করোনাকালে ভোটের সময় ভুলেও করবেন না যে কাজগুলি

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে দেশের পরিস্থিতি রীতিমতো লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ঘন্টায় গোটা দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ১৭০ জন ও গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ অতিক্রম করে গিয়েছে। গত ১৩ দিন পর আজ মঙ্গলবার দেশের দৈনিক সংক্রমণ একটু কম হলেও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কিন্তু ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়।

করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্র সবার আগে এগিয়ে আছে। গত ২৪ ঘন্টায় সেখানে ৫৯ হাজার জন সংক্রামিত হয়েছেন ও ৩৫১ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। এরপরের স্থানে রয়েছে উত্তর প্রদেশ, মঙ্গলবার সেখানে দৈনিক সংক্রমণ ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংক্রমণের নিরিখে মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশের পর দিল্লি, কর্ণাটক, কেরল,ছত্রিশগড় মধ্যপ্রদেশ,তামিলনাড়ু,গুজরাত‌ও রাজস্থানের মত রাজ্যগুলি রয়েছে। ভোট মুখী বাংলাও কিন্তু নিরাপদ নয়। করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউতে পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমনের গ্রাফ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গেও লাফিয়ে লাফিয়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে আর এরই মধ্যে চলছে একুশের নির্বাচন। গোটা দেশে তথা রাজ্য জুড়ে যে সংক্রমণের হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে তার থেকে গা বাঁচিয়ে কীভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে মানুষ ভোট দেবেন তা যথেষ্টই উদ্বেগের বিষয়। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে কতগুলি পরামর্শ দিয়েছেন। এই পরামর্শগুলি কি কি জানেন?

১) মাস্কের সঠিক ব্যবহার : করোনাকালে মানুষের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে, মাস্ক সাথে থাকলেই সে নিরাপদ। এই ধারণার ফলে মানুষ মাস্ক সাথে নিয়ে বেরোলেও রাস্তাঘাটে ঠিক মত ভাবে মাস্ক পরছেন না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে কোনো মানুষ কথা বলবার জন্য মুখের থেকে মাস্কই খুলে ফেলেছেন, আবার অনেক সময় দেখা যায় যে মাস্কটিকে থুতনির নীচে বা কানের পাশে ঝুলিয়ে পরেছেন। এই সকল ছোট ছোট ভুলগুলি বড় বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা মুখ, নাক ঢেকে সুন্দরভাবে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভুল করেও মাস্ক খুলবেন না অথবা নাক বা থুতুনির নীচে নামবেন না।

২) অযথা গল্প এড়িয়ে চলুন : করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথাবার্তা, আলাপচারিতা এড়িয়ে চলতে হবে কয়েকটা দিন। রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষজন জটলা করে ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে অথবা লাইনে দাড়িয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে রাজনৈতিক তরজা করে চলেছেন। নিজেকে নিরাপদ রাখতে চাইলে তাড়াতাড়ি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর সটান বাড়ি ফিরুন। অযথা গল্প বা রাজনৈতিক তরজার মধ্যে নিজেকে জড়াবেন না। কারণ আপনার গল্পের আসরের সেই সকল পরিচিত অথবা অপরিচিত ব্যক্তিরাও করোনা সংক্রমিত হতে পারেন।

৩) সামাজিক বিধিনিষেধ মেনে চলা : ,করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা প্রথমদিন থেকেই বারংবার বলে এসেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ভোটকেন্দ্রে গিয়েও তাই নিজেকে ভিড়ের থেকে একটু দূরে রাখুন এবং লাইনে দাঁড়িয়ে আপনার আগের ব্যক্তির ও পিছনে দাঁড়ানোর ব্যক্তির থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।

৪) ইভিএম মেশিন : ইভিএম মেশিনে একজনের পর আরেকজন হাত দিয়ে ভোট দেন তাই এক্ষেত্রে নিজেকেই সতর্ক হতে হবে। ইভিএম মেশিন স্পর্শ করবার আগে নিজে গ্লাভস পরে নিন, ভোট দেওয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে নিন।

৫) ভিড় এড়িয়ে ভোট : ভোটকেন্দ্রে বেশি ভিড় দেখলে অন্য সময় ভোট দেওয়ার চেষ্টা করুন। যাতে করে কম ভিড়ে ভোট দেওয়া যায়। যে সময়ে ভোটের লাইনে বেশি মানুষ আসতে পারে বলে মনে হচ্ছে সেই সময়টা বাদে অন্য সময়ে ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।

[aaroporuntag]
৬) বাড়ি ফেরার পর করণীয় : ভোট দিয়ে বাড়ির ফেরার পর সঙ্গে সঙ্গে হাত পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। হ্যান্ডওয়াশ অথবা সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। স্নান করে নিতে পারলে আরও ভালো হয়।