‘চীনকে বিশ্বাস করা যায় না’, জানালেন শহীদ রাজেশের সহকর্মী সঞ্জয়

হিমাদ্রি মণ্ডল : গত সোমবার রাতে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীন দুই পক্ষের সেনাবাহিনীদের হাতাহাতিতে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের মহঃবাজারের বেলগড়িয়ার বীর সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং। আর এই সেনা জওয়ানকে আমরা হারালেও ইতিমধ্যেই পাশে পেয়েছি তারই সহকর্মী আর এক সেনা জওয়ান সঞ্জয় মোদিকে। তিনিও কিছুদিন আগে পর্যন্ত লাদাখের এই গলওয়ান উপত্যকায় ডিউটিতে ছিলেন। সদ্য সোমবার ছুটিতে বাড়িতে আসেন।

সঞ্জয় মোদি শহীদ সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের সাথে একই জায়গায় ডিউটিতে ছিলেন। তবে মাস তিনেক আগে সঞ্জয়কে টিডি পাঠানোর জন্য পাঠানো হয় মৌ’তে। তারপর সেখান থেকে গত সোমবারই তিনি বাড়ি ফেরেন। সঞ্জয় মোদির বাড়িও বীরভূমের মহঃবাজার থানা এলাকায়। আর এদিন সকালে খবর পেয়ে ছুটে আসেন রাজেশ ওরাংয়ের বাড়িতে।

সঞ্জয় মোদী জানান, “রাজেশ আমার থেকে দু’বছরের ছোট ছিল। আমাকে সবসময় দাদা দাদা করত। আর আমরা যেহেতু দুজনেই বাঙালি ও একই জায়গায় তাই আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভাল ছিল। আমরা একসাথেই একই জায়গায় ডিউটিতে ছিলাম। তবে তিনমাস আগেই আমাকে মৌ’তে পাঠানো হয়। সপ্তাহ খানেক আগেও আমার সাথে ফোনে রাজেশের কথা হয়।”

সঞ্জয় মোদী ওই জায়গার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান, “মীমাংসা তো হয়ে গেছিল। চীনা সেনাদের পিছনে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ওরা যায়নি। তার জন্যই এমন পরিস্থিতি। আমাদের সবসময়ই এলার্ট রাখা হতো বা থাকতে হতো। কারণ চীনকে বিশ্বাস করা যায় না। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বেশ মাস ধরেই চলছে। না ওরা যাচ্ছে, না আমরা যাচ্ছি। যে কর্নেল অর্থাৎ সন্তোষবাবু শহীদ হয়েছেন তার সাথেই ছিলেন আমাদের রাজেশ ওরাং।”

চীন প্রসঙ্গে সঞ্জয় মোদী এদিন আরও জানান, “চীনকে কোনভাবেই বিশ্বাস করা যায় না। ওরা কথায় এক বলে আর কাজে এক করে। প্রথমেই এর মীমাংসা হয়ে গেছিল, তার পরেও এমন ঘটনা ঘটলো। আমি ফোনে লেহ উপত্যকার সকলের সাথে কথা বলে যেটুকু জেনেছি এখনো খোঁজাখুঁজি চলছে। অনেকজনকে পাওয়া যায়নি। আর যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য ভারত সরকার যেন কড়া ব্যবস্থা নেয়। চীনকে যেন কড়া জবাব দেওয়া হয়।”

রাজেশ ওরাং ও অন্যান্য ভারতীয় সেনা জওয়ানদের শহীদ হওয়ার ঘটনায় গোটা দেশ এখন প্রত্যাঘাতের অপেক্ষায়। রাজেশের পরিবারের লোকজনও এই ঘটনার কড়া প্রত্যাঘাত চেয়েছেন। পাশাপাশি পরিবারের লোকজনের মধ্যে রাজেশকে হারানোর ঘটনায় দুঃখ থাকলেও তারা জানিয়েছেন আমাদের ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে।