লক্ষ্য ৮০০ কিমি, ক্লান্ত হয়ে ট্রলি ব্যাগের উপর ঘুমিয়ে দুধের শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদন : পরিযায়ী শ্রমিকের দল হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। বাড়ি ফেরার এই পথে রাস্তার মধ্যেই কেউ নীরবেই ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর কোলে, কেউবা ট্রাকের ধাক্কায় শেষ হয়ে যাচ্ছেন, কেউবা হয়ে পড়ছেন অসুস্থ। কিন্তু পথ চলা কারো থামছে না। বাড়ি ফেরার এ অদম্য তাগিদ। পথের হাজারও বিপদ, হাজারও অসুস্থতা, হাজারও ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে মানুষ মাইলের পর মাইল রাস্তা হেঁটে পার হচ্ছেন কষ্টকে উপেক্ষা করে।

প্রায়ই আমাদের চোখের সামনে এরকম হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি মা অথবা বাবা তাদের সন্তানকে কোলে করে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরছেন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে। এ রকমই আরেকটি দৃশ্য দেখা গেল। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ছেলে। মা তাকে শুইয়ে দিয়েছেন ট্রলি ব্যাগের ওপর। ট্রলি ব্যাগে দড়ি বেঁধে টানছেন তিনি আর হেঁটে চলেছেন পায়ের নীচের উত্তপ্ত পিচের রাস্তা। ওই মহিলা পাঞ্জাবে কাজ করেন। ফিরছেন তিনি উত্তরপ্রদেশে। ৮০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছে তারা। পাঞ্জাব থেকে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি গন্তব্যটা কিন্তু কিছু কম নয়। চোখে ঘুম আসছে, ক্লান্তি আসছে, শরীরে কষ্ট হচ্ছে খিদে জলতেষ্টা সমস্ত কষ্ট দুঃখকে উপেক্ষা করেও হেঁটে যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকের দল এভাবেই।

ট্রলি ব্যাগের ওজন সমেত বাচ্চাকে টানতে গিয়ে ওই মহিলা কিন্তু এতটুকুও ক্লান্ত হননি বরং হাঁটার গতি আরও বেড়ে গেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি দলের মধ্যে তিনিও আছেন। পরিযায়ী শ্রমিকের ওই দলটিতে ছোট-বড় বাচ্চা সকলকেই চোখে পড়ছে। হাঁটতে হাঁটতেই তারা সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন।

রাজ্য সরকার শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য বিশেষ ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা করছে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের বক্তব্য, কাগজপত্র দেখিয়ে রাজ্যে ফিরে আসতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে তাই তারা হাঁটা শুরু করেছেন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য। কারোর গন্তব্য ২০০ কিমি তো কারোর ৮০০। পরিচয় একটাই তারা পরিযায়ী শ্রমিক।