নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) -এর সমর্থন পেতে নাম্বার চালু করলো বিজেপি

নিজস্ব প্রতিবেদন : লোকসভায় CAB বিলের উপস্থাপন থেকেই এই বিল নিয়ে দেশজুড়ে নানান মত দেখা গেছে। দেশজুড়ে এই বিল ও আইন নিয়ে নানান বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমোদনে এই বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়। বর্তমানে CAA নিয়ে সমগ্র দেশ উত্তাল। পশ্চিমবাংলা সহ কিছু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে তাদের রাজ্যে এই আইনকে কার্যকর করা হবে না।

সব মিলিয়ে উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে এই আইনের পক্ষে মানুষের রায় জানতে সম্প্রতি বিজেপির তরফ থেকে একটি টোল ফ্রি নাম্বার চালু করা হলো। বিজেপির অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল ও অল ইন্ডিয়া রেডিও একটি করে ট্যুইট করেছে এই বিষয়ে।

অল ইন্ডিয়া রেডিওর তরফ বলা হয়েছে, ‘এই আইনের সমর্থন জানাতে বিজেপির তরফ থেকে একটি নাম্বার চালু করা হয়েছে। যে নাম্বারে সাধারণ মানুষ মিসড্ কল জানিয়ে CAA কে সমর্থন করতে পারেন। এই নাম্বারটি হলো ৮৮৬৬২৮৮৬৬২।’

বিজেপির তরফ ট্যুইট করে লেখা হয়েছে, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ কে সমর্থন করার জন্য ৮৮৬৬২৮৮৬৬২ নাম্বারে মিসড্ কল দিন।’

শুক্রবার যোধপুরের সভা থেকে কর্মী সমর্থকদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ওই নাম্বারে মিসড্ কল দিতে বলার পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘শরণার্থীরা মমতাকে ভয় পাবেন না। মমতা দিদি শরণার্থীরা আপনার কী ক্ষতি করেছে? আপনি কেন এর বিরোধিতা করছেন?’

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশের খুশি! পৌষমেলায় ‘জিলিপি’ খাইয়ে চমকে দিলেন অনুপম

নিজস্ব প্রতিবেদন : NRC ও CAA নিয়ে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এমন অবস্থায় মানুষকে নিজেদের দিকে টানতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপি নেতা ও কর্মীবৃন্দরা। আর সেসময় জিলিপিকে হাতিয়ার করে মানুষের মন জয়! এও ভেবেছেন কোনোদিন! মানুষদের মন জয় করতে এমন মিষ্টি পথই অবলম্বন করেছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা, জিলিপির প্যাঁচে কুপকাত করতে পৌষমেলায় নেমে পড়লেন তিনি।

অনুপম হাজরা ছিলেন বোলপুরের সাংসদ, বাড়িও বোলপুরে। পৌষমেলাতে শান্তিনিকেতনে প্রায়শই দেখা মেলে তাঁর। তবে তৃণমূল ছেড়ে দল পরিবর্তন করে যাদবপুরে বিজেপির হয়ে দাঁড়ান তিনি। সেখানকার বর্তমান তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর কাছে ভোট বাক্সের নিরিখে তিনি পরাজিত হলেও সেখানকার মানুষদের জন্য বিজেপির হয়ে কাজ করছেন অনুপম হাজরা, লেগে রয়েছেন এলাকায়। তবে যাদবপুরে থাকলেও পৌষমেলায় আসবেন না! তা আবার হয় নাকি!

