কষ্টের রোজগার থেকে রোজ ১৬ কেজি গম পায়রাকে খাওয়ান এই গ্যারেজ মিস্ত্রি

দীপক কুমার দাস : অধিকাংশ মানুষ কেবলমাত্র নিজের এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের অন্ন সংস্থানের কথা ভেবে থাকেন। সেই মতো তারা তাদের রোজগার থেকে খরচ করে বাকি সঞ্চয় করেন। তবে এই মানবকূলে এমন ব্যতিক্রমী বেশকিছু মানুষ রয়েছেন যারা নিজেদের অন্ন সংস্থানের চিন্তাভাবনা করার পাশাপাশি পশুপাখিদের জন্য সবকিছু উজাড় করে দেন। সেই রকমই হলেন একজন গ্যারেজ মিস্ত্রি রতন দে।

রতন দের বাড়ি সিউড়ির সোনাতোড় পাড়ায়। তার পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি একটি গ্যারেজ চালান সিউড়ি থেকে মহম্মদ বাজার যাওয়ার রাস্তায় ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। তার এই গ্যারেজে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির কাজ হয়ে থাকে এবং সেই কারণে প্রতিদিন গাড়ি চালক ও মালিকদের ভিড় জমতে দেখা যায়। তবে এরই সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমে শয়ে শয়ে পায়রাদের।

রতন দে প্রতিদিন ৩ শতাধিক পায়রাকে ১৬ কেজি গম, চাল, সরষে ইত্যাদি দেন খাওয়ার জন্য। পাঁচ বছর ধরে এই ভাবেই তিনি তার গ্যারেজে আসা পায়রাদের সেবা করে আসছেন। যে কারণে তার গ্যারেজে দিন দিন বাড়ছে পায়রাদের সংখ্যা। এমনকি এখন পায়রা ছাড়াও অন্যান্য প্রাণী যেমন হনুমান ইত্যাদিদেরও আনাগোনা শুরু হয়েছে। হনুমানদের জন্য রতন দে আলু অথবা পাকা কলার ব্যবস্থা করে রাখেন।

অন্যদিকে তার গ্যারেজে এইভাবে আসা পায়রা অথবা হনুমান দলেরা যাতে নিজেদের তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারেন তার জন্য তিনি বড় একটি পাত্রে জলের ব্যবস্থাও করেছেন। তিনি তার ছেলেমেয়েদের যেমন ভালোবাসেন ঠিক সেই রকমই এই সকল পশুপাখিদের ভালোবাসেন। আর সেই কারণেই দিন দিন তার গ্যারেজে বাড়ছে নতুন নতুন অতিথিদের সংখ্যা।

তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, সাধারণ একজন গ্যারেজ মিস্ত্রি হয়ে কিভাবে এই এত পায়রাদের খাবার যোগান দেন? এই বিষয়ে তার থেকে জানা গিয়েছে, তিনি সম্পূর্ণ নিজের রোজগার থেকে এই সকল পায়রাদের জন্য প্রতিদিন ১৬ কেজি শস্যদানা খাইয়ে থাকেন। সকাল ১১ টা বা দুপুর ১২টা বাজলেই থলি থেকে তাদের জন্য খাবার বের করে দেন তিনি।