী। কারন হিসাবে তিনি স্ত্রীর অসুস্থতা ও পারিবারিক কারণ দেখিয়েছেন। ছুটি মঞ্জুর হলে সভাধিপতি পদে দায়িত্ব নিবেন সহকারি সভাধিপতি নন্দেশ্বর মন্ডল। যদিও ছুটির কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রাজনৈতিক মহলে।

২০১১ সালে রাজ্য সরকারের পরিবর্তনের পর ২০১৩ সালে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। সভাধিপতি হিসাবে নিযুক্ত হন বিকাশ রায় চৌধুরী। ৫ বছর পর ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিউড়ি ২ ব্লক এলাকা থেকে ফের জেলা পরিষদের প্রতিনিধি হয়ে পুনরায় সভাপতি পদে আসীন হন তিনি। প্রায় সাড়ে ৬ বছর কাজ করার পর তিনি সাময়িকভাবে অব্যাহতি চাইলেন।

স্ত্রীর অসুস্থতা ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি সম্প্রতি ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে ছুটির আবেদন করেন। স্বাভাবিক নিয়মে সভাধিপতির পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ময়ূরেশ্বর এলাকা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি তথা সহকারি সভাধিপতি নন্দেশ্বর মন্ডল।

বিকাশ রায় চৌধুরী বিগত তিনটি আর্থিক বছরে পরপর কেন্দ্র সরকারের পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় পুরস্কার লাভ করেন রাজ্যের সেরা জেলা পরিষদের জন্য। অন্যদিকে বিকাশ বাবুকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাজেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আগে দেওয়া হয়েছিল। শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি এবং গোষ্ঠী কোন্দল বিদীর্ণ করে এলাকার অবজারভারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে দুটি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বহু আগেই। তারপর তাঁর নিজে থেকেই সভাপতির পদ থেকে সাময়িক ভাবে সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ। যদিও সাময়িক সরে যাবার ইচ্ছার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রাজনৈতিক মহলে।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বর্তমানে জেলা পরিষদ চালানোর জন্য কোন বিশেষ দায়িত্ব আসতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন কিছু মন্তব্য করা হয়নি।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, “পিছিয়ে পড়া বীরভূমের উন্নয়নের জন্য দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল তা আমি পালন করেছি। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার জন্য আমি সাময়িক অব্যাহতি নিয়েছি। তবে দলের প্রয়োজনে আমি সবসময় আছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক হিসেবে।”

এদিকে জেলা পরিষদের কোনো বিশেষ দায়িত্বে আসার খবর অস্বীকার করে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, “পারিবারিক কারণ ও অসুস্থতার জন্য বিকাশবাবু ছুটি নিয়েছেন। আমি কোন জেলা পরিষদের কোন বিশেষ দায়িত্ব এখন আসছি না।”

আবার ছুটি চাওয়া নিয়ে জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি স্পষ্ট জানান, “এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”