শান্তিনিকেতনের টানে শুক্রবার তিনি এলেন শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায়। আর পৌষমেলাতে এসেই বিজেপির হয়ে CAA নিয়ে মানুষের মন জয় করতে জিলিপিকে হাতিয়ার করলেন তিনি। এমন মিষ্টিকে হাতিয়ার দিয়েই মানুষের মন জয় করতে চাইলেন তিনি।

জিলিপি হাতে নিয়ে অনেকে মনে আবার মনে করেছেন এর সাথে রাজনীতির যোগ আছে। কিন্তু তাতে কি, হাসিমুখেই মানুষের হাতে মিষ্টি জিলিপি তুলে দিচ্ছেন তিনি, আর হাসিমুখেই তা হাতে নিচ্ছেন অনেকে। শুক্রবার শেষ হলো পৌষমেলা, অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিনটিতে মেলায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সেই দিনটিকেই মোক্ষম হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।

মোদি নাকি দেশদ্রোহী, অশালীন আক্রমণ অমিত শাহ’কে, বিতর্কের ঝড় বিশ্বভারতীতে

মোদি দেশদ্রোহী, অশালীন ভাষায় আক্রমন মোদি, অমিত শাহকে। বিশ্বভারতীর দেওয়াল লিখন ঘিরে শুরু হলো বিতর্ক।

প্রসেনজিৎ মালাকার : ‘মোদি দেশদ্রোহী’ দেওয়াল লিখন বিশ্বভারতী জুড়ে। শুধু এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় দেওয়াল লিখন, CAA, NRC-র প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিশ্বভারতী জুড়ে দেওয়াল লিখন। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খোদ বিশ্বভারতীর আচার্য পদে রয়েছেন।

আগামী ২৩ শে ডিসেম্বর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন ২০১৯ (CAA), নাগরিক পঞ্জিকরণ (NRC)-এর প্রতিবাদে বিশ্বভারতী উপাসনা গৃহের সামনে থেকে মিছিল করার কথা রয়েছে। তার আগে বিশ্বভারতী জুড়ে বিভিন্ন দেওয়ালে চলছে CAA, NRC, NPR-এর বিরুদ্ধে দেওয়াল লিখন। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর দেওয়ালে ‘মোদি দেশদ্রোহী’ লিখতেও দেখা যায়। এছাড়া, শান্তিনিকেতনের রাস্তার উপরে, দেওয়ালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষাও লেখা হয়। এছাড়া, দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা রয়েছে ‘NO NRC’, ‘NO CAA’, ‘NO NRP’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খোদ বিশ্বভারতীর আচার্য পদে রয়েছেন।

আচার্যের নামে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে অশালীন দেওয়াল লিখনে রীতিমতো নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এদিকে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ৬ জন অধ্যাপক অধ্যাপিকা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের সপক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।

ভরদুপুরে ৫ মিনিটে ৩ টে খুন! জিয়াগঞ্জে পুলিশি তদন্তে প্রশ্ন তুলে CBI তদন্তের দাবি অনুপমের

নিজস্ব প্রতিবেদন : দশমীর ভরদুপুরে জিয়াগঞ্জের খুনের ঘটনার হয় সোমবার। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপার শ্রী মুকেশ সাংবাদিক বৈঠক করে খুনিকে প্রকাশ্যে আনেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, দশমীর দিন দুপুর ১২:০৬ থেকে ১২:১১ এর মধ্যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে। সপ্তাহ খানেক আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার কিনারা হলেও প্রশ্ন পিছু ছাড়ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে মাত্র ৫ মিনিটে ৩ জনকে খুন করা কি আদৌ সম্ভব! প্রশ্ন তুলেছেন তাবর তাবর বিরোধীরা, শুধু তাই নয় প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং নিহত বন্ধু প্রকাশের মা’ও। বন্ধু প্রকাশের মায়ের দাবি, ঘটনার পিছনে রয়েছে বড় কোন পাকা মস্তিষ্কের হাত।

বিজয় দশমীর দিন বন্ধু প্রকাশ সপরিবারে খুন হন টাকা-পয়সা লেনদেনের বিবাদকে কেন্দ্র করেই বলে জানায় পুলিশ। মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরাকে গ্রেপ্তার করেছে মুর্শিদাবাদ পুলিশ। উৎপল বছর কুড়ির এক যুবক, যিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। উৎপলের বীমার ২৪০০০ টাকা জমা দেয়নি বন্ধু প্রকাশ বলে জানিয়েছে পুলিশ, উপরন্তু উৎপলকে গালিগালাজ করে বন্ধু প্রকাশ। সেই রাগেই খুন করেছে উৎপল সপরিবারে বন্ধু প্রকাশকে।

