৪ মাস ধরে নিখোঁজ মেয়ে, বাড়ি ফেরালো গুগল

নিজস্ব প্রতিবেদন : ২১শে মার্চ যেদিন দোল উৎসবে মাতোয়ারা ছিল আমজনতা, সেদিন দিল্লির ব্যস্ত এলাকায় ১২ বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরী মেট্রো স্টেশন যাবে বলে দিল্লির কীর্তিনগর থেকে রিক্সা ধরে। কিন্তু তারপরেই ঘটে যায় অঘটন।

১২ বছর বয়সী ওই কিশোরী রিক্সায় উঠার পর ভুলে যায় সমস্ত কিছু। রিক্সাওয়ালা ওই কিশোরীর এমন পরিস্থিতি দেখে কিছু খুঁজে না পেয়ে অগত্যা পৌঁছে যান কীর্তিনগর পুলিশ স্টেশনে। আর তারপর থেকেই পুলিশ খোঁজ শুরু করে ওই কিশোরীর পরিবারের।

পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, ওই কিশোরী তার বাড়ির ঠিকানা ঠিকঠাক বলতে পারছিল না। শুধুমাত্র বলতে পারছিল বাবার নাম জিতেন আর বাড়ির ঠিকানা খুরজা (গ্রামের নাম)। কিন্তু ওর কথা মতো নির্দিষ্ট ওই গ্রামে পাঠালে খুঁজে পাওয়া যায়নি তার বাড়ি। এমনকি দিল্লির কোন থানায় নিখোঁজের কোনো ডাইরিও নেই। ফলে ওই কিশোরীকে বাড়ি ফেরানো নিয়ে বাড়তে থাকে জটিলতা। অবশেষে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে ওই কিশোরীকে তুলে দেয় পুলিশ। কিন্তু ওই বাড়ি কার বাড়ি খুঁজে পাওয়ার প্রয়াস ছেড়ে দেয় নি দিল্লি পুলিশ।

কিশোরীর কথা মত যে গ্রামের কথা বলা হয়েছিল সেই রকম কোন জায়গার নাম দিল্লির ওই এলাকায় পাওয়া যায়নি। তবে দিল্লিতে ‘খাজুরি খাস’ এবং ‘খুরেজি’ নামে দু’টি জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেই সকল জায়গায় ওই কিশোরীকে নিয়ে এলে চিনতে পারেনি জায়গাটি। তার পরিবারে আরও সন্দেহ। অবশেষে পুলিশ সাহায্য নেয় গুগল ম্যাপের। আর তাতেই সাফল্য।

গুগল ম্যাপের সাহায্যে নিয়ে পুলিশ উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থ নগর জেলায় ওই গ্রামের হদিস পায়। কিন্তু সেখানে গিয়েও প্রথম দফায় ধাক্কা খায় পুলিশ। কারণ সেখানেও খোঁজ মেলেনি ওর বাবার। তারপর পাশের গ্রামের নাম বলতে বলা হলে ওই বালিকা জানায় সোনবরসা, আর সেই গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকতেন ওই কিশোরীর মা। আর তারপরেই খোঁজ পাওয়া যায় জিতেনের।

মেয়েকে ফেরত পাওয়ার পর জিতেন জানায়, মেয়ের চিকিৎসা করাতে তিনি তার মেয়েকে দিল্লিতে এনেছিলেন এবং রেখেছিলেন নিজের বোনের বাড়িতে। পুলিশ জানায়, জিতেনের এক ছেলে এবং এক মেয়ে। তিনি দিল্লির একটি কারখানায় কাজ করেন। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই কিশোরীকে তার বাবা জিতেনই দিল্লি নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসা করানোর জন্য। তারপর দোলের দিন সে হারিয়ে যায়।