নিজস্ব প্রতিবেদন : কালেন্ডার অনুযায়ী এবছর ১৪ সেপ্টেম্বর পড়েছে কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya 2023)। বছরের এই সময় মা তারার পিঠস্থান যে ভ্রমণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই সময় ছুটে আসেন মা তারার কাছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষমতা মত ফল আহার দিয়ে পুজো দেন মায়ের। তবে আপনি কি জানেন কৌশিকী অমাবস্যার পুণ্য লগ্নে মা তারা কিসে তুষ্ট হন? মা তারার নামেই লুকিয়ে রয়েছে আসল রহস্য।
কোষ থেকে হয় তিথির নামকরণ। তারপর সেই তিথির সঠিক নাম হয় কৌষিকী অমাবস্যা। তবে সময়ের সাথে সাথে কৌষিকী হয়েছে কৌশিকী। তাই ছড়িয়ে পড়েছে লোকমুখে। প্রত্যেক বছর ভাদ্র মাসেই পালন করা হয় কৌশিকী অমাবস্যা। বিশেষ এই তিথিতে তন্ত্রসাধনায় বসে সাধুগন। কথিত আছে, এই সময় তন্ত্র সাধনা করলে অমরত্ব লাভ করা যায়। তাই যথারীতি পিঠস্থানগুলিতে এই সময় সাধু-সন্তের ভিড় থাকে নজরকাড়া। শাক্ত ধারায় তন্ত্রসাধনার আদর্শ দিনক্ষণ হল কৌশিকী অমাবস্যা।
কথিত আছে কৌশিকী অমাবস্যা রাতে তারা মায়ের হোম যজ্ঞ করা হলে তারা মা সন্তুষ্ট হন। তারাপীঠ যেতে না পারলেও যাদের ঘরে তারা মায়ের ছবি, মূর্তি অথবা পদযুগল যাই থাকুক না কেন, সেটিকে কুশের আসনে রেখে পূজা করবেন। একটি শ্বেত পদ্ম নিয়ে ১০৮ বার তারা মায়ের নাম যপ করে যে কোনো মনকামনা নিয়ে মায়ের পায়ে দিন। পূরণ হবেই হবে।
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, কৌশিকী অমাবস্যায় সংযম পালন করা জরুরি। এদিন উপবাস পালন করতে পারলে খুবই ভালো। একেবারেই পুরোপুরি উপবাস না রাখতে পারলে নিরামিষ খাবার খেতে হবে।
কৌশিকী অমাবস্যার সন্ধ্যায় বাড়ির মূল প্রবেশ পথের সামনে দরজার দু-পাশে দুটো তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালালে সংসার থেকে সব অশুভ শক্তি দূর হয় ও শুভ শক্তির আবির্ভাব ঘটে।
কৌশিকী অমাস্যায় ভক্তরা মা তারার পায়ে রক্তজবা ফুল ও লাল সিঁদুর নিবেদন করে ভক্তিভরে মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে মা তারার আশীর্বাদে জীবন থেকে অমাবস্যার কালো ছায়া দূর হয়।
কৌশিকী অমাবস্যার সন্ধ্যায় বাড়ির কাছাকাছি কোনও কুয়োয় এক চামচ দুধ ঢালতে হবে। কুয়ো না থাকলে কোনও গর্ত থাকলেও তাতে দুধ ঢাললে হবে। এতে মা তারার আশীর্বাদে জীবনের সব বাধা বিপত্তি দূর হবে।
এদিন বাড়িঘর খুব ভালো ভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। কোথাও যেন একটুও নোংরা আবর্জনা না থাকে, বাড়ির সামনে উঠোন থাকলে সেটিও ভালো করে ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোথাও যেন একটু নোংরা আবর্জনা না থাকে। এছাড়াও এঁটো বাসন, নোংরা জামাকাপড় ফেলে রাখবেন না।
একটি জল নেই এমন শুকনো নারকেল প্রয়োজন হবে। তার এক দিক ফুটো করে চিনি দিয়ে ভর্তি করতে হবে। ওই নারকেলটি বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দিতে হবে। পোঁতার সময় নারকেলের ফুটো যেন উপর দিকে থাকে। এই কাজ পুরোপুরি লুকিয়ে করতে হবে।