এই ঘটনার কিনারা হওয়ার পরই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে আমজনতার মধ্যেও। প্রশ্ন উঠছে নানান ধরনের, দিনের বেলায় কোপানো সত্বেও বন্ধু প্রকাশের স্ত্রী আটকালো না, চেঁচামেচি করলো না? উৎপল সুস্বাস্থ্যের অধিকারী অথবা পেশাদার খুনি নন, তাহলে তার পক্ষে এত অল্প সময়ে তিনটে খুন করা কিভাবে সম্ভব? ২৪০০০ টাকার জন্য তিনটে খুন?

আর এসকল প্রশ্নের মাঝেই প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশী তদন্তকে প্রশ্নের মুখে রেখে সিবিআই তদন্তের দাবি করে জিয়াগঞ্জের ঘটনায় উঠে আসা প্রশ্নগুলিকে আরও জোড়ালো করলেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, “নাম – উৎপল বেহেরা !!! পেশাদার খুনি নয় !! অতি সাধারণ রাজমিস্ত্রি !!! পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুলিশের দাবি, “বন্ধুপ্রকাশের গােটা পরিবারকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে খুন করা”-র কথা স্বীকার করেছে বছর কুড়ির উৎপল !!! অন্যদিকে এই খুনের সমান্তরাল তদন্তে নামা দিদি’র CID’র কয়েকজন কর্তা মনে করেন – ছোটখাটো চেহারা উৎপলের পক্ষে পাঁচ মিনিটে তিন-তিন জনকে খুন করা সম্ভব নয় !!! মানুষকে এতটা মূর্খ ভাবা ঠিক নয়। সরকার যতই গল্প ফাঁদে ঠিক একদিন আসল সত্য সামনে আসবেই !!! #হােক CBI !!!”

এছাড়াও জিয়াগঞ্জের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, মুখ বাঁচাতে সাতদিন ধরে পুলিশ গল্প বানিয়েছে। কিন্তু সেই গল্পটা অতীব দুর্বল, যা লোকে খাচ্ছে না।

ফের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো বীরভূম

লাল্টু : এ যেন থামতেই চায় না, একের পর এক বিস্ফোরণ বীরভূমে, এবার ঘটনাস্থল খয়রাশোল। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানা এলাকার গাংপুর গ্রামে বাবলু মণ্ডলের বাড়িতে ঘটে বিস্ফোরণের ঘটনা।

বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা, আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি সেখানে ছুটে এলে দেখতে পাই তছনছ হয়ে গেছে পুরো বাড়ি। যদিও এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর নেই। বিস্ফোরণের সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন লোকপুর থানায়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী, রাতভর টহলদারিতে রয়েছে লোকপুর থানার পুলিশ। পাশাপাশি গ্রামজুড়ে চলছে তল্লাশি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান মজুদ বোমা থেকেই এই বিস্ফোরণ।

বিস্ফোরণ ঘটতে না ঘটতে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তরজা, তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি বাবলু মন্ডল বিজেপি সদস্য। পাশাপাশি বিজেপির দাবি বাবলু তৃণমূলের তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর সদস্য। বিজেপির সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

ইতিমধ্যেই বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ঘটনায় নিরঞ্জন মন্ডল এবং মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে লোকপুর থানার পুলিশ। যাদের আজ দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। অন্যদিকে বাড়ির মালিক বাবলু মণ্ডল পলাতক। ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে লোকপুর থানার পুলিশ।

বিজেপিকে রুখতে বাংলায় লড়বে দিদির ‘বঙ্গজননী বাহিনী’

নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গে দিন দিন বাড়ছে বিজেপির দাপট। আর সেই দাপটকে রুখতে বৃহস্পতিবার নৈহাটি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বঙ্গজননী বাহিনী গঠনের ডাক দিলেন। শুধু বাহিনী গঠনের পরিকল্পনাই নয়, আজ দলের কোর কমিটির বৈঠকে এই বাহিনীর দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এই বাহিনী তৈরির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বঙ্গজননী বাহিনীর জন্য আলাদা করে এই মুহূর্তে কোন জায়গা করে দিতে না পারলেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন তাদের কাজকর্ম হবে তৃণমূলের পার্টি অফিস গুলি থেকেই। প্রতিটি বাহিনীতে থাকবে কুড়ি জন করে মহিলা। পোশাকের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের পোশাক হবে, সাদা খোলের সবুজ পাড়ের শাড়ি। প্রত্যেকের থাকবে সচিত্র পরিচয় পত্র।

মহিলাদের উদ্দেশ্য করে মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, বিজেপির গুন্ডারা যদি বোমা মারে তাহলে সরে দাঁড়ান। তারপর হাতের কাছে যা পাবেন, হাতা খুন্তি নিয়ে ধেয়ে যান।

এবারের লোকসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূলের বহু নেতাকে ভোটের প্রচারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোকাবেলায় মহিলাদের এগিয়ে আসা পরামর্শ দিতে শোনা গিয়েছিল। আর ভোটের ফলাফলের পর যখন রাজ্যের বেশিরভাগ প্রান্তে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তার মোকাবেলায় মহিলা বাহিনীকে কাজে লাগাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলে রাজনৈতিক মহলের। সেই কায়দাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই বাহিনী তৈরি করছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

কিভাবে হবে ভোট গণনা! জেনে নিন খুঁটিনাটি

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক উৎসব প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের লড়াই শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের ১১ ই এপ্রিল। মোট ৭টি দফায় ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ হবে আগামী ১৯ শে মে। ২০১৯ এর সাধারণ নির্বাচনের গণনা ২৩ মে। সেদিন সকাল আটটা থেকে গণনা শুরু হবে।

আর মাত্র দিন কয়েকের অপেক্ষা আর তারপরই দেশের রাজনীতির সাথে সাথে বঙ্গ রাজনীতির গোটা অঙ্কের হিসাব পাওয়া যাবে। কার হবে জয়, কার হবে হার তা জানা যাবে আগামীকাল অর্থাৎ ২৩ শে মে। ভোটের ফল কী হবে তা জানতে আমরা আগ্রহী ঠিকই। কিন্তু কিভাবে ভোট গণনা হয় বা ভোটগণনার পদ্ধতি কী তা কি আমরা জানি? অধিকাংশের উত্তরই হয়তো না হবে। তাহলে আসুন একঝলকে দেখে নেওয়া যাক ভোটগণনার খুঁটিনাটি।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দেশের ৫৪৩ টি কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে মোট পাঁচটি পদ্ধতিতে। প্রথমেই গণনা করা হবে পোস্টাল ব্যালটের। অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে গণনা হবে পোস্টাল ব্যালটের। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে ৫৮ দিন গণনা কেন্দ্রে।

তারপর গণনা হবে সার্ভিস ভোটারদের ভোট। তিনটি খামের ভিতর থাকবে পোস্টাল ব্যালট। প্রথমেই খোলা হবে একেবারেই প্রথমের খাম, তারপর দ্বিতীয় খাম, যেখানে থাকবে সার্ভিস ভোটের ডিক্লেয়ারেশন। তারপর তৃতীয় খামে থাকবে পোস্টাল ব্যালট। এই খামের ভেতর পোস্টাল ব্যালটের সঙ্গে থাকবে কিউআর কোড। এই কোডকে স্ক্যান করা হবে। যদি স্ক্যান মিলে যায় তবেই এই ভোট গণনা করা হবে।

