জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুরে করোনা গান, ‘বিদেশ থেকে এলো দেখো…’

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জারি হয়েছে লকডাউন, বেড়েছে সেই লকডাউনের মেয়াদও। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বারংবার প্রচার করা হচ্ছে নাগরিকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে, দিন কয়েক নিজেদের গৃহবন্দী রাখতে, সবসময় হাত মুখ পরিষ্কার রাখতে। তবে এমন প্রচারে কতটা হুঁশ ফিরেছে সাধারণ মানুষদের!

হুঁশ ফেরেনি এমনটা বলাও ভুল। চোখে পড়েছে বেশীরভাগ মানুষকেই সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে। চোখে পড়েছে বেশীরভাগ মানুষকেই নিজেদেরকে গৃহবন্দী রাখতে। তাইতো এই এখন বেশিরভাগ রাস্তাঘাট ফাঁকা, অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। তবে সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন যারা এইসব সরকারি নির্দেশিকা, লকডাউন ইত্যাদি অতি উৎসাহের সাথে অবহেলা করছেন। আর তাদের এই অবহেলায় হয়তো অন্যান্যদেরও খেসারত দিতে হতে পারে। তবে এমনটা চোখে পরেও পুলিশকে নিরাশ হতে দেখা যায়নি। তারা আবারও প্রচারে নামছেন, আবারও সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন। আর মাঝে মধ্যে তাদের কঠোরও হতে হচ্ছে। তবে এবার এই বোঝানো আর কঠোর হওয়ার মাঝে দেওয়াল তুলে এক অভিনব পন্থা বেছে নিল বীরভূম পুলিশ।

বীরভূম পুলিশের তরফ থেকে এই অভিনব পন্থা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে গানকে। কখনো জনপ্রিয় বাংলা গান, কখনো আবার হিন্দি গান, কখনো কখনো গানের কথা বদলে করোনা সচেতনতা গান। এর আগেও আমরা দেখেছি বীরভূমের বিভিন্ন থানার পুলিশ আধিকারিকরা নিজেরাই মাইক হাতে তুলে গান গাইছেন রাস্তার মোড়ে মোড়ে সচেতনতা বাড়াতে। আর এবার এসবকে ছাড়িয়ে বীরভূম পুলিশ হাত ধরল স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। মহঃবাজার থানার অন্তর্গত ভোরাই নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে হাত মিলিয়ে বীরভূম পুলিশের উদ্যোগে মহঃবাজার থানার পুলিশ করোনা নিয়ে সচেতনতা ফেরাতে নতুন গান বাঁধলো। যে গানটি বাঁধা হয়েছে একটি জনপ্রিয় হিন্দি গানের আঙ্গিকে। পুলিশ ও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আশা, জনপ্রিয় এই গানের সুরে সচেতনতা কথাগুলি মানুষের কানে ঢুকলে তাদের মধ্যে থেকে আরও বেশি সাড়া পাওয়া যাবে।

জনপ্রিয় হিন্দি গান “চাহা হে তুজকো চাহুজ্ঞা হরদম মরকে ভি দিলসে এ পেয়ারনা হোগা কম”-এর কথাগুলিকে সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া হয়েছে ‘বিদেশ থেকে এলো দেখো এ কি করোনা। মনে মনে ভয়ে ভয়ে আর থেকো না।
এই ভারতের বীর খাটছে রাতদিন,
ডাক্তার-নার্স-পুলিশ সুপার আনছে সুদিন।
ভারত সরকার বলছে এবার করোনা করবো জয়, এটাই মোদের ভারতবর্ষ এটাই পরিচয়।
ভোরাই মোরা বিশ্বাস করি ভারত হবে জয়।’

গানটি গেয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভোরাইয়ের এক সদস্য চায়না কর্মকার। তবে স্টুডিওতে বসে এইভাবে গান গাওয়াই নয়, এর আগেও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই শিল্পী এলাকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে করোনা প্রকোপের বিপর্যয়ের মুহূর্তে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে পুলিশের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে গান গেয়ে বেরিয়েছেন। সবার একটাই উদ্দেশ্য মানুষকে সচেতন করা।কারণ এই মহামারী থেকে নিজেদের বাঁচানোর উপায় একটাই সচেতনতা, বাড়িতে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।