ইউয়িং সারকোমা প্রাণ কাড়ল ঐন্দ্রিলার, এই রোগের উৎস, উপসর্গ, কারণ কী কী

মাত্র ২৪ বছর বয়সে ইউয়িং সারকোমায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই অসুখটি আসলে কী। চলুন জেনে নেওয়া যাক। ইউয়িং সারকোমা একধরনের হাড়ের ক্যানসার। অস্টিও সারকোমার পরে এটিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হাড়ের ক্যানসার। এই রোগটি সাধারণত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

ইউয়িং সারকোমার উপসর্গ

১) হাড়ে ব্যথা এবং তরল জমা হয়।
২) হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দেয়।
৩) কোন কারণ ছাড়াই জ্বর হওয়া।
৪) ক্লান্তি অনুভব করা।
৫) ত্বকের নীচে গুটি বা ফোলাভাব, বিশেষত বগলে।
৬) শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে লিম্ফ নোড তৈরি হয়।

এর প্রধান কারণগুলি কী কী

অন্যান্য ক্যান্সারের মতো এরও প্রকৃত কারণ এখনক পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে সাধারণত ধারণা করা হয় এটি জিনগত কারণে তৈরি হয়ে থাকে।

এই রোগের সনাক্তকরণ

এই রোগের লক্ষণ গুলি শরীরে দেখা দিলে প্রথমেই রোগীর সম্পূর্ণ শরীর পরীক্ষা করা হয় এবং রোগীর চিকিৎসাগত ইতিহাস জেনে নেওয়া। এগুলির জন্য নিম্ন লিখিত পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হয়।
১) ইমেজিং বা প্রতিবিম্বকরণ।
২) এমআরআই স্ক্যান।
৩) সিটি স্ক্যান।
৪) পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি (পিইটি) স্ক্যান।
৫) বোন ম্যারো অ্যাসপিরেশন।
৬) বায়োপসি।
৭) রক্তের সি-রিয়েক্টিভ প্রোটিনের পরীক্ষা
৮) রক্তের লোহিত রক্তকণিকার কমার হার পরীক্ষা।

এই রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি

কোনো রোগীর এই রোগ ধরা পড়লে অতিসত্তর নিম্নলিখত চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
১) কেমোথেরাপি।
২) রেডিয়েশন।
৩) অস্ত্রোপচার।

তবে এই রোগের মূল চরিত্র অনুযায়ী যদি ক্যানসার বার বার ফিরে আসে, তবে স্টেম সেল থেরাপিও দেওয়া হয়ে থাকে। এর সাথে সাথে অন্যান্য আরো কয়েকটি থেরাপি রোগীকে দেওয়া হয়ে থাকে।

১) মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিস প্রয়োগ করা।
২) অ্যান্টিজেন-বৃদ্ধিজনিত ইমিউনোথেরাপি।

তবে চিকিৎসা পদ্ধতি যাই হোক না কেন রোগীর সেরে ওঠা অর্থাৎ রোগীর জীবন মরণ ক্যানসার কোন পর্যায়ে আছে তার উপর নির্ভর করে। তবে এর পাশাপাশি আরো কয়েকটি বিষয় কাজ করে।

১) টিউমারের আকার।
২) ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেনসের (এল ডি এইচ) মাত্রা।
৩) চিকিৎসাজনিত কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা।
৪) রোগীর বয়স (১০ বছরের চেয়ে কম বয়সি কি না)

এছাড়াও চিকিৎসাসূচি মেনে চলার উপরেও চিকিৎসার উন্নতি নির্ভর করে। তবে এই ক্যানসার সাধারণত ৫ বছরের মধ্যে আবারও ফিরে আসে তাই চিকিৎসকরা সে বিষয়ে রোগীর মানসিক প্রস্তুতি থাকার কথাও বলেন।