এরপর গণনা হবে ইভিএম। গণনা কেন্দ্রে থাকবে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। এরপরই ইভিএম কন্ট্রোল ইউনিট নিয়ে আসা হবে স্ট্রং রুম থেকে। প্রত্যেকটি গণনা কেন্দ্র যার ভিতর কাউন্টিং হল থাকবে সেখানে সাতটি বিধানসভায় প্রায় ১৪টি টেবিল ১৫ থেকে ১৬ রাউন্ড। এভাবেই কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা করা হবে। দেখা যায় যদি কোনো কন্ট্রোল ইউনিট বিগড়ে যায় তাহলে সেই কন্ট্রোল ইউনিটের ভিভিপ্যাট গণনা করা হবে।

কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা শেষেই শুরু হবে ভিভিপ্যাটের গণনা। লটারির মাধ্যমে প্রত্যেক বিধানসভা থেকে পাঁচটি করে ভিভিপ্যাট বেছে নেওয়া হবে। যাদের আনা হবে স্ট্রং রুম। তারপর সেগুলি একসাথে গণনা হবে।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক বিধানসভার গণনা করতে সময় লাগতে পারে আনুমানিক ২ ঘন্টা।

প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা। স্ট্রং রুমে থাকবে প্যারা মিলিটারি ফোর্স। এক প্লাটুনের কিছু বেশি সংখ্যায় থাকবে এই বাহিনী। স্ট্রং রুমের লাগোয়া থাকবে কাউন্টিং হল। কাউন্টিং হলের ভেতর থাকবে সিএপিএফ। কাউন্টিং হলের বাইরে থাকবে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। তার বাইরে থাকবে কেবলমাত্র সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। এই জায়গা থেকে ১০০ মিটার দূরে থাকবে পেদেস্ট্রিয়ান জোন। যেখানে থাকবেন পুলিশ আধিকারিক ও ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিকরা। গণনাকেন্দ্র চত্বরে সমস্ত রকম গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে পারবেন। বাইরে ১৪৪ ধারা থাকবে গণনার দিন সকাল থেকেই। দেশের সমস্ত গণনাকেন্দ্রে একই নিয়ম লাগু থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যে কোন রকম বিশৃঙ্খলা এড়াতে কড়া নজর থাকবে কমিশনের।

প্রতিটি রাউন্ডের গণনা শেষ হলেই রিটার্নিং অফিসার সেই ফলাফল যোগ করে লিখে দিবেন একটি বোর্ডে। অন্যদিকে মাইকিং করেও বাইরে ঘোষণা করা হবে।

ঘোষণা শেষ হওয়ার পরই দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য স্ট্রং রুম থেকে নতুন কন্ট্রোল ইউনিট আনা হবে কাউন্টিং হলের ভিতর।

ভোটের কর্মীদের ভোটগণনার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বাছাই হয়। গণনার একসপ্তাহ আগে তাদের একটি গণনা কেন্দ্রের জন্য তাদের নির্বাচিত করা হয়। তারপর চলে তাদের প্রশিক্ষণ। কোন গণনা কেন্দ্রের জন্য একজন ভোট কর্মীকে সেখানে পাঠানো হবে তা তিনি গণনার ২৪ ঘন্টা আগে জানতে পারবেন।

ভোটগণনার দিন সকাল ৫ টায় ভোটকর্মীদের টেবিল দেওয়া হয়। প্রত্যেক গণনা টেবিলে থাকবে একজন করে সুপারভাইজার। এছাড়াও থাকবেন একজন সহকারী এবং একজন মাইক্রো অবজার্ভার।

প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের গণনার জন্য থাকবেন একজন করে পর্যবেক্ষক। তারা রিপোর্ট দিবেন নির্বাচন কমিশনে। প্রতি রাউন্ড গণনা শেষে, পর্যবেক্ষকরা ফল মূল্যায়নের জন্য যেকোনও ২ টি ভোটিং যন্ত্র বেছে নেন। প্রত্যেক রাউন্ডের পর ভোট গণনার কার্যপ্রণালী একাধিক বার পরীক্ষা করার পর কমিশনে জানান। এরপর তারা ভোট কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে সাধারনের জন্য ফলের প্রবণতা জানাতে থাকেন। গণনার শেষে সংখ্যাগুলি ৩ বার করে পরীক্ষা করেন পর্যবেক্ষকরা, এবং প্রত্যেক টেবিলের ভোটগণনার কর্মীকে যাচাই করার পর রিটার্নিং অফিসারকে ফল ঘোষণা করতে বলা হয়।

