‘তৃণমূলকে সোজা পথে সরকার চালাতে ধর্ণা, চলবে অনির্দিষ্টকাল’, শ্যামাপদ মন্ডল

হিমাদ্রি মণ্ডল ও অমরনাথ দত্ত : সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ রাত্রিবেলা গুলিবিদ্ধ হন নানুরের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বিজেপি নেতা স্বরূপ গঁড়াই। গুলি করার পাশাপাশি ব্যাপক বোমাবাজিও করা হয় গ্রামজুড়ে। ঘটনায় বিজেপি কর্মীরা তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।

এরপর পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শনিবার জেলার বিভিন্নপ্রান্তে পথ অবরোধের কর্মসূচি নেয় বীরভূম জেলা বিজেপি। ঘটনায় আক্রান্ত বিজেপি কর্মী কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু গতকাল তার মৃত্যু হয়। এরপরই পুনরায় নতুন করে এসপি অফিস এবং নানুর থানার অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নেয় বিজেপি জেলা নেতৃত্ব।

কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল থেকেই সিউড়ির এসপি অফিসে প্রাক্তন জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মন্ডলের নেতৃত্বে কর্মীরা অবস্থান বিক্ষোভে বসে। রয়েছেন বীরভূম বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল। অন্যদিকে একই ভাবে নানুর থানার সামনে প্রাক্তন জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের নেতৃত্বে শুরু হয় অবস্থান-বিক্ষোভ।

সিউড়ি এসপি অফিসের সামনের অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল শাসক দল এবং পুলিশকে আক্রমণ করে বলেন, “আমাদের জেলায় বিজেপি কর্মীরা সব সময় আক্রান্ত হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের কাছে। তিনদিন আগে নানুরের রামকৃষ্ণপুরে বিজেপি কর্মী স্বপন গঁড়াইকে গুলি করার ঘটনায় পুলিশ চাইলে দুষ্কৃতীদের আটকাতে পারতো। কিন্তু তারা তা করে নাই। আর এদিকে বীরভূম জেলার পুলিশ বারংবার বিজেপি কর্মীদের ওপর মিথ্যা কেস দিয়ে জেল খাটাচ্ছে। এই অবস্থান-বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্ব আসবেন। যতদিন না পুলিশ অন্যায় স্বীকার করবে, প্রকৃত নিরপেক্ষভাবে কাজ করা শুরু করবে ততদিন আমাদের অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে সকাল ১১ টা থেকে।”

এরপরেই তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বলেন, “দিনের-পর-দিন ডজন ডজন বিজেপি কর্মী খুন হয়ে যাচ্ছে। আর কত রক্ত খাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পেট ভরবে।”

নানুরের অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে বিজেপি নেতারা দাবি করেন, “স্বরূপ গঁড়াইকে খুনের ঘটনায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে, নির্দোষ বিজেপি কর্মী যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে, ওই গ্রামের ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ অফিসারের অপসারণ করতে হবে, পুলিশি সক্রিয়তা দেখিয়ে এলাকায় তৃণমূলের সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।”

এদিকে বিজেপির এই অবস্থান বিক্ষোভকে ঘিরে সিউড়ি এসপি অফিসের সামনে অ্যাডিশনাল এসপি সুবিমাল পালের নেতৃত্বে রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা হয়েছে এসপি অফিস চত্বর।