বাংলাদেশকে বিদ্ধ করা রূপকথার সওদাগর গ্রেভস একসময় ছিলেন অ্যামাজনের ডেলিভারি বয়

Shyamali Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : আর মাত্র হাতে কয়েকটা দিন তার পরেই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বের খেলা। ইতিমধ্যেই এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাই রাউন্ডের খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই কোয়ালিফাই রাউন্ডের শুরুতেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা।

Advertisements

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে স্কটল্যান্ডের কাছে বিদ্ধ হতে হলো বাংলাদেশকে। মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার এই লড়াইয়ের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ রানে হেরে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে স্কটল্যান্ডের এমন সফলতা এই প্রথম নয়, এর আগেও তারা ঘরের মাঠে পর্যদুস্ত করেছে নিউজিল্যান্ডকে, টি-টোয়েন্টিতে ঘরের মাঠে পর্যদুস্ত করেছে অস্ট্রেলিয়াকে।

Advertisements

কোয়ালিফাই রাউন্ডের খেলায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এমন বিরাট সাফল্যের মূলে যিনি তিনি হলেন ব্যাটে বলে নায়ক ক্রিস গ্রেভস। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্কটল্যান্ডের এই ম্যাচে প্রথম থেকেই ফেভারিট ছিল বাংলাদেশ। এমনকি সবকিছু ছক মতোই এগোচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ সব লন্ডভন্ড হয়ে যাই অলরাউন্ডার ক্রিস গ্রেভসের আগমণে। ৫২ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে ধুঁকতে থাকা স্কটল্যান্ডকে অক্সিজেন দেন তিনি।

Advertisements

ব্যাট হাতে নেমে ক্রিস গ্রেভস ২৮ বলে ৪৫ রান করেন। তার এই রানের সুবাদে দল পৌঁছে যায় ১৪০ রানে। এরপর আবার বাংলাদেশের ব্যাট করার সময় তিনি বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট তুলে নেন। একটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসানের এবং অন্যটি মুশফিকুর রহিমের। আর তার এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে স্কটল্যান্ড ৬ রানে জয়লাভ করে। তিনিই ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন।

এদিনের এই ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হওয়া ক্রিস গ্রেভসের ক্রিকেট জগতে পা রাখার ক্ষেত্রে কোনদিন স্কটল্যান্ডের হয়ে খেলার কথাই ছিল না। তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। এমনকি অনূর্ধ্ব ১৯ বয়স কালে তিনি ইংল্যান্ডের নেট বোলার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করার পর তিনি ইংল্যান্ডে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেন তার মায়ের সৌজন্যে। কারণ তার মা ছিলেন ইংলিশ।

দক্ষিণ আফ্রিকা জাত ইংলিশ ক্রিকেটার ম্যাট প্রায়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং কথা বলার পর তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। ম্যাট প্রায়ারও তাকে ট্রায়াল দেওয়ার সুযোগ করে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে চোটের কারণে তাকে চিকিৎসার জন্য স্কটল্যান্ডে আসতে হয়। আর এই ভাবেই তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইংল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড থেকে স্কটল্যান্ডে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন।

এরপর তিনি ২০১৭ সালে এমসিসি স্কটল্যান্ডের হয়ে লর্ডসের ময়দানে খেলতে নেমে নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। ওই ম্যাচে তিনি মাত্র ৫৫ বলে ১০৬ রান তোলেন। এরপর ৩১ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৪ উইকেট নিয়ে পাকাপাকিভাবে স্কটল্যান্ড দলে জায়গা করে নেন। স্কটল্যান্ড দলে জায়গা করে নেওয়ার পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার অভিষেক হয়। আর এই অভিষেক ম্যাচেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখালেন তিনি।

লড়াকু স্কটল্যান্ডের এই অলরাউন্ডারের একজন ক্রিকেটার হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে পথটা ছিল বড়ই অমসৃণ। তাকে একসময় অ্যামাজনের ডেলিভারি বয়ের কাজও করতে হয়েছে। তিনি যেভাবে কঠোর পরিশ্রম এবং হার না মানা মনোভাব নিয়ে এই জায়গায় এসেছেন, সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক কাইল কোয়েটজার।

Advertisements