পর্যবেক্ষকরা ছাড়া গণনাকেন্দ্রের ভিতর অন্য কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারেন না। ভোটগণনা চলাকালীন কোনও ভোট কর্মী সেখান থেকে বেরোতে বা ঢুকতে পারবেন না।

জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদদের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানলে চমকে যাবেন

বাপ্পাদিত্য পাল : ভারতীয় রাজনীতিবিদরা সবাই অশিক্ষিত যেমন নন ঠিক অন্যদিকে শিক্ষিত না হয়েও ভারতের বিভিন্ন বড় বড় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন কিছু অশিক্ষিত রাজনীতিবিদরা। কিন্তু শিক্ষিত না হয়েও তাদের কর্ম যোগ্যতা গুণে সারা দেশজুড়ে তারা এক বিপুল প্রভাব বিস্তার করে গেছেন। আজ আমরা সেই রকমই কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে আলোচনা করব যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিম্নমানের হলেও ভারতীয় রাজনীতিতে তাদের প্রভাব ছিল অপরিসীম।

রাবড়ি দেবী – ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও এক সময় তিনি ছিলেন বিহারের শেষ কথা অর্থাৎ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তার পুরো নাম রাবড়ি দেবী যাদব। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ভারতীয় জনতা দলের রাজনৈতিক সদস্য এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনটি দায়িত্বপূর্ণ পালন করেছিলেন। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের স্ত্রী হওয়ার কারণে তার প্রভাব আজও অপরিসীম এবং তিনি বর্তমানে বিহার আইন পরিষদের বিরোধী দলের নেত্রী।

ফুলনদেবী : ফুলনদেবী তথা ‘বন্দিত রানী’ নামে পরিচিত এই ভারতীয় সংসদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল শূন্য। প্রচন্ড আর্থিক অনটনের কারণে তিনি কোন দিন স্কুলে পা দেননি। উত্তর প্রদেশের একটি দরিদ্র পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রচন্ড দারিদ্রতার জন্য অপরাধজগতের নাম লেখিয়ে ফেলেন তিনি। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে প্রায় ১১ বছর কারাগারে কাটিয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালে মুলায়ম সিং যাদবের নেতৃত্বাধীন সরকার তার বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয় এবং মুক্তি পান ফুলন দেবী। পরে তিনি মীরসর পুরের লোকসভার সাংসদ হিসেবে দুবার নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে এমপি বাংলোর মধ্যেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু তার সমর্থকরা তার মৃত্যুর পর তার প্রতিপক্ষকে বোমা হামলায় খুন করে।

বিজয়কান্ত : পরিবারের প্রচন্ড আর্থিক অনটনের কারণে স্কুলে পা রাখতে পারেননি। তিনি প্রথম থেকেই বাবার সাথে সালের মিলে কাজ করতে বাধ্য হন। এই অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিজয়কান্তকে ২০১১ সালে তামিলনাড়ু একটি নির্বাচনী আসন থেকে জিতেছিলেন তিনি।

গোলামা বিবি : মিনা সম্প্রদায় নেতা কিরোরি লাল মিনার স্ত্রী হওয়ার কারণে একজন বিধায়ক হয়ে ওঠেন তিনি। এতটাই অশিক্ষিত ছিলেন যে নিজের শপথ অনুষ্ঠানে নিজের শপথ নিতে পারেননি।

জাফের শরীফ : একজন চালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীকালে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং পরবর্তীকালে রেলমন্ত্রীও। সাবেক এই রেল মন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল শুধুমাত্র মেট্রিকুলেশন।