শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল অশনি, কতটা প্রভাব পড়বে স্থলভাগে

নিজস্ব প্রতিবেদন : দক্ষিণ আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত অবশেষে আশঙ্কা মত প্রবল শক্তি সঞ্চয় করেছে। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে এই ঘূর্ণাবর্ত পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে অশনি। এই নাম রাখা হয়েছে শ্রীলঙ্কার তরফ থেকে। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করার পর এই ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়েই এখন নানান প্রশ্ন।

আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর পাশাপাশি বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টি লক্ষ্য করা যাবে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বৃষ্টির পরিমাণ ৭-১১ সেন্টিমিটার থাকতে পারে।

এই ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান সংক্রান্ত শেষ যে রিপোর্ট হাওয়া অফিসের তরফ থেকে পেশ করা হয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে এই ঘূর্ণিঝড়টি বিশাখাপত্তনম থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে এবং পুরি থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে। খুব সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ১০ মে এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর ওড়িশা অন্ধ্র উপকূলে পশ্চিম মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করবে।

তবে বিপুল শক্তি সঞ্চয় করলেও স্থলভাগের এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে স্পষ্ট করে এখনো কিছু হাওয়া অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়নি। বরং বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী মনে করা হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল নাও হতে পারে। ল্যান্ডফল না হলে ক্ষয়ক্ষতির খুব একটা আশঙ্কা থাকবে না। তবে মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যেই সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

IMD-র ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ”ওডিশা বা অন্ধ্রপ্রদেশ, কোথাও ল্যান্ডফল নাও হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ের। পশ্চিম মধ্য ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ধরে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা উপকূলের কাছে ১০ মে সন্ধ্যায় পৌঁছবে ঝড়টি। কিন্তু এরপরই গতিপথ বদল করবে ঝড়। গতিপথ বদল করে উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ওডিশা উপকূলের কাছে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অগ্রসর হবে।”

এর পাশাপাশি আবহবিদ সুজীব কর জানিয়েছেন, ”সাইক্লোন যত এগোবে, ততই শক্তি হারিয়ে ফেলবে। এটি যখন ওডিশা উপকূলে পৌঁছবে তখন কেবলমাত্র নিম্নচাপ থাকবে। বাংলায় হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না। তবে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। ঘূর্ণিঝড় হয়ত সমুদ্রের মধ্যেই শক্তি হারিয়ে ফেলবে। ফলে আর ল্যান্ডফল হবে না।”