বাঁশলৈ নদীতে সোনা রহস্য! না জানলেই নয়

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত সপ্তাহে হঠাৎ বীরভূমের মুরারই থানার অন্তর্গত পারকান্দি গ্রামের কাছে থাকা বাঁশলৈ নদীতে (Bansloi River) সোনার অলংকার এবং সোনার মোহরের (Gold) খোঁজ পাওয়া যায়। সোনার খোঁজ পাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সেই সোনা কুড়ানোর হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এখন ওই জায়গা পুলিশের ঘেরাটোপে রয়েছে।

সোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতুহল বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে এই বিপুল পরিমাণ সোনা নদীতে এলো কোথায় থেকে। নদীতে পাওয়া সোনা নিয়ে কৌতুহল বৃদ্ধি পেলেও তা কোথায় থেকে এলো তা এখনো জানা যায়নি। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সদস্যরা এই ঘটনার পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে বলে জানা যাচ্ছে।

তবে নদীতে এইভাবে কুড়িয়ে পাওয়া সোনা কি হতে পারে তা নিয়ে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় এক ইতিহাসবিদ অনির্বাণ জ্যোতি সিংহ। তিনি এগুলিকে সোনার অলংকার না বলে সোনার মুদ্রা বলেই দাবি করেছেন। সেই সোনার মুদ্রা কয়েক শতাব্দী প্রাচীন বলে জানা যাচ্ছে তার থেকে।

অনির্বাণ জ্যোতি সিংহ দাবি করেছেন, এই মুদ্রা নিয়ে অনেকের অনেক রকম মত রয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে এই মুদ্রা হল উড়িষ্যার গঙ্গ রাজাদের মুদ্রা। যে এলাকায় এমন প্রাচীন যুগের সোনার মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে সেই এলাকার (বীর নগর) সেন রাজাদের পূর্ব বংশীয় শাসক দল এখানে রাজত্ব করেছেন। এখানকার এই সেন বংশের সঙ্গে ভাদিশ্বরের ভদ্রেশ্বর সেন, এমনকি পাইকরের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল।

এই সেনদের উড়িষ্যা বিজয়ের সময় পাহিদত্ত নামে এক উচ্চ পদস্থ কর্মচারী উড়িষ্যা জয়ের জন্য সাহায্য করেছিলেন। যে কারণে পাইকর গ্রাম তাকে উপহার দিয়েছিলেন বিজয় সেন। যে কারণে মনে করা হয় পাইকর নামটি এসেছে পাহিদত্ত অথবা পাচিকুর থেকে। আবার এই এলাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক একটি সম্পর্ক রয়েছে উড়িষ্যার। যে কারণে এখানে কোন বসতিও ছিল এমনটাও আশা করা হচ্ছে। এই যে মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে তাকে বলা হয় ফানাম। ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে এই ধরনের মুদ্রার প্রচলন ছিল।