তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল, দলবদলুদের ভোটের ফলাফল

নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সবথেকে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল নেতা-নেত্রীদের দলবদল। একাধিক নেতা নেত্রীদের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করতে দেখা যায়। আর এই সকল দলবদলু অধিকাংশ নেতা নেত্রীরাই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান। কিন্তু তাদের ফলাফল কি হলো?

শুভেন্দু অধিকারী : রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনি নিজের কেন্দ্র নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেন।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় : রাজ্যের আরও এক এই প্রাক্তন মন্ত্রী ঠিক ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনিও নিজের কেন্দ্র ডোমজুড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান। কিন্তু এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি তৃণমূলের কল্যান ঘোষের কাছে ৪২,৬২০ ভোটে পরাজিত হন।

বৈশালী ডালমিয়া : তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দিয়ে বালি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান। কিন্তু এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের রানা চ্যাটার্জির সামনে তিনি ৬২৩৭ ভোটে পরাজিত হন।

প্রবীর ঘোষাল : দলবদল করে তৃণমূলের এই নেতা বিজেপিতে যাওয়ার পর উত্তরপাড়া থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তৃণমূলের কাঞ্চন মল্লিকের কাছে ৩৫,৯৮৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি : তৃণমূলের এই নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়ে তার পুরাতন কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায় তিনি তৃণমূলের নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কাছে ৩৮০৩ ভোটে পরাজিত হন।

সব্যসাচী দত্ত : একসময়ের তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা বিজেপিতে দীর্ঘ কয়েক বছর আগে যোগ দিলেও এবছর বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাকে হারের মুখ দেখতে হল। বিধান নগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি তৃণমূলের সুজিত বসুর কাছে ৭৯৯৭ ভোটে পরাজিত হলেন।

অরিন্দম ভট্টাচার্য : কংগ্রেসের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য প্রথমে তৃণমূল এবং পরে বিজেপিতে যোগ দেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। এরপর তিনি জগদ্দল বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের সোমনাথ সিং ইচনির কাছে ১৮৩৬৪ ভোটে পরাজিত হন।

শীলভদ্র দত্ত : তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শীলভদ্র দত্ত খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের কাজল সিনহার কাছে ২৮,১৪০ ভোটে পরাজিত হলেন। প্রসঙ্গত কাজল সিনহা ভোটগ্রহণের পর দিনই করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান।

বিশ্বজিৎ কুণ্ডু : তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বিশ্বজিৎ কুণ্ডু কালনা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের দেবব্রত বাগের কাছে ৭৪৭৮ ভোটে পরাজিত হলেন।

রিঙ্কু নস্কর : সিপিআইএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর রিঙ্কু নস্কর বিজেপির হয়ে যাদবপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু এই প্রতিদ্বন্দিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থানেও আসতে পারেননি। তিনি ৫৩১৩৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

শংকর ঘোষ : শিলিগুড়িতে বামফ্রন্ট ছেড়ে এই নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়ে শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি এই প্রতিদ্বন্দিতায় ৩৫৫৮৬ ভোটে তৃণমূলের ওম প্রকাশ মিশ্রকে পরাজিত করেন।

রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য : সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সিঙ্গুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান। কিন্তু তাকে তৃণমূলের বেচারাম মান্নার কাছে ২৫৯২৩ ভোটে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়।

কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী : তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের প্রদীপ মজুমদারের কাছে ৩৭৪৬ ভোটে পরাজিত হন।

সুজাতা মন্ডল : বিজেপি ছেড়ে ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন এবং আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান। কিন্তু তাকে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মধুসূদন বাগের কাছে ৭১৭২ ভোটে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়।

[aaroporuntag]
মিহির গোস্বামী : মিহির গোস্বামী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই প্রতিদ্বন্দিতায় তিনি তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে ২৩৪৪০ ভোটে পরাজিত করে জয়লাভ করেন।