‘ছুটি না ছাঁটাই’, তৃণমূল প্রসঙ্গে প্রশ্ন শ্যামাপদ মণ্ডলের

হিমাদ্রি মণ্ডল : ‘ছুটি না ছাঁটাই’, ময়ূরেশ্বর দু’নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জটিলেশ্বর মন্ডল ও বীরভূম জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীর ছুটি প্রসঙ্গে এভাবেই প্রশ্ন করলেন বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল।

দিন কয়েক আগে বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরের দলীয় বিজেপির অফিসে মুখ বন্ধ খামে সভাপতি নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় কর্মীদের থেকে মতামত নেওয়া হয়, তারপর সেই মতামতের খাম চলে যায় বিজেপি রাজ্য দপ্তরে। সেখান থেকে গতকাল বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি হিসেবে পুনরায় বেছে নেওয়া হয় শ্যামাপদ মন্ডলকে। পুনরায় জেলা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর আজ দলীয় কর্মীরা শ্যামাপদ মন্ডলকে সংবর্ধনা দেয়। শহর জুড়ে মিছিল করা হয়। এরপরেই শ্যামাপদ মন্ডল তৃণমূলের বীরভূম জেলার উচ্চস্থানীয় নেতৃত্বের ছুটি নিয়ে এভাবেই প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেন। এছাড়াও আজ তিনি নিজের দলের কর্মীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জবাব দেন।

সম্বর্ধনা পেয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে শ্যামাপদ মন্ডল বলেন, “একসাথে অনেকগুলি মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন হওয়ায় এইভাবে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কিন্তু তাদের জেনে রাখা উচিত ভারতীয় জনতা পার্টির সংবিধানে কখনো একজন ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে পদ ধরে রাখতে দেয় না। সব সময় বদল হয়। অগত্যা কাউকে না পেলে অথবা অন্য উপায় না থাকলে একই ব্যক্তিকে সেই পদে রাখা হয়।”

অন্যদিকে তিনি আজ তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ করে বলেন, “আজকের অনুব্রত মণ্ডল, আর পাঁচ বছর আগের অনুব্রত মণ্ডলের তফাৎ তো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। তিনিও বুঝে নিয়েছেন। আগে কোনদিন কোথাও বিনয়ের সাথে কথা বলেননি, কোন জায়গায় জোড়হাত করেন নি। আর এখন বুথ ভিত্তিক সম্মেলনের নামে মানুষের কাছে গিয়ে জোড়হাত করছেন, পায়ে ধরছেন, অনুরোধ করছেন। অর্থাৎ তাঁর যে আসতে আসতে ওয়েট কমছে সেটা শুধু বীরভূম জেলার মানুষ নয়, গোটা রাজ্য বুঝে নিয়েছে। আর অনুব্রত বাবুও ছাড়া পাবেন না।”

এরপরেই তিনি বীরভূম জেলার ময়ূরেশ্বর দু’নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জটিলেশ্বর মন্ডল ও বীরভূম জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীর ছুটি প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেন, “এইতো কয়েকদিন আগে দেখতে পেলাম ময়ূরেশ্বরে কার্যক্রম করতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল সেখানকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জটিলেশ্বর মন্ডলকে ছুটি দিলেন। আবার চার দিন আগে জানতে পারলাম বীরভূম জেলার সর্বোচ্চ পদাধিকারী বীরভূম জেলা সভাধিপতি মাননীয় বিকাশ রায় চৌধুরী ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু বীরভূম জেলার মানুষ বুঝতে পারছেন না এগুলি ছুটি না ছাঁটাই। কেউ বলছেন ছুটি, কেউ বলছেন ছাঁটাই। আর এই ছবি আর ছাঁটাইয়ের একমাত্র কারণ হল ভাগবাটোয়ারা। যখন তোলা, কাটমানি থেকে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে অসুবিধা হচ্ছে তখনই ছুটি আর ছাঁটাইয়ের নাম করে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

যদিও বীরভূম জেলাসভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী ছুটিতে যাওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন, “এখানে রাজনৈতিক কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমি পারিবারিক সমস্যা এবং স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে ৬ মাসের জন্য ছুটি নিয়েছি। ছয় মাস পরে আবার ফিরে আসবো।”