সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনা আবহে পালিত হলো রামনবমী

হিমাদ্রি মণ্ডল, লাল্টু, অমরনাথ দত্ত : শ্রী রামচন্দ্রের আবির্ভাব দিবসে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যমন্ডিত রামনবমী, যা এবছরও পালিত হলো বিশ্বজুড়ে করোনা আবহের মাঝেই। তবে এবছর রামনবমী পালন হল কেবলমাত্র রীতি মেনে। ছিল না কোনো বিগ্রহ, কেবল ঘট ও ছবিতে মাল্যদান, পাশাপাশি মানা হলো সরকারি নির্দেশিকা। কোনরকম জমায়েত নয়, যে কয়েকজন পুজোয় উপস্থিত হন তারাও সামাজিক দূরত্ব মেনে পূজো করেন।

বীরভূমের সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের শালবনি গ্রাম। যেখানকার রামনবমীর বেশ নামডাক রয়েছে এলাকায়। প্রতিবছর এখানকার রামনবমী উপলক্ষ্যে বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়। যে শোভাযাত্রায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম হতে দেখা যায়। কিন্তু এবছর বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বাদ পড়েনি ভারতবর্ষ, বাদ পড়েনি পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই ভারতে এই সংক্রমণের সংখ্যা ২০০০ এর কাছাকাছি। আর এমত অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে ২১ দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছে দেশে, পাশাপাশি সকলকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেইমতো এদিন রামনবমীতে শালবনির রামনবমীর পূজা কমিটির সদস্যরা রীতি ও ঐতিহ্য মেনে পুজো করলেন। কিন্তু কোনোরকম জমায়েত হয় নি। এমনকি গোল গোল চকের দাগ টেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সম্পূর্ণ সুরক্ষার সাথে দিনটি পালন করা হলো।

রামনবমী পূজার উদ্যোক্তারা জানান, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মেনে আমরা চকের গোল গোল গণ্ডি দিয়েছিলাম, যাতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়। আর যেসকল ভক্তরা এবছর এখানে আসতে চেয়েছিলেন তাদের আমরা করোজোরে অনুরোধ করেছি না আসার জন্য। বাড়িতে পুজো করার অনুরোধ জানিয়েছি।”

একই ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের দুবরাজপুর ও বোলপুরে। বোলপুরেও কোনরকম জমায়েত ছাড়া কেবলমাত্র নিয়ম মেনে পুজো করা হয়। অন্যদিকে দুবরাজপুরের ঐতিহ্যমন্ডিত রামসীতা মন্দিরে করোনার জেরে পুজোয় কাটছাঁট করা হয়েছে। নিয়মমাফিক পুজো করা হলেও পুজোর অংশ থেকে বাদ দেওয়া হোম যজ্ঞ সহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান। সরকারি নির্দেশিকা মেনে কোনরকম শোভাযাত্রা বা জমায়েতকে দূরে সরিয়ে রাখা হলো।

দুবরাজপুরের রামসীতা মন্দিরে পুজো দিয়ে সরকারি আইনজীবী তথা রামসীতা মন্দিরের ট্রাস্ট সেক্রেটারি মলয় মুখার্জি জানান, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের নির্দেশিকা মেনে কেবলমাত্র রীতিটুকু বজায় রেখে পুজো করলাম। এই রামসীতা মন্দির থেকে যেখানে প্রতিবছর শোভাযাত্রা বের করা হয় তা এই বছর বাতিল করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে ভোগ খাওয়ানো বাতিল রাখা হয়েছে। এমনকি পুজো সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আমরা আবার মন্দির বন্ধ করে নিজের নিজের বাড়ি পৌঁছে যাব।”