শ্রীলঙ্কার এই ৫টি জায়গা দেখার লোভে দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বের যে সকল দেশ পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে তাদের অর্থনীতি গড়ে তোলে, সেই সকল দেশগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো শ্রীলঙ্কা। এই ছোট্ট দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটজনক হয়ে পড়েছে মূলত পর্যটকদের আগমনে ভাটা পড়ার কারণেই। এছাড়াও রয়েছে ভুল নীতি। করোনাকালে পর্যটকদের আগমন একপ্রকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে এই দেশের ৫টি জায়গা রয়েছে যা দেখার লোভে দূর দূরান্ত বিদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।

সিগিরিয়া : শ্রীলঙ্কার একটি অপূর্ব এবং সুন্দর গুহামন্দির হলো সিগিরিয়া। বাংলায় একে সিংহগিরি বলা হয়ে থাকে। প্রায় ৬০০ ফুট উঁচুতে পাথর কেটে এই দুর্গটি তৈরি করেছিলেন ভারতীয় রাজা কাশ্যপ। এটি দেখতে অনেকটা মৌচাকের মত। এর অন্য একটি নাম রয়েছে যা হল লায়ন রক। প্রাগৈতিহাসিক এই গুহাটি খ্রীস্টপূর্ব ৫০০ শতাব্দী থেকেই সন্ন্যাসীদের আশ্রম হিসেবে ব্যবহৃত হত।

ক্যান্ডি : শ্রীলঙ্কার একেবারে মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এই ক্যান্ডি শহর। সবুজ অরণ্য এবং চা বাগান বেষ্টিত এই শহরটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। রাজধানী কলম্বোর পর এটি এই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এই শহরে দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। এখানকার টেম্পল অফ দ্য টুথ মন্দিরে ভগবান বুদ্ধের দাঁতের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। ক্যান্ডি লেক, ক্যান্ডির রয়্যাল প্যালেস, উদওয়াত্তাকেলে অভয়ারণ্য, সেলন টি মিউজিয়াম, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বহিরাভোকান্দা মন্দির এখানকার অন্যতম ঘুরে দেখার জায়গা।

অনুরাধাপুর : শ্রীলঙ্কার এই রাজ্যটি শ্রীলঙ্কা এবং সিংহলি জাতির প্রথম প্রতিষ্ঠিত রাজ্য। রাজ্যের নামের পাশাপাশি এখানকার রাজধানীর নামও অনুরাধাপুর। খ্রিস্টপূর্ব ৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে রাজা পাণ্ডুকভায়া এই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানকার আকর্ষণীয় স্থানগুলি হল আকর্ষণীয় স্থানগুলি হল রুয়ানওয়েলিসায়া, থুপারামায়া, লোভামহাপায়া, জেতভানারামা, অভয়গিরি দাগাবা, মিরিসাভেটি স্তূপ, লঙ্কারমা, কুট্টম পোকুনা, কিরিবাথ ভেহেরা, নাকা বিহার, সেলা সেতিয়া, রত্ন প্রাসাদ, মগুল ইভনা এবং সমাধি মূর্তি।

গালে : শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত এটি একটি বন্দর শহর। পাশাপাশি এটি দক্ষিণ প্রদেশের প্রশাসনিক রাজধানী। এই শহরটির অন্য একটি নাম হলো গিমহাথিথা। ১৯৮৮ সালে গালে দুর্গ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল। ৯০ হেক্টর অঞ্চল জুড়ে এই দুর্গ গড়ে উঠেছে। প্রাচীন এই দুর্গ ইউরোপীয় স্থাপত্য এবং দক্ষিণ এশিয় শিল্পকলার মিশ্রনের চমৎকার নিদর্শন। ডাচ রিফর্মড চার্চ, পুরাতন ডাচ গভর্নমেন্ট হাউস, ওল্ড গেটের কাছে গ্রেট ওয়্যারহাউস, ওল্ড ডাচ হাসপাতাল, মীরা মসজিদ, বৌদ্ধ মন্দির, ক্লক টাওয়ার এবং গালে লাইটহাউস এখানকার দর্শনীয় অন্যতম স্থান।

পোলোন্নারুয়া : শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য হল পোলোন্নারুয়া। একসময় দ্বিতীয় শতাব্দীতে অনুরাধাপুর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর পোলোন্নারুয়া শহরকে রাজধানী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন রাজা প্রথম বিজয়বাহু। এখানে যে সকল ঘোরার জায়গা রয়েছে সেগুলি হল রাজপ্রাসাদ, মেনিক বিহার, রনকোট বিহার, আলাহানা পিরিভেন, জেটাভান মঠ, গল বিহারের বিখ্যাত বুদ্ধ মূর্তি, লঙ্কাতিলক, এখানকার সমুদ্র এবং কৃত্রিম জলাশয় শহরের সৌন্দর্য্য।