পরিবর্তনে বিজেপি, নাকি মমতার হ্যাটট্রিক, কি বলছে জনমত সমীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নির্ঘণ্ট প্রকাশিত না হলেও জনমত সমীক্ষা তৈরি করে ফেলেছে সি ভোটার নামের সার্ভে সংস্থা। আর এই সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলার শাসনভার আগামী দিনে কাদের হাতে আসতে চলেছে তার একটা আভাস পাওয়া গেছে। এই সমীক্ষা করা হয়েছে যদি এখনই রাজ্যে ভোট হয় তাহলে তাদের দিকে কত আসন যেতে পারে তার উপর ভিত্তি করে।

মুখ্যমন্ত্রী পদে কাকে কত শতাংশ চাইছেন

সি ভোটের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলার ৩% মানুষ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে যোগ্যতম মনে করছেন।

সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে যোগ্যতম মনে করছেন ৪% মানুষ। সি ভোটারের সমীক্ষায় এমনটাই উঠে এসেছে।

সমীক্ষা অনুযায়ী ৭% মানুষ বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগ্যতম বলে মনে করছেন।

মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীকে ১৩% মানুষ যোগ্যতম বলে মনে করছেন। সি ভোটার সমীক্ষায় এমনটাই জানা গিয়েছে।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ১৭% মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য যোগ্যতম বলে মতামত পোষণ করেছেন সমীক্ষায়।

বাংলার ৪৯% মানুষ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যোগ্যতম মনে করছেন। সি ভোটার সমীক্ষা থেকে এমনটাই জানা গেছে।

কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে

সি ভোটার সমীক্ষা অনুযায়ী জানা গিয়েছে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেতে পারে ৪৩ শতাংশ ভোট।

শাসক দল তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা বিজেপির ঝুলিতে আসতে পারে ৩৮ শতাংশ ভোট।

যদি বাম ও কংগ্রেস জোট বদ্ধ ভাবে নির্বাচনে লড়াই করে তাহলে তাদের ঝুলিতে যেতে পারে ১২ শতাংশ ভোট।

অন্যান্যরা যেমন আসাউদ্দিন ওয়াইসি, পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী, বিজেপির বন্ধু শক্তি এবং তৃণমূলের মিত্ররা আসন্ন নির্বাচনে ভোট পেতে পারে ৭ শতাংশ।

সি ভোটার সমীক্ষা অনুযায়ী আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কমতে পারে শাসকদল তৃণমূল এবং বিজেপি ও বাম কংগ্রেসের।

সমীক্ষা অনুযায়ী আসন সংখ্যা

সি ভোটার সমীক্ষা বলছে এখনই যদি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয় তাহলে আসাউদ্দিন ওয়াইসি, পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী পেতে পারে ২ থেকে ৬ টি আসন। আসন্ন নির্বাচনে এরা যতগুলি আসন পাবে ততগুলি আসনই তাদের বাড়ছে।

সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে বাম ও কংগ্রেস যৌথভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তারা পেতে পারে ২৬ থেকে ৩৪ টি আসন। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় চল্লিশের বেশি আসন করতে চলেছে বাম ও কংগ্রেসের।

সি ভোটার সমীক্ষা বলছে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেতে পারে ৯৮ থেকে ১০৬ টি আসন। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় তাদের আসন সংখ্যা বাড়ছে কম করে ৯৫ টি। তবে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নিরিখে ১৫টি আসন কমতে পারে।

সি ভোটার সমীক্ষা বলছে এখনই যদি রাজ্যে নির্বাচন হয় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস পেতে পারে ১৫৪ থেকে ১৬২টি আসন। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় তাদের আসন সংখ্যা কমতে পারে ৪৯টি। অন্যদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে আসন সংখ্যা কমতে পারে ২টি।

আর এই সমীক্ষা দেখে এটুকু স্পষ্ট যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে শাসক এবং বিরোধী দল সব পক্ষের জন্যই লড়াইটা বেশ কঠিন। অন্যদিকে অতীতে অনেকবারই দেখা গিয়েছে এই সকল জনমত সমীক্ষা হুবহু মিলে গেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই চোখে পড়েছে ফলাফলের সাথে জনমত সমীক্ষা ধারে কাছে নেই। জনমত সমীক্ষার অর্থ হলো মানুষের চিন্তাভাবনা থেকে একটা আভাস পাওয়া। বিভিন্ন এলাকায় মানুষের সাথে কথা বলে এই জনমত সমীক্ষা তৈরি করা হয়। জনমত সমীক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক ভিত্তি থাকলেও তা যে সবসময়ই মিলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।