ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের জন্য সুখবর। অনলাইনে টাকা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে পুরোপুরি চার্জ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। আজ এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কের কাছে পৌঁছে যাবে এই নির্দেশিকা বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, এটিএম থেকে পাঁচবারের বেশি টাকা তুলতে গেলে একটা নির্দিষ্ট চার্জ কেটে নেয় ব্যাঙ্ক। আগামিদিনে সেই চার্জ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমতে পারে বলে এদিন আশা দেখিয়েছে আরবিআই।
আজ নতুন ঋণনীতি ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাংক৷ যেখানে সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে টানা তিনবার কমল রেপো রেট৷ বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর রেপো রেট দাঁড়াল ৫.৭৫ শতাংশে৷ যা বিগত ৯ বছরে সর্বনিম্ন বলে জানাচ্ছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷
আগে রেপো রেটের হার ছিল ৬ শতাংশ৷ তা কমে হল ৫.৭৫ শতাংশ৷ রেপো রেট কমে যাওয়ার অর্থ সুদের হার কমে যাওয়া৷ এতে সুবিধা ও অসুবিধা দুই আছে৷
রেপো রেট কি?
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়, তাকে বলে রেপো রেট। ব্যাঙ্কগুলি যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে কম সুদে টাকা ধার পায়, তাহলে তারাও কম সুদে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে টাকা ধার দিতে পারবে। ধরে নেওয়া হয়, রেপো রেট কমালে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। কারণ তখন বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা অল্প সুদে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষও ব্যাঙ্ক থেকে কম সুদে ধার নিয়ে নানা ভোগ্যপণ্য কিনতে পারে।
রেপো রেট কীভাবে ঠিক হয়?
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ছয় সদস্যের মনিটারি পলিসি কমিটি স্থির করে রেপো রেট কী হবে। কমিটিতে থাকেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও সরকার মনোনীত চার সদস্য। কমিটি দু’মাস অন্তর বৈঠকে বসে। সেখানেই স্থির হয়, রেপো রেট কী হবে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর একাই রেপো রেট স্থির করতেন। তার আগে টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসারি কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করতে হত। পরে মনিটারি পলিসি কমিটি তৈরি হয়।
সুবিধা ও অসুবিধা
আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের পর ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার কমিয়ে দেবে৷ এর ফলে হাসি ফুটতে পারে মধ্যবিত্তের মুখে। কারণ, যাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে গৃহঋণ নিয়েছেন বা ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন, তাঁদের জন্য সুদের হার বেশ কিছুটা লাঘব হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। যাঁরা গৃহঋণের জন্য আবেদন করেছেন. তাঁদেরও সুদের হার কমতে পারে।
রেপো রেট কমার কয়েকটি কুফল আছে। এর ফলে বাজারে কাঁচা টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বাড়তে পারে।
এক নজরে ৪ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য –
১) ডিজিটাল লেনদেনের ব্যাপারে সকলে যাতে আরও বেশি করে আগ্রহী হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নিল দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
২) স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এনইএফটির জন্য ১ থেকে ৫ টাকা এবং আরটিজিএস-এর জন্য ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত নিত। কিন্তু এবার থেকে আর কোন টাকায় নেওয়া যাবে না।
৩) এটিএম লেনদেন করার ব্যাপারে যে নিয়ম আছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন তৈরি হয়েছে বলে মনে করে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আর তাই সেই কাজ করার জন্য একটি কমিটিও করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
৪) এটিএম ব্যবহারের সর্বোচ্চ সীমা পেরিয়ে গেলে যে পরিমাণ টাকা দিতে হয় তা ভবিষ্যতে আর নাও লাগতে পারে।