নিজস্ব প্রতিবেদন : সোনা ভারতীয়দের কাছে মঙ্গলের প্রতীক। বিয়ে থেকে প্রতিটি শুভ কাজে সোনার ব্যবহার হয়। কিন্তু সোনা কেনার সেই চাহিদা বিপুল পরিমাণে কমেছে করোনা পরিস্থিতিতে। তা সত্ত্বেও দেশজুড়ে সোনার দাম বাড়ছে ঝড়ের গতিতে। গত ৯ বছরে এই প্রথম প্রতি ১০ গ্ৰাম সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৫০,৭৫০ টাকা। এছাড়াও ২২ ক্যারাট সোনার গয়নার দাম জিএসটি সহ হয়েছে ৪৯,৫৯৪ টাকা।
লকডাউনের কারণে যখন সোনা কেনা বেচা একদম বন্ধ, তখন রকেটের গতীতে সোনার দাম বাড়ার এত কারণ কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার সঙ্গে চীন ও ইরানের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে বিশ্বজুড়ে লগ্নির বাজারে ধ্বস নেমেছে। যারা শেয়ার, উচ্চ মূল্যের বন্ড ফান্ডে ও বিদেশি মুদ্রার বাজারে লগ্নি করতেন তাঁরা নিরাপদ সোনার বাজারে লগ্নির পরিমাণ বাড়াতে শুরু করেছেন।
সোনায় টাকা বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কম তাছাড়া বিশ্ববাজারে সোনার দামের নিরিখে ভারতে সোনার দাম ঠিক হয়। লগ্নিতে গতি আনতে সুদ কমিয়েছে ভারত সহ বেশ কিছু দেশ। ইতিমধ্যেই সোনা কিনতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও শীর্ষ থাকা ব্যাঙ্কগুলি। ফলে সোনাতে টাকা বিনিয়োগ করলে রিটার্ন বা লাভ বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। তাই নিরাপদ সোনার বাজারে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সোনার দাম।
কোটাক সিকিউরিটির কমোডিটি রিসার্চের প্রধান রভিন্দ্র রাও জানিয়েছেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়ছে। তার প্রভাব ভারতের বাজারেও পড়তে শুরু করেছে। চীনের পর ভারতেই সবচেয়ে সোনা কেনা বেচা হয়। ডলারের দাম অনেকটা কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা সোনার বাজারে টাকা ঢালছেন। সেই কারণে সোনার দাম এতটা বেড়েছে।”
স্টক মার্কেট, রিয়েল এস্টেট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, বন্ডের বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বর্তমানে সেখানে সোনার মূল্যবৃদ্ধি আশা জাগাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। ১.৬ শতাংশ হারে সোনার দাম বেড়েছে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে। সোনায় নির্ভরযোগ্যতাই তার প্রমাণ।
আগামী দিনে ১০ গ্ৰাম সোনার দাম পৌঁছাতে পারে ৬৫ হাজারের কাছাকাছি। তথ্য বলছে ২৪ হাজার থেকে ২৫ হাজার টন সোনা রয়েছে সাধারণ পরিবারের কাছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন মন্দিরে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে আছে ৪০.৪৫ টন সোনা। এই তথ্য বিনিয়োগকারীদের নির্ভরতা দিচ্ছে। ফলে বাড়ছে দাম। এতে সোনায় সোহাগা বলেই মনে করছেন বিনিয়োগকারীর দল।