মাঝে নীল ধারে সাদা, রাজ্যে প্রথম এই জেলায় তৈরি হলো প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা

নিজস্ব প্রতিবেদন : প্লাস্টিকের (Plastic) ক্ষয় হয় না আর যে কারণেই প্লাস্টিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার দিন দিন পরিবেশ দূষণ করছে। যে কারণে বারবার প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর দাবি তুলছেন পরিবেশবিদরা। আবার পরিবেশবিদরা দাবি তুলছেন প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার করে পরিবেশকে রক্ষা করার। এই নিয়ে পরিবেশবিদদের বারংবার ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের (NGT) দ্বারস্থ হতে দেখা গিয়েছে।

ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনালে বারবার বিভিন্ন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল রাজ্য সরকারগুলিকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। যে নির্দেশিকাই বলা হয়, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Solid Waste Management) ও প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেস সমীক্ষা করে জানিয়েছিল, বর্জ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করা যেতে পারে রাস্তা নির্মাণের জন্য।

এই সমীক্ষা সামনে আসার পরই বিভিন্ন জায়গায় বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা। তবে এসবের মধ্যেই দেশে প্রথম বাংলায় তৈরি হলো প্লাস্টিক দিয়ে একটি রাস্তা। যে রাস্তার রং নীল আর ধারে সাদা বর্ডার। প্লাস্টিক দিয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের রাস্তা পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বেশ কিছু জায়গায় তৈরি করা হয়েছে। তবে এবার আরও উন্নত পদ্ধতিতে প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি করে নজির বলল পূর্ব বর্ধমান।

বর্ধমানের এই রাস্তাটি তৈরি করার জন্য পাকা রাস্তার উপর পিচের সঙ্গে নীল প্লাস্টিক টুকরো মিশিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এমন নীল রাস্তা রাজ্যের প্রথম বলে দাবি করা হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান প্রশাসনের তরফ থেকে। ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনালের নির্দেশ মেনে সব পঞ্চায়েতে শুরু হয়েছে কঠিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেখান থেকেই সংগৃহীত বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই সকল রাস্তা।

বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি করার ক্ষেত্রে একাধিক সুবিধার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হলে তা অনেক বেশি টেকসই হয়। পিচের প্রধান শত্রু হলো জল। পিচের রাস্তায় জল পেলে তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু যদি প্লাস্টিক মেশানো থাকে তাহলে এত সহজে সেই রাস্তা নষ্ট হয় না। সম্প্রতি যে রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে, সেই রাস্তাটি রায়না-২ (Raina) ব্লকের উচালন গ্রাম পঞ্চায়েতের একলক্ষী টোলপ্লাজা থেকে রাউতারা সেতু পর্যন্ত ৩২০ মিটার। এই রাস্তাটি তৈরি করার জন্য খরচ হয়েছে ২২